।।।।।।প্রৌঢ়ানুভূতি।।।।।।
প্রৌঢপ্রৌঢনিজানুভূতিগলিতদ্বৈতেন্দ্রজালো
গুরু-
র্গূঢং গূঢমঘৌঘদুষ্টকুধিয়াং
স্পষ্টং সুধীশালিনাম্ ।
স্বান্তে সম্যগিহানুভূতমপি
সচ্ছিশিষ্যাববোধায় ত-
ৎসত্যং সংস্মৃতবান্সমস্তজগতাং
নৈজং নিজালোকনাৎ ॥ ১॥
যে সত্য আত্মস্বরূপ পাপরাশির দ্বারা কলুষিতবুদ্ধি
ব্যক্তিগণের নিকট অত্যন্ত আবৃত, সুধীব্যক্তিদিগের স্পষ্ট প্রতিভাত অতি সুদৃঢ়ভাবে নিজস্বরূপের
অনুভবের দ্বারা যাঁহার দ্বৈতরূপ ইন্দ্রজাল বিগলিত হইয়াছে এবংবিধ গুরু, আত্মসাক্ষাৎকার
প্রভাবে সমস্ত জগতের নিজ পারমার্থিক স্বরূপ সেই সত্য অন্তঃকরণে সম্যক অনুভব করিলেও
সৎ শিষ্যগণের অববোধের নিমিত্ত স্মরণ করিয়াছিলেন।।১।।
দ্বৈতং ময়্যখিলং সমুত্থিতমিদং মিথ্যা মনঃকল্পিতং
তোয়ং তোয়বিবর্জিতে মরুতলে ভ্রান্ত্যৈব সিদ্ধং ন
হি ।
যদ্যেবং খলু দৃশ্যমেতদখিলং নাহং ন বা তন্মম
প্রৌঢানন্দচিদেকসন্ময়বপুঃ শুদ্ধোঽস্ম্যখণ্ডোঽস্ম্যহম্
॥ ২॥
মনের দ্বারা কল্পিত এই মিথ্যা সমস্ত দ্বৈত, আমাতে
আবির্ভূত হইয়াছে জলবিহীন মরুভূমিতে ভ্রমবশতঃ কখন জল নিষ্পন্ন হয় না। যদি এইসমস্ত দৃশ্য
বস্তু আমি নহি অথবা সেই সকল দৃশ্য আমার নহে, তথাপি আমি একমাত্র সৎ-চিৎ-আনন্দ অখণ্ড
ব্রহ্মস্বরূপ।।২।।
দেহো নাহমচেতনোঽয়মনিশং কুড্যাদিবন্নিশ্চিতো
নাহং প্রাণময়োঽপি বা দৃতিধৃতো বায়ুর্যথা নিশ্চিতঃ
।
সোঽহং নাপি মনোময়ঃ কপিচলঃ কার্পণ্যদুষ্টো ন বা
বুদ্ধির্বুদ্ধকুবৃত্তিকেব কুহনা নাজ্ঞানমন্ধংতমঃ
॥ ৩॥
আমি কুড্য (স্তম্ভ) প্রভৃতির ন্যায় সর্ব্বদা অচেতন
দেহ নহি, ইহা নিশ্চিত, আমি কর্ম্মকারের ভস্ত্রার (হাপরের) দ্বারা ধৃত (বদ্ধ) বায়ুর
ন্যায় প্রাণময় নহি ইহাও নিশ্চিত। আমি বানরের ন্যায় চঞ্চল কাপর্ণ্যদুষ্ট মনোময় নহি,
কিংবা বুদ্ধের কুৎসিতবৃত্তির ন্যায় কুহকময়ী বুদ্ধি (বিজ্ঞানময় কোষ) নহি, এবং আমি অন্ধকার-সদৃশ
অজ্ঞানও (আনন্দময়কোষও) নহি।।৩।।
নাহং খাদিরপি স্ফুটং মরুতলভ্রাজৎপয়ঃসাম্যত-
স্তেভ্যো নিত্যবিলক্ষণোঽখিলদৃশিঃ সৌরপ্রকাশো যথা
।
দৃশ্যৈঃ সঙ্গবিবর্জিতো গগনবৎসম্পূর্ণরূপোঽস্ম্যহং
বস্তুস্থিত্যনুরোধতস্ত্বহমিদং বীচ্যাদি সিন্ধুর্যথা
॥ ৪॥
স্ফুটরূপে মরুভূমিতে প্রকাশমান, জলের তুল্য আকাশাদি
আমি নহি, অর্থাৎ যেমন মরুভূমিতে জল বলিয়া যাহা লোকের ধারণা হয়, বাস্তবিক তাহা জল নহে,
কিন্তু মিথ্যা, সেইরূপ আকাশাদিও মিথ্যা, আমি সেই আকাশাদি রূপ নহি; কারণ, আমি সৎস্বরূপ
ব্রহ্ম। কিন্তু আমি আকাশাদি হইতে সতত বিলক্ষণস্বভাব সমস্ত বস্তুর দর্শনস্বরূপ; যেমন
সূর্যের প্রকাশ, প্রকাশ্য ঘটাটি হইতে বিলক্ষণ। আমি আকাশের ন্যায় সঙ্গবিহীন ও সম্পূর্ণ-স্বরূপ,
বাস্তবিকপক্ষে এই সমস্ত বস্তু আমি অর্থাৎ আমাতে আরোপিত; যেমন সমুদ্রে তরঙ্গ, ফেন, বুদ্বুদপ্রভৃতি
আরোপিত।।৪।।
নির্দ্বৈতোঽস্ম্যহমস্মি নির্মলচিদাকাশোঽস্মি পূর্ণোঽস্ম্যহং
নির্দেহোঽস্মি নিরিন্দ্রিয়োঽস্মি নিতরাং নিষ্প্রাণবর্গোঽস্ম্যহম্
।
নির্মুক্তাশুভমানসোঽস্মি বিগলদ্বিজ্ঞানকোশোঽস্ম্যহং
নির্মায়োঽস্মি নিরন্তরোঽস্মি বিপুলপ্রৌঢপ্রকাশোঽস্ম্যহম্
॥ ৫॥
আমি অদ্বৈতস্বরূপ, আমি নির্মলচিদাকাশ, আমি পরিপূর্ণস্বভাব,
আমি দেহ, ইন্দ্রিয় ও প্রাণপঞ্চক হইতে অত্যন্ত ভিন্ন, আমি অশুভমনোবিহীন, বিজ্ঞানময়কোশশূন্য,
মায়াবিরহিত, আমার কোন অন্তর নাই, আমি বিশালগাঢ়প্রকাশস্বরূপ।। ৫।।
মত্তোঽন্যন্ন হি কিংচিদস্তি যদি চিদ্ভাস্যং ততস্তন্মৃষা
গুঞ্জাবহ্নিবদেব সর্বকলনাধিষ্ঠানভূতোঽস্ম্যহম্
।
সর্বস্যাপি দৃগস্ম্যহং সমরসঃ শান্তোঽস্ম্যপাপোঽস্ম্যহং
পূর্ণোঽস্মি দ্বয়বর্জিতোঽস্মি বিপুলাকাশোঽস্মি
নিত্যোঽস্ম্যহম্ ॥ ৬॥
আমি ভিন্ন অপর কোন বস্তু নাই, যদি থাকে তবে তাহা
চৈতন্যপ্রকাশ্য, অতএব তাহা গুঞ্জাতে (কূঁচ) আরোপিত অগ্নির ন্যায় মিথ্যা, আমি সমস্ত
বস্তুর কল্পনার অধিষ্ঠানরূপ। আমি সমস্ত বস্তুর দ্রষ্টা, সমরস (একরূপসার) ও শান্ত, আমার
কোন পাপ নাই, আমি পূর্ণ, দ্বৈতরহিত, বিশাল আকাশস্বরূপ ও নিত্য।।৬।।
ময়্যস্মিন্পরমার্থকে শ্রুতিশিরোবেদ্যে স্বতো ভাসনে
কা বা বিপ্রতিপত্তিরেতদখিলং ভাত্যেব যৎসংনিধেঃ
।
সৌরালোকবশাৎপ্রতীতমখিলং পশ্যন্ন তস্মিঞ্জনঃ
সংদিগ্ধোঽস্ত্যত এব কেবলশিবঃ কোঽপি প্রকাশোঽস্ম্যহম্
॥ ৭॥
যাঁহার সন্নিধানবশতঃ এই সমুদায় বস্তু প্রকাশ থাকে।
সেই পরমার্থভূত, বেদান্তবেদ্য, স্বতঃপ্রকাশ আমাতে বিপ্রতিপত্তি (বিরুদ্ধজ্ঞান) কিরূপ
থাকিবে? লোক সূর্য্যালোকে দীপ্ত সমস্ত বস্তু দেখিয়া সেই সূর্যালোকে সন্ধিগ্ধ হয় না।
অতএব আমি কেবল শিব, কোন এক প্রকাশস্বরূপ।।৭।।
নিত্যস্ফূর্তিময়োঽস্মি নির্মলসদাকাশোঽস্মি শান্তোঽস্ম্যহং
নিত্যানন্দময়োঽস্মি নির্গতমহামোহান্ধকারোঽস্ম্যহম্
।
বিজ্ঞাতং পরমার্থতত্ত্বমখিলং নৈজং নিরস্তাশুভং
মুক্তপ্রাপ্যমপাস্তভেদকলনাকৈবল্যসংজ্ঞোঽস্ম্যহম্
॥ ৮॥
আমি সততপ্রকাশস্বরূপ, নির্মলসদাকাশরূপ, শান্ত ও
নিত্য আনন্দস্বরূপ, আমা হইতে মহামোহরূপ, অন্ধকার দূরীভূত হইয়াছে; যেখানে সমস্ত অমঙ্গল
অপসৃত, যাহা মুক্তগণের প্রাপ্ত ঈদৃশ নিজের সম্পূর্ণ পরমার্থস্বরূপ অবগত হইয়াছি। অতএব
আমি অভেদজ্ঞান লাভ করায় কেবলস্বরূপ।।৮।।
স্বাপ্নদ্বৈতবদেব জাগ্রতমপি দ্বৈতং মনোমাত্রকং
মিথ্যেত্যেব বিহায় সচ্চিদমলস্বান্তৈকরূপোঽস্ম্যহম্
।
যদ্বা বেদ্যমশেষমেতদনিশং মদ্রূপমেবেত্যপি
জ্ঞাত্বা ত্যক্তমরুন্মহোদধিরিব প্রৌঢো গভীরোঽস্ম্যহম্
॥ ৯॥
আমি স্বপ্নাবস্থায় অনুভূত দ্বৈতের নয় জাগ্রদবস্থায়
দ্বৈত মনঃকল্পিত অতএব মিথ্যা জানিয়া সচ্চিদানন্দস্বরূপে অবস্থান করি। এই সমুদায় জ্ঞেয়
বস্তু সর্ব্বদা মৎস্বরূপ—ইহা জানিয়া আমি বায়ুবিহীন মহাসমুদ্রের ন্যায় অচল ও গম্ভীর
আছি ।।৯।।
গন্তব্যং কিমিহাস্তি সর্বপরিপূর্ণস্যাপ্যখণ্ডাকৃতেঃ
কর্তব্যং কিমিহাস্তি নিষ্ক্রিয়তনোর্মোক্ষৈকরূপস্য
মে ।
নির্দ্বৈতস্য ন হেয়মন্যদপি বা নো বাপ্যুপেয়ান্তরং
শান্তোঽদ্যাস্মি বিমুক্ততোয়বিমলো মেঘো যথা নির্মলঃ
॥ ১০॥
আমি সকল বস্তুতে পরিপূর্ণভাবে বিরাজমান আছি ও অখন্ডস্বরূপ,
আমার এই সংসারে গন্তব্য কি কিছু আছে ? আমি নিষ্ক্রিয়মূর্ত্তি ও একমাত্র মোক্ষস্বরূপ,
আমার এখানে কি কোনরূপ কর্ত্তব্য আছে ? আমার ত্যাজ্য বা গ্রাহ্য কোন বস্তু নাই? আমি
এখন জলনির্ম্মুক্ত নির্ম্মল মেঘের ন্যায় শান্তস্বভাব ।।১০।।
কিং ন প্রাপ্তমিতঃ পুরা কিমধুনা লব্ধং বিচারাদিনা
যস্মাত্তৎসুখরূপমেব সতত্তং জাজ্বল্যমানোঽস্ম্যহম্
।
কিং বাপেক্ষ্যমিহাপি ময়্যতিতরাং মিথ্যাবিচারাদিকং
দ্বৈতাদ্বৈতবিবর্জিতে সমরসে
মৌনং পরং সম্মতম্ ॥ ১১॥
ইতঃ পূর্ব্বে আমি বিচারাদির দ্বারা কোন্ বস্তু
প্রাপ্ত হইয়াছি ? আর অধুনাই বা কি প্রাপ্ত হইতেছি ? যেহেতু আমি সুখস্বরূপ এবং সর্ব্বদা
প্রকাশস্বরূপ দ্বৈত ও অদ্বৈতবিহীন সমরস (তুল্যরূপ) আমাতে অতিশয় অপেক্ষিত মিথ্যা বিচারাদিই
বা কি হইবে ? সুতরাং মৌনই একমাত্র সম্মত ।।১১।।
শ্রোতব্যং চ কিমস্তি পূর্ণসুদৃশো মিথ্যাপরোক্ষস্য
মে
মন্তব্যং চ ন মেঽস্তি কিংচিদপি বা নিঃসংশয়জ্যোতিষঃ
।
ধ্যাতৃধ্যেয়বিভেদহানিবপুষো ন ধ্যেয়মস্ত্যেব মে
সর্বাত্মৈকমহারসস্য সততং নো বা সমাধির্মম ॥ ১২॥
পরিপূর্ণ দ্রষ্টৃ স্বরূপ ব্রহ্ম ভিন্ন বস্তুর মিথ্যাত্বদ্রষ্টা
আমার কি শ্রোতব্য আছে ? নিঃসন্দিগ্ধপ্রকাশস্বরূপ আমার কিছু মননের নাই। আমি ধ্যাতৃ,
ধ্যেয়প্রভৃতিবিহীন, আমার কোন ধ্যানের বস্তু নাই। সর্ব্বদা সমস্ত বস্তুই আত্মার স্বরূপ
ইহা যিনি সার ভাবিয়াছেন, এবংবিধ আমার কোন সমাধি নাই ।।১২।।
আত্মানাত্মবিবেচনাপি মম নো বিদ্বৎকৃতা রোচতে-
ঽনাত্মা নাস্তি যদস্তি গোচরবপুঃ কো বা বিবেক্তুং
ক্ষমী ।
মিথ্যাবাদবিচারচিন্তনমহো কুর্বন্ত্যদৃষ্টাত্মকা
ভ্রান্তা এব ন পারগা দৃঢধিয়স্তূষ্ণীং শিলাবৎস্থিতঃ
॥ ১৩॥
বিদ্বদগণ যে আত্মা ও অনাত্মার বিবেক করিয়াছেন,
তাহাতে আমার কোন রুচি নাই, অনাত্মা বলিয়া কোন বস্তু নাই, যা আছে তাহা প্রত্যক্ষশরীর
আত্মাই। সুতরাং আত্মা ও অনাত্মার বিবেক করিতে কে সমর্থ ? যাহারা আত্মদর্শন করে নাই,
হায় ! তাহারা মিথ্যা বাদবিচার চিন্তা করিয়া থাকে। তাহারা ভ্রান্তই, সংসারপরগামী নহে,
এ জন্য দৃঢ়চিত্ত ব্যক্তিগণ প্রস্তরের ন্যায় নীরবে অবস্থান করিয়া থাকেন ।।১৩।।
বস্তুস্থিত্যনুরোধতস্ত্বহমহো কশ্চিৎপদার্থো ন চা-
প্যেবং কোঽপি বিভামি সংততদৃশী বাঙ্মানসাগোচরঃ ।
নিষ্পাপোঽস্ম্যভয়োঽস্ম্যহং বিগতদুঃশঙ্কাকলঙ্কোঽস্ম্যহং
সংশান্তানুপমানশীতলমহঃপ্রৌঢপ্রকাশোঽস্ম্যহম্ ॥
১৪॥
বাস্তবিকপক্ষে ‘আমি’ এইরূপ কোন পদার্থ নাই, কিন্তু
আমি সর্ব্বদা দৃক্-স্বরূপ, বাক ও মনের অবিষয় হইয়া প্রকাশ পাইতেছি। আমি পাপরহিত, অভয়,
আমাতে দুঃখশঙ্কারূপ কলঙ্ক দূরীভূত হইয়াছে। আমি সম্যকশান্তস্বরূপ উপমারহিত শীতলতেজের
(চন্দ্রের) ন্যায় প্রবৃদ্ধ-প্রকাশস্বরূপ ।।১৪।।
যোঽহং পূর্বমিতঃ প্রশান্তকলনাশুদ্ধোঽস্মি বুদ্ধোঽস্ম্যহং
যস্মান্মত্ত ইদং সমুত্থিতমভূদেতন্ময়া ধার্যতে ।
ময়্যেব প্রলয়ং প্রয়াতি নিরধিষ্ঠানায় তস্মৈ সদা
সত্যানন্দচিদাত্মকায় বিপুলপ্রজ্ঞায় মহ্যং নমঃ ॥
১৫॥
যে আমি ইহার পূর্ব্বে ভেদজ্ঞান দূর হওয়ায় শুদ্ধ,
বুদ্ধস্বরূপ হইয়াছি, যেহেতু এই সমস্ত জগৎ আমা হইতে উত্থিত হইয়াছে। এই জগৎ আমা-কর্ত্তৃক
ধৃত হইতেছে, আমাতে লয় প্রাপ্ত হয়। সেই অধিষ্ঠানশূন্য বিপুল জ্ঞানরূপ সচ্চিদানন্দস্বরূপ
আমার (আত্মার) উদ্দেশ্যে সর্ব্বদা নমস্কার ।।১৫।।
সত্তাচিৎসুখরূপমস্তি সততং নাহং চ ন ত্বং মৃষা
নেদং বাপি জগৎপ্রদৃষ্টমখিলং নাস্তীতি জানীহি ভো
।
যৎপ্রোক্তং করুণাবশাত্ত্বয়ি ময়া তৎসত্যমেতৎস্ফুটং
শ্রদ্ধৎস্বানঘ শুদ্ধবুদ্ধিরসি চেন্মাত্রাস্তু তে
সংশয়ঃ ॥ ১৬॥
আমি সতত সচ্চিদানন্দস্বরূপ, আমি, তুমি, এইরূপ ভেদ
নাই, কারণ— ইহা মিথ্যা। প্রত্যক্ষদৃষ্ট এই সমস্ত জগৎ মিথ্যা, হে বৎস ! এই জগৎ স্বরূপতঃ
নেই বলিয়া জানিও। হে নিষ্পাপ ! আমার উপদেশে শ্রদ্ধাবান হও, যদি তোমার বুদ্ধি নির্ম্মল
হইয়া থাকে, তাহা হইলে এ বিষয়ে তোমার সন্দেহ হইবে না ।।১৬।।
স্বারস্যৈকসুবোধচারুমনসে প্রৌঢানুভূতিস্ত্বিয়ং
দাতব্যা ন তু মোহদুগ্ধকুধিয়ে দুষ্টান্তরঙ্গায় চ
।
যেয়ং রম্যবিদর্পিতোত্তমশিরঃ প্রাপ্তা চকাস্তি স্বয়ং
সা চেন্মর্কটহস্তদেশপতিতা কিং রাজতে কেতকী ॥ ১৭॥
এই প্রৌঢ় অনুভূতি (পরাকাষ্ঠাপ্রাপ্ত আত্মজ্ঞান)
স্বভাবতঃ তত্ত্বজ্ঞানের দ্বারা শুদ্ধচিত্ত ব্যক্তিকে প্রদান করিবে, মোহকলুষিতচিত্ত,
দুষ্টসঙ্গ ব্যক্তিকে দিবে না। কেতকীপুষ্প, রমণীয়তাজ্ঞ ব্যক্তি মস্তকে ধারণ করিলে যেরূপ
শোভা পায়, তাহা যদি বানরের হস্তে পতিত হয়, তাহা হইলে কি সেইরূপ শোভা পায় ।।১৭।।
ইতি শ্রীমৎপরমহংসপরিব্রাজকাচার্যস্য শ্রীগোবিন্দভগবৎপূজ্যপাদশিষ্যস্য
শ্রীমচ্ছঙ্করভগবতঃ কৃতৌ প্রৌঢানুভূতিঃ সম্পূর্ণা ॥
ইতি শঙ্করাচার্য বিরচিত প্রৌঢ়ানুভূতিঃ সমাপ্ত।