আচার্য গৌড়পাদ্ মাণ্ডুক্য কারিকার বৈতথ্য প্রকরণে বলেছেন—"ন নিরোধো ন চোৎপত্তির্ন বদ্ধো ন চ সাধকঃ। ন মুমুক্ষুর্ন বৈ মুক্ত ইত্যেষা পরমার্থতা॥" এই কারিকাটি স্বয়ংই একটি শ্রুতি। কৃষ্ণযজুর্বেদীয় ব্রহ্মবিন্দূ উপনিষদে এটির হুবুহু উদ্ধৃতি পাওয়া যায়।
ভগবৎপাদ্
শঙ্করাচার্য এই কারিকার ভাষ্যে
বলেছেন—যখন দ্বৈত মিথ্যা এবং আত্মাই একমাত্র সত্যবস্তু বলে সাক্ষাৎ উপলব্ধি হয় তখন এইরূপ হয়ে থাকে সমস্ত লৌকিক এবং বৈদিক ব্যবহার অবিদ্যার বিষয়ীভূত অর্থাৎ অজ্ঞান কল্পিত বলে অনুভূত হয়, তখন নিরোধ থাকে না। 'নিরোধ' অর্থ নিরোধন অর্থাৎ প্রলয়, 'উৎপত্তি' অর্থ সৃষ্টি বা জন্ম, 'বদ্ধ'
অর্থাৎ সংসারী জীব, 'সাধক' অর্থ মোক্ষপোযোগী সাধন সম্পন্ন ব্যক্তি, 'মুমুক্ষু' অর্থাৎ মোক্ষার্থী মুক্ত অর্থ বন্ধন বিমুক্ত। উৎপত্তি ও প্রলয়ের অভাবহেতু
বদ্ধ, মুক্ত, সাধক, মুমুক্ষু কেউই থাকে না। এটাই পরমার্থতা।
উৎপত্তি
প্রলয়ের অভাব কেন হয়? তদুত্তরে বলা হচ্ছে— দ্বৈতের অসত্তাহেতু দ্বৈতের বাস্তব সত্তা নেই বলে উৎপত্তি প্রলয়ের অভাব হয়ে থাকে। "যত্র হি দ্বৈতমিব ভবতি",
অর্থাৎ যে অবস্থায় দ্বৈতের
ন্যায় হয়; "য ইহ নানেব
পশ্যতি", অর্থাৎ যিনি এই ব্রহ্মে নানার
ন্যায় দর্শন করেন; "আত্মৈবেদং সর্বম্", অর্থাৎ এই সমস্তই আত্মা;
"ব্রহ্মৈবেদং সর্বম্", অর্থাৎ এই সমস্ত ব্রহ্মই;
"একমেবাদ্বিতীয়ম্",
অর্থাৎ তিনি এক ও অদ্বিতীয়;
"ইদং সর্বং, যদয়মাত্মা", অর্থাৎ এই যা কিছু
তৎসমস্তই আত্মা—ইত্যাদি শ্রুতিবাক্য হতে দ্বৈতের অসত্যত্ব প্রমাণিত হয়।.......
শ্রীশুভ
চৌধুরী
সেপ্টেম্বর
১০, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment