ধৃতরাষ্ট্রের মৌনবিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে ভগবান শ্রীসনৎ সুজাত বলিতেছেন-
'যতো ন বেদা মনসা সহৈন-মনুপ্রবিশন্তি ততঃ স মৌনম্।
যত্রোথ্থিতো বেদশব্দ স্তথায়ং স তন্ময়ত্বেন বিভাতি রাজন্।।'
(শ্রীমহাভারত, উদ্যোগপর্ব, ৪৩তম অধ্যায়, সনৎ-সুজাতীয় সম্বাদ-২)
ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য্যের শাঙ্করভাষ্য অনুসারে ভাবার্থঃ- সেই পরমাত্মাই যথার্থ মৌন, কারণ মন সহ সর্ববেদও তাঁহাকে প্রকাশ করিতে পারে না। কারণ শ্রুতি বলিতেছে- 'শব্দের অগম্য, তাই তিনি মৌন।'-(তৈত্তিরীয় উপনিষৎ ২।৪)
'বিদজ্ঞানে' জ্ঞানার্থক বেদশব্দ কেবল বাচকরূপেই তাঁহাতে প্রযুক্ত হয় মাত্র। কারণ বেদরাশিও সেই পরমাত্মা হইতেই উদ্ভূত, তাই তিনি বেদশাস্ত্রেরও যোনি বা কারণ। পুরুষ নিঃশাসবৎ (বৃহদারণ্যক উপনিষৎ- ২।৪।১০) অপ্রযত্নে পরমাত্মা হইতে বেদাদি শাস্ত্র নির্গত হইয়াছে।
বস্তুতঃ জ্ঞানস্বরূপ পরমাত্মা বাক্য ও মনের অগোচর। সেই বেদশব্দ প্রতিপাদ্য সংবিদ্ই পরমাত্মা। তিনি জ্যোতির্ময়-রূপেই আমাদের অনুভবগম্য। কারণ শ্রুতি স্মৃতি ইতিহাস পুরাণাদিতে তিনি জ্যোতির্ময় রূপে কীর্তিত। যথা-'ব্রহ্ম আদিত্যাদি জ্যোতিসমূহেরও জ্যোতিঃ এবং অজ্ঞানরূপ অন্ধকারের দ্বারা অসংস্পৃষ্ট।'-(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা- ১৩।১৮)
No comments:
Post a Comment