জাগতিক প্রপঞ্চের মিথ্যাত্বসাধনে প্রধানতঃ অনুমানই প্রমাণ। এই অনুমানের প্রয়োগ বাক্যটি কিরূপ, তা দেখাতে গিয়ে চিৎসুখাচার্য বলেছেন—
অয়ং
পটঃ (পক্ষ), এতত্তন্তু নিষ্ঠাত্যন্তাভাবপ্রতিযোগী (সাধ্য), দৃশ্যত্বাৎ (হেতু), ঘটবৎ (দৃষ্টান্ত)।
এই
পটের (বস্ত্রের) অবয়ব এই যে তন্তু
বা সূতা, তাতে এই পটের
অত্যন্তাভাব আছে, এবং এই
পট সেই অত্যন্তাভাবের প্রতিযোগীও
বটে, যেহেতু এটা দৃশ্য, যেমন
ঘট। তন্তু বা সূতাগুলো তো
আর পট বা বস্ত্র
নয়। সূতায় বস্ত্রের অত্যন্তাভাব চিরকালই আছে এবং থাকবে।
এইজন্যই আলোচ্য অনুমানে পট বা বস্ত্রকে
সাধ্যের আধার অর্থাৎ পক্ষ
করে বলা হয়েছে যে,
এই পটের উপাদান তন্তুতে
এই পটের অত্যন্তাভাব আছে,
যেহেতু এই পট দৃশ্য
পদার্থ। দৃশ্য পদার্থমাত্রেরই সূক্ষ্ম উপাদানে ঐ সকল স্থূল
দৃশ্যবস্তুর অত্যন্তাভাব দেখতে পাওয়া যায়। ঘটের উপাদান মাটিতে
ঘটের অভাব, কাঞ্চনময় কণ্ঠহারের উপাদান কাঞ্চনে কণ্ঠহারের অভাব, লৌহকুঠারের উপাদান লোহায় কুঠারের অভাব কে না
প্রত্যক্ষ করেন? পটে দৃশ্যত্ব থাকায়,
দৃশ্যত্ব হেতুর পক্ষ পটে অবস্থিতি
(হেতুর পক্ষবৃত্তিত্ব) বুঝা গেল। ঘটেও
দৃশ্যত্ব (হেতু) আছে এবং পটের
অবয়ব তন্তুতে পটের অত্যন্তাভাবও (উক্ত
অনুমানের সাধ্যও) আছে। ঘটেও এইরূপ
নিশ্চিত সাধ্য থাকায়, আলোচ্য অনুমানে ঘটকে দৃষ্টান্তরূপে উপন্যাস
করা হয়েছে বুঝতে হবে।.......
তথ্যসূত্রঃ-
"বেদান্তদর্শন—অদ্বৈতবাদ", তৃতীয়খণ্ড, আশুতোষ শাস্ত্রী, কাব্য-ব্যাকরণ-সাংখ্য-বেদান্ততীর্থ, বিদ্যাবাচস্পতি।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
নভেম্বর
২৪, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment