এই বিষয়ে সামবেদীয় ছান্দোগ্য শ্রুতি বলিতেছেন-"আহারশুদ্ধৌ সত্ত্বশুদ্ধিঃ সত্ত্বশুদ্ধৌ ধ্রুবা স্মৃতিঃ, স্মৃতিলম্ভে সর্বগ্রন্থীনাং বিপ্রমোক্ষঃ"-(ছান্দোগ্য উপনিষৎ-৭।২৬।২)
শঙ্করাচার্য ভাষ্যে বলিতেছেন-'যাহা আহৃত বা আহরণ করা যায়, তাহাই আহার অর্থাৎ শব্দাদিবিষয়ক জ্ঞান যাহা ভোক্তার ভোগের নিমিত্ত আহৃত হইয়া থাকে। শব্দাদি ভোগ্যবিষয়ের উপলব্ধিরূপ যে বিজ্ঞান তাহার শুদ্ধিকেই আহারশুদ্ধি বলে, অর্থাৎ রাগদ্বেষ মোহ প্রভৃতি দোষ দ্বারা অসংস্পৃষ্ট বিষয়রূপ ভোগ্যবিষয়সমূহের বিজ্ঞান বা উপলব্ধি বা অনুভূতি। সেই আহার বিশুদ্ধ হইলে তদ্বিশিষ্ট জ্ঞানীর সত্ত্বশুদ্ধি অর্থাৎ অন্তঃকরণের নির্মলতা সিদ্ধ হয়। সত্ত্বশুদ্ধি হইলে ভূমানামক আত্মার স্বরূপ, যাহা একবার ধারণা করা গিয়াছে, সে সম্বন্ধে ধ্রুব বা অবিচ্ছিন্ন স্মৃতি-ধারা উপস্থিত হয় অর্থাৎ জ্ঞাত বিষয়ের আর কখনও ভুল হয় না। সেই ধ্রুবা স্মৃতি লাভ হইলে অবিদ্যাকৃত সর্বানর্থপাশরূপ জন্মজন্মান্তরীয় অনুভব এবং ভাবনার দ্বারা কঠিনীকৃত হৃদয়াশ্রিত গ্রন্থিসকলের বিপ্রমোক্ষ অর্থাৎ বিশেষভাব মোক্ষণ বা বিনাশ হইয়া থাকে। যেহেতু আহারশুদ্ধি উত্তরোত্তর বর্দ্ধিত এই সমস্ত সাধনের মূল, এইজন্য আহারশুদ্ধি বিশেষরূপে কর্ত্তব্য।
No comments:
Post a Comment