Sunday, 29 June 2025

সদানন্দ যোগীন্দ্র ও বেদান্তসার—

 


নব্যন্যায়ের অভ্যুত্থান, বৈষ্ণব মতের জাগরণ সাংখ্যমতের বিকাশ প্রভৃতির ফলে খৃষ্টীয় পঞ্চদশ ষোড়শ শতকে অদ্বৈতবাদের সাথে যে বাদযুদ্ধ ঘনীভূত হয়ে আসছিল, সেই যুগে অদ্বৈতবাদী আচার্য নৃসিংহাশ্রম, মল্লনারাধ্যাচার্য, অপ্পয় দীক্ষিত সদানন্দ যোগীন্দ্র প্রভৃতি আচার্যগণ অগ্রসর হয়ে তাঁদের প্রতিভার অমল জ্যোতিতে সর্বপ্রকার অদ্বৈত বিরোধী সিদ্ধান্তের অন্ধকাররাশি ভেদ করে অদ্বৈত ব্রহ্মবিদ্যার গৌরব-পতাকা বহন করে।

খৃষ্টীয় ১৫শ-১৬শশতাব্দীতে আচার্য সদানন্দ যোগীন্দ্র আবির্ভূত হন। তাঁর কর্মস্থল ছিল কাশীধাম। তাঁর গুরুর নাম ছিল অদ্বয়ানন্দ সরস্বতী। আচার্যের অদ্বিতীয় কীর্তি হল 'বেদান্তসার' গ্রন্থ। আসমুদ্রহিমাচল ভারতের সর্বত্র এই 'বেদান্তসার' গ্রন্থ বেদান্তের পাঠ্য। অদ্বৈতবেদান্তের গূঢ়তত্ত্বের সারমর্ম আচার্য এই গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। পরবর্তীকালে অনেক দার্শনিক আচার্য এই বিখ্যাত গ্রন্থের উপর টীকা রচনা করেছেন। খৃষ্টীয় ১৭শ শতকে মীমাংসক আচার্য আপোদেব বেদান্তসারের উপর বালবোধিনী নামে টীকা রচনা করেন। জগন্নাথ আশ্রমের শিষ্য, নৃসিংহাশ্রমের সতীর্থ শ্রীরামতীর্থ বেদান্তসারের উপর বিদ্বন্মনোরঞ্জিনী নামে টীকা রচনা করেন। অনেকের মতে এই রামতীর্থ স্বামী মধুসূদন সরস্বতীর বিদ্যা গুরু। খৃষ্টীয় ষোড়শ শতকের মধ্যভাগে আচার্য নৃসিংহ সরস্বতী সদানন্দের বেদান্তসারের উপর সুবোধিনী নামে টীকা রচনা করে অদ্বৈতবাদের শ্রীবৃদ্ধি করেছিলেন।

বেদান্তসার ব্যতীত সদানন্দ যোগীন্দ্রের আরেকটি কীর্তি হল 'শঙ্কর বিজয়' এই গ্রন্থ রচনা করে সদানন্দ যোগীন্দ্র ভগবান্ শঙ্করাচার্যের ভাষ্য ধারার পুষ্টিসাধনের পাশাপাশি জগদ্গুরু শঙ্করের দিব্য লীলারও বিশেষ প্রচার সাধন করেন। কাশ্মীর হতে কুমারিকা, আবার গুর্জর হতে প্রাগজ্যোতিষপুর পর্যন্ত সদানন্দ যোগীন্দ্রের এই কীর্তি বিঘোষিত।....

তথ্যসূত্রঃ- "অদ্বৈত সিদ্ধি, মধুসূদন সরস্বতী", শ্রীব্যোমকেশ ভট্টাচার্য, ভাগবত-রত্ন।

শ্রীশুভ চৌধুরী

জুন , ২০২৫ খৃষ্টাব্দ।

Photo editing credit Thākur Vishāl

No comments:

জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ-

  শ্রীভগবানুবাচ ময্যাসক্তমনাঃ পার্থ যোগং যুঞ্জন্মদাশ্রয়ঃ৷ অসংশয়ং সমগ্রং মাং যথা জ্ঞাস্যসি তচ্ছৃণু ৷৷ ১   ‘শাঙ্করভাষ্য’   অনুস...