অথর্ববেদীয় মুণ্ডক শ্রুতির তৃতীয় মুণ্ডকের প্রথম খণ্ডে বর্ণিত আছে—
দ্বা
সুপর্ণা সযুজা সখায়া সমানং বৃক্ষং পরিষস্বজাতে ।
তয়োরন্যঃ পিপ্পলং
স্বাদ্বত্ত্যনশ্নন্নন্যো
অভিচাকশীতি ॥
-(মুণ্ডক উপনিষৎ
-৩.১.১)
ভগবৎপাদ্
শঙ্করাচার্য এই শ্রুতির ভাষ্যে
বলছেন— সর্বদা একসঙ্গে সম্মিলিত এবং সখা (সমভাবাপন্ন) দুইটি পক্ষী একই দেহবৃক্ষকে অবলম্বন করে আছে। এই দেহবৃক্ষটি ঊর্ধ্বমূল
অর্থাৎ প্রত্যক্ চৈতন্যমূলক ও অধোদিকে বিস্তৃত
বুদ্ধীন্দ্রিয়াদি শাখাবিশিষ্ট। অব্যক্তরূপ কারণ হতে উৎপন্ন অশ্বত্থ এই ক্ষেত্রসংজ্ঞক দেহ
প্রাণিগণের কর্মফলের আশ্রয়স্বরূপ। এই দেহবৃক্ষকে অবিদ্যাকামকর্ম
ও বাসনার আশ্রয়স্বরূপ লিঙ্গদেহোপহিত জীব ও ঈশ্বর পক্ষিযুগলের
মতো অবলম্বন করে আছেন। আলিঙ্গিত তদুভয়ের মধ্যে একজন— লিঙ্গদেহরূপ উপাধিবৃক্ষাশ্রিত ক্ষেত্রজ্ঞ জীব বিচিত্র স্বাদবিশিষ্ট সুখদুঃখাত্মক কর্মফল ভোগ করে। আর অন্যজন—নিত্য,
শুদ্ধ, বুদ্ধ ও মুক্তস্বভাববিশিষ্ট সর্বজ্ঞ ও
মায়া উপাধিবিশিষ্ট ঈশ্বর ভোগ না করে কেবল
দর্শন করেন। কারণ ভোজ্য (কর্মফল) ও ভোক্তা (জীব),
উভয়ের তিনি নিত্যপ্রকাশত্বরূপ সত্তামাত্রের দ্বারা অর্থাৎ সন্নিধিমাত্রের দ্বারাই প্রেরক। ফলে অকর্তা তিনি কোন ফলভোগ না করে কেবল
দর্শনমাত্রই করেন। রাজার সন্নিধিমাত্রেই ভৃত্যাদির কার্যে যোগ দেওয়ার ন্যায় দর্শনমাত্রেই অর্থাৎ সন্নিধিবশতঃ চেতনাসম্পাদনই তাঁর প্রেরণকার্য তদ্ভিন্ন অন্য কিছু নয়।......
শ্রীশুভ
চৌধুরী
আগস্ট
৪, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।