এই বিষয়ে শ্রুতি কি বলছে দেখে নেয়া যাক—
তস্মৈ
স বিদ্বানুপসন্নায় সম্যক্
প্রশান্তচিত্তায়
শমান্বিতায় ।
যেনাক্ষরং
পুরুষং বেদ সত্যং প্রোবাচ
তাং
তত্ত্বতো ব্রহ্মবিদ্যাম্ ॥ -(মুণ্ডক উপনিষৎ-১/২/১৩)
অর্থাৎ
সেই বিদ্বান্ অর্থাৎ ব্রহ্মবিদ্ গুরু যথাবিধি সমীপাগত প্রশান্তচিত্ত (দর্পাদিদোষরহিত),
শমান্বিত (সংযতেন্দ্রিয় অর্থাৎ সর্ববিষয়ে বৈরাগ্যযুক্ত) সেই শিষ্যকে সেই ব্রহ্মবিদ্যা
যথাযথরূপে বলবেন যে বিদ্যার নিমিত্ত সেই অক্ষরসংজ্ঞক পরমার্থস্বভাববিশিষ্ট সত্য পুরুষকে
জানা যায়।
দীন
শরণাগত শিষ্যদর্শনে জ্ঞানীগণ করুণাপরবশ হয়ে অবশ্যই উপদেশ প্রদান করে থাকেন। বসন্তের
ন্যায় লোকহিত আচরণ করাই বিদ্বানগণের স্বভাব। যোগবাশিষ্ঠসারের বৈরাগ্য প্রকরণে বর্ণিত
আছে—"জ্ঞানিনামপি চিত্তং চেৎ কেবলাত্মসুখোদিতম্।
সত্ত্বাঃ সংসারদুঃখার্ত্তা কং যান্তি শরণং তদা।" অর্থাৎ জ্ঞানীগণের চিত্ত যদি
কেবল আত্মানন্দ লাভেই সমুৎসুক থাকে, তবে সংসারদুঃখসন্তপ্ত জীবগণ একটু শান্তি প্রাপ্তির
আশায় কার শরণাপন্ন হবে? অতএব জ্ঞানীগণ সদা পরোপকারপরায়ণ হয়ে থাকেন।
বিদ্বানগণ
স্বয়ং এই সংসারপ্রহেলিকার পারে উত্তীর্ণ হয়ে তাঁরা অপরকেও সেই মোক্ষমার্গে আরূঢ়
করিয়ে থাকেন। এটা তাঁদের কর্তব্য। আচার্য শ্রীশঙ্কর উপরোক্ত মুণ্ডক শ্রুতির ভাষ্যে
বলেছেন—"বিধিপূর্বক সমীপাগত, যোগ্য, সৎ শিষ্যকে সংসাররূপ
অবিদ্যা-সাগর হতে উদ্ধার করা আচার্যের অবশ্য কর্তব্য।"
No comments:
Post a Comment