ব্রহ্ম বেদৈকবেদ্য। একমাত্র বেদরূপ প্রমাণের দ্বারাই জগতের কারণাদিরূপে ব্রহ্মকে জানা যায় বলিয়া, ব্রহ্ম বেদমাত্রগম্য। ভগবান্ বাদরায়ণ বলিতেছেন—শাস্ত্রযোনিত্বাৎ৷৷- (ব্রহ্মসূত্র- ১।১।৩)
ভগবৎপাদ্
শঙ্করাচার্য শারীরক-মীমাংসা ভাষ্যে বলিতেছেন—
প্রদীপের
ন্যায় সর্বার্থপ্রকাশক মহৎ যে ঋগ্বেদাদি
শাস্ত্র, যাহা বেদাঙ্গ, পুরাণ,
ন্যায়, মীমাংসা, স্মৃতি ধর্ম্মশাস্ত্র প্রভৃতি অনেক বিদ্যাস্থান দ্বারা
পুষ্ট এবং যাহা সর্বজ্ঞকল্প
অর্থাৎ সর্ব্বপ্রকার জ্ঞানের আকর হইলেও অচেতন
হওয়াই যাহাকে প্রায় সর্বজ্ঞ বলা যায়, তাহার
যোনি অর্থাৎ উপাদান এবং নিমিত্ত কারণ
ব্রহ্ম।
'অস্য মহতো
ভূতস্য নিঃশ্বসিতং যদেতদৃগ্বেদো যজুর্বেদঃ সামবেদঃ অর্থবাঙ্গিরসঃ।'-(বৃহদারণ্যক উপনিষদ ২.৪.১০)
অর্থাৎ
এই যে ঋগ্বেদাদি চতুর্বেদ
ইহারা এই মহৎভূতের নিঃশ্বসিত
তথা নিঃশ্বাসের ন্যায় ব্রহ্মের বিনাপ্রযত্নে অভিব্যক্ত।
এই
প্রকার শ্রুতি আছে বলিয়া ঋগ্বেদাদি
শাস্ত্র সর্ব্ববিধ জ্ঞানের আকর স্বরূপ, তাহা
বিনাপ্রযত্নে লীলান্যায়ে পুরুষের নিঃশ্বাসের ন্যায় মহৎ ভূত ব্রহ্মরূপ
যোনি কারণ হইতে উৎপন্ন।
এই ব্রহ্মের যথার্থ স্বরূপ অবগতির প্রতি পূর্ব্ব কথিত ঋগ্বেদাদি শাস্ত্র
হয় যোনি, অর্থাৎ কারণ অর্থাৎ প্রমাণ।
শাস্ত্ররূপ প্রমাণ হইতেই জগতের জন্মাদির কারণরূপে ব্রহ্ম অধিগত হন, ইহাই অভিপ্রায়।
শ্রীভারতী
তীর্থ বৈয়াসিক ন্যায়মালাতে বলিতেছেন—
রূপ
এবং লিঙ্গরহিত হওয়ায় ইঁহার অন্য প্রমাণযোগ্যতা নাই।
কোনপ্রকার রূপ-রসাদি না
থাকায় ব্রহ্ম ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নহেন এবং লিঙ্গ
(—জ্ঞাপক চিহ্ন) ও সাদৃশ্যাদি রহিত
হওয়ায় তিনি অনুমান ও
উপমানাদি প্রমাণেরও বিষয় নহেন। "তং তু ঔপনিষদং
পুরুষং পৃচ্ছামি"-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৩.৯.২৬)
অর্থাৎ সেই উপনিষৎপ্রতিপাদ্য পুরুষের
বিষয় জিজ্ঞাসা করিতেছি", ইত্যাদি শ্রুতিতে পরব্রহ্মরূপ পুরুষ উপনিষদ্গম্য, ইহা প্রতীত হইতেছে।.....
মার্চ
৮, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment