পূর্বপক্ষঃ- তুরীয়ে যদি কোনরূপই বিশেষ ভাব না থাকে, তাহা হইলে তাহা ত শূন্য হইয়া পড়ে?
উত্তরপক্ষঃ-
না—তাহা শূন্য নহে;
কারণ, বিনা কারণে কখনই
মিথ্যাময় কল্পনা হইতে পারে না;
কেননা, শুক্তি, রজ্জু, স্থাণু (কাণ্ডশাখাদিবিহীন বৃক্ষাংশ) ও মরুভূমি প্রভৃতি
আশ্রয় ব্যতিরেকে নিরাশ্রয়ভাবে কখনই (যথাক্রমে) রজত, সর্প, মনুষ্য,
মৃগতৃষ্ণাদি ভ্রমপ্রতীতি কল্পনা করিতে পারা যায় না।
আপত্তিঃ-
তিনি যদি সর্ব্বকল্পনার আশ্রয়স্থান
হন, তাহা হইলে ঘটাদি
পদার্থ যেরূপ জলাধারাদিরূপে শব্দ-বাচ্য হয়,
সেইরূপ তুরীয়ও (ভ্রমাধিষ্ঠানরূপে) শব্দবাচ্য হইতে পারেন; সুতরাং
নিষেধ দ্বারা তাঁহার প্রতীতি সম্পাদনের আবশ্যক হয় না।
উত্তরঃ-
না—এ আপত্তি হইতে
পারে না ; কারণ, শুক্তিকা
প্রভৃতিতে কল্পিত রজতাদির ন্যায় প্রাণাদির কল্পনাও অসৎ—অবস্তু; সৎ
ও অসতের সম্বন্ধ কখনই শব্দজনিত বোধের
বিষয় হইতে পারে না
; কারণ, উহা অবস্তু—মিথ্যা।
আর গবাদি সত্য পদার্থ যেরূপ
স্বরূপতই প্রত্যক্ষাদি প্রমাণান্তরের বিষয় হয়, সেরূপও
হইতে পারে না; কারণ,
আত্মা বস্তুটি নিরুপাধিক। গবাদির ন্যায় জাতিবিশিষ্টও নহে, কারণ, অদ্বিতীয়
পদার্থের সামান্য বিশেষভাব নাই; আর পাচকাদির
ন্যায় ক্রিয়াবত্ত্বও নাই, কারণ, অবিক্রিয়;
নীলাদি দ্রব্যের ন্যায় গুণবত্তাও নাই, কারণ, তিনি
নির্গুণ; কাজেই তিনি শব্দ দ্বারা
নির্দ্দেশযোগ্য হন না।.......
ঋণঃ-
ভগবান্ শঙ্করাচার্য্যের মাণ্ডুক্য উপনিষৎ ভাষ্য।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
মার্চ
২৬, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।