(সংশয়) আচ্ছা ইহা তো প্রসিদ্ধ যে শ্রেয়ঃপথে অনেক প্রকার অন্তরায় থাকে। অতএব ক্লেশসকলের কোনও একটির দ্বারা অথবা দেবতাদের দ্বারা বিঘ্নিত হয়ে ব্রহ্মবিৎ হয়েও ব্রহ্ম ভিন্ন অন্য গতিপ্রাপ্তি অর্থাৎ মৃত্যু হলে তিনি একমাত্র ব্রহ্মকেই তো প্রাপ্ত হন না।
(উত্তর)
না, জ্ঞানের দ্বারাই তাঁর সর্বপ্রকার বাধা নষ্ট হয়ে যায় বলে তা হতে পারে না। আর অবিদ্যার
দ্বারা বাধিত না হওয়াই হল মোক্ষ, তদ্ভিন্ন আর কোনভাবে বাধিত হওয়া নয়। কেননা যেহেতু
মোক্ষ নিত্যপ্রাপ্ত এবং আত্মস্বরূপভূত। একারণে অথর্ববেদীয় মুণ্ডক শ্রুতি বলছেন—
স
যো হ বৈ তৎ পরমং ব্রহ্ম বেদ
ব্রহ্মৈব
ভবতি নাস্যাব্রহ্মবিৎকুলে ভবতি ।
তরতি
শোকং তরতি পাপ্মানং গুহাগ্রন্থিভ্যো
বিমুক্তোঽমৃতো
ভবতি ॥- (মুণ্ডক উপনিষৎ-৩/২/৯)
আচার্য
শঙ্কর ভাষ্যে বলছেন— অতএব ঐরূপ যে এই জগতে সেই পরম্ ব্রহ্মকে (প্রত্যক্ চৈতন্যকে) জানেন
অর্থাৎ আমি সাক্ষাৎ ব্রহ্মস্বরূপ হই— এইরূপ উপলব্ধি করেন তিনি অন্যপ্রকার গতিপ্রাপ্ত
হন না। দেবগণও তাঁর ব্রহ্মপ্রাপ্তিতে কোন বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারেন না, কেননা তিনি তাঁদেরও
আত্মা হয়ে যান। সুতরাং ব্রহ্মকে জেনে তিনি ব্রহ্মই হয়ে যান।
অধিকন্তু
এই ব্রহ্মজ্ঞের বিদ্যাবংশে আর কেউ অব্রহ্মবিৎ হয় না। আর তিনি শোককে অতিক্রম করেন অর্থাৎ
জীবৎকালেই বিবিধ ইষ্টবস্তুর বিয়োগজনিত মানসিক সন্তাপকে অতিক্রম করে ফেলেন এবং ধর্মাধর্মসংজ্ঞক
প্রতিবন্ধক অর্থাৎ ভাল-মন্দ সবকিছুকে অতিক্রম করেন। আর গুহাগ্রন্থি হতে অর্থাৎ হৃদয়গুহাস্থ
অবিদ্যাগ্রন্থি হতে মুক্ত হয়ে অমৃত (#জীবন্মুক্ত) হয়ে যান।....
No comments:
Post a Comment