Saturday, 13 August 2022

বেদান্তে 'অধ্যারোপ' ও 'অপবাদ' কি?


ব্রহ্ম বাক্য ও মনের অগোচর হওয়ায় তদ্বিষয়ে 'ইনি এই প্রকার', এইরূপে বিধিমুখে উপদেশ করা সম্ভব নয়। সেইহেতু 'অধ্যারোপ' ও 'অপবাদ' অবলম্বনে শ্রুতি সর্বপ্রপঞ্চাতীত ব্রহ্মবিষয়ে উপদেশ প্রদান করেন। রজ্জুতে সর্পের আরোপের ন্যায় ব্রহ্মবস্তুতে যে জগতের আরোপ (—অধ্যাস), তাকে বলে অধ্যারোপ। আর রজ্জুতে আরোপিত সর্প যেমন বস্তুতঃ রজ্জুমাত্র, তদ্রূপ ব্রহ্মে আরোপিত জগৎপ্রপঞ্চও বস্তুতঃ ব্রহ্মমাত্র, এইপ্রকার বাধনিশ্চয়কে বলে অপবাদ

শ্রুতি "নেতি নেতি"-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৪/২/৪), "ইদং সর্বং যদয়মাত্মা"-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-২/৪/৬) ইত্যাদি বাক্যসকলের দ্বারা ব্রহ্মে এই জগৎপ্রপঞ্চের অপবাদ করেন। তাতে রজ্জুতে আরোপিত সর্প যেমন মিথ্যা, তদ্রূপ ব্রহ্মে অধ্যস্ত এই জগৎপ্রপঞ্চও মিথ্যা, এইপ্রকারে জগতের মিথ্যাত্বের বোধ হয়। তার ফলে দ্বৈতবিভ্রম বিনষ্ট হয়ে ব্রহ্ম স্বগত সজাতীয় ও বিজাতীয় ভেদবিহীন একরস ও অদ্বিতীয়, এইপ্রকার বোধ উৎপন্ন হয়।

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...