শঙ্করাচার্য্য বিরচিত 'শ্রীবিষ্ণুষট্পদী' ও ইহার ভাবার্থঃ-
শ্রীভগবান বিষ্ণুর প্রতি নিবেদিত এই ভক্তি ও বৈরাগ্যমূলক স্তোত্রম্ আচার্য্য শঙ্করের লিখনীতে প্রকাশ পাইতেছে এইভাবে-
অবিনয়মপনয় বিষ্ণো দময় মনঃ শময় বিষয়মৃগতৃষ্ণাম্ ।
ভূতদয়াং বিস্তারয় তারয় সংসারসাগরতঃ ॥ ১॥
হে বিষ্ণো ! আমার অবিনয় অপনয়ন কর, মনকে দমন কর, বিষয় মৃগতৃষ্ণার শান্তিবিধান কর, সৰ্ব্বজীবে আমার দয়া বিস্তার কর এবং আমাকে ভবসমুদ্র হইতে উদ্ধার কর৷ ১ ৷৷
দিব্যধুনীমকরন্দে পরিমলপরিভোগসচ্চিদানন্দে ।
শ্রীপতিপদারবিন্দে ভবভয়খেদচ্ছিদে বন্দে ॥ ২॥
স্বৰ্গগঙ্গা সুরধুনী যে পাদপদ্মের মকরন্দ স্বরূপ, যে পাদপদ্মের পরিমল উপভোগ করিতে পারিলে সচ্চিদানন্দে স্থিতি লাভ হয়, শ্ৰীপতির যে চরণারবিন্দ সংসার ভীতি ছেদন করে আমি সেই চরণপদ্মযুগল বন্দনা করি ৷ ২ ৷৷
সত্যপি ভেদাপগমে নাথ তবাহং ন মামকীনস্ত্বম্ ।
সামুদ্রো হি তরঙ্গঃ ক্বচন সমুদ্রো ন তারঙ্গঃ ॥ ৩॥
তোমায় আমায় যে ভেদ তাহা দূরীভূত হইলেও হে নাথ ! তোমারই আমি ইহাই সত্য কিন্তু আমার তুমি হইতেই পার না । কারণ সমুদ্রেরই তরঙ্গ এইরূপ বলা যায় তরঙ্গের সমুদ্র ইহা কখনও নহে । ৩।।
উদ্ধৃতনগ নগভিদনুজ দনুজকুলামিত্র মিত্রশশিদৃষ্টে ।
দৃষ্টে ভবতি প্রভবতি ন ভবতি কিং ভবতিরস্কারঃ ॥ ৪॥
হে গোবৰ্দ্ধনধারিন! হে পৰ্ব্বতপক্ষাবিদারক ইন্দ্ৰানুজ! হে দৈত্যকুলের অমিত্ৰ! হে সূৰ্য্যচন্দ্র চক্ষু! তুমি যাহার দৃষ্টিপথে আইস তাঁহার সমস্ত জ্ঞানের প্রকাশ হয় । তখন কি সংসার তাহার কাছে অতি তুচ্ছ ও ঘুণ্য বলিয়া উপেক্ষিত হয় না ? ৪।।
মত্স্যাদিভিরবতারৈরবতারবতাঽবতা সদা বসুধাম্ ।
পরমেশ্বর পরিপাল্যো ভবতা ভবতাপভীতোঽহম্ ॥ ৫॥
মৎস্যাদি দশ-অবতাররূপে অবতরণ করিয়া তুমি পৃথিবীকে রক্ষা কর। হে পরমেশ্বর আমি তােমার প্রতিপাল্য আমি বড়ই ভবতাপে ভীত হইয়াছি।৫।।
দামোদর গুণমন্দির সুন্দরবদনারবিন্দ গোবিন্দ ।
ভবজলধিমথনমন্দর পরমং দরমপনয় ত্বং মে ॥ ৬॥
হে দামোদর ! হে গোবিন্দ ! সমস্ত গুণরাশির মন্দির তুমি। আহা কি সুন্দর তোমার মুখ অরিবিন্দ ! তুমি সংসার সমুদ্ৰ মথনের মন্দর স্বরূপ, তুমি আমার পরম সংসার ভয় নিবারণ কর ৷ ৬ ৷৷
নারায়ণ করুণাময় শরণং করবাণি তাবকৌ চরণৌ ।
ইতি ষট্পদী মদীয়ে বদনসরোজে সদা বসতু ॥ ৭॥
হে নারায়ণ ! হে করুণাময় ! আমি তোমার শ্ৰীচরণে শরণা লইলাম । হে প্ৰভু! এই ষট্পদী স্তোত্ররূপ ভ্রমর যেন আমার বদনপদ্মে সদা বাস করে।৭।।
॥ ইতি পরমহংস পরিব্রাজকাচাৰ্য্য শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য্য বিরচিতং বিষ্ণুষট্পদীস্তোত্রং সম্পূর্ণম্ ॥
No comments:
Post a Comment