জ্ঞানের পাপবীজনাশত্ব বিষয়ে ব্রহ্মসূত্রে সূত্রকার মহর্ষি বাদরায়ণ ভগবৎ দ্বারা বিচারিত হইয়াছে-
'তদধিগম্ উত্তরপূর্বাঘযোরশ্লেষবিনাশৌ তদ্ব্যপদেশাৎ ৷৷'-ব্রহ্মসূত্র ৪.১.১৩৷৷
সূত্রের ভাষ্যে আচার্য্য শঙ্কর ভগবৎপাদ্ বলিতেছেন- ব্রহ্মবিদ্যা পাপনাশক নহে এইরূপ বিরুদ্ধমত প্রাপ্ত হইলে বলিতেছি-'তদধিগমে' অর্থাৎ ব্রহ্ম বিজ্ঞাত হইলে পরবর্ত্তী ও পূর্ববর্ত্তী অর্থাৎ ক্রিয়মান্ ও সঞ্চিত পাপের অসংস্পর্শ ও বিনাশ হয়। কোন হেতুবলে তাহা বলা যায়? উত্তর যেহেতু শাস্ত্রে তাহাদের কথন আছে। যেমন দেখ, ব্রহ্মবিদ্যার প্রক্রিয়াতে যাহার সহিত সম্বন্ধ সম্ভব, সেই আগামী পাপের সহিত ব্রহ্মবিদের সম্বন্ধহীনতা শ্রুতি উপদেশ করিতেছেন, যথা-
'যথা পুষ্করপলাশ আপো ন শ্লিষ্যন্ত এবমেবংবিদি পাপং কর্ম ন শ্লিষ্যতে'-(ছান্দোগ্য উপনিষৎ-৪।১৪।৩)
অর্থাৎ পদ্মপত্রে জল যেমন সংশ্লিষ্ট হয় না, এইরূপ ব্রহ্মকে যিনি এই প্রকারে জানেন, তাঁহাতে পাপকর্ম্ম সংশ্লিষ্ট হয় না। ইত্যাদি শ্রুতি।
এইপ্রকারে শ্রুতি পূর্ব্বসঞ্চিত পাপের বিনাশও উপদেশ করিতেছেন,যথা-
'তদ্যথেষীকাতূলমগ্নৌ প্রোতং প্রদূযেতৈবং হাস্য সর্বে পাপ্মানঃ প্রদূযন্তে' (ছান্দোগ্য উপনিষৎ-৫।২৪।৩)
অর্থাৎ মুঞ্জাঘাষের তুলা অগ্নিতে প্রক্ষিপ্ত হইলে যমন নিঃশেষে ভষ্মীভূত হইয়া যায়. এইপ্রকারেই ইঁহার সকল পাপ নিঃশেষে দগ্ধ হইয়া যায়। ইত্যাদি শ্রুতি।
কর্ম্মক্ষয়বিষয়ক এই অপর উপদেশ আছে, যথা-
ভিদ্যতে হৃদযগ্রন্ধিশ্ছিদ্যন্তে সর্বসংশযাঃ৷ ক্ষীযন্তে চাস্য কর্মাণি তস্মিন্দৃষ্টে পরাবরে'-(মুণ্ডক উপনিষৎ-২।২।৮)
অর্থাৎ পরাবর অর্থাৎ কারণ ও কার্য্যাত্মক সেই পরমাত্মা দৃষ্ট হইলে জ্ঞানীর অবিদ্যাবাসনারূপ হৃদয়গ্রন্থি বিনষ্ট হইয়া যায় এবং কর্ম্মসকল ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ইত্যাদি শ্রুতি।
No comments:
Post a Comment