আত্মজ্ঞানবিচারপরায়ণ, একতত্ত্বের জ্ঞাননিষ্ঠ পুরুষের সেই জীবন্মুক্তি-অবস্থা উদিত হয়, যা বিদেহমুক্তির সমান। জীবন্মুক্তের লক্ষণ বিষয়ে শ্রীরামচন্দ্র জানতে চাইলে বশিষ্ঠরামসংবাদে ভগবান্ বশিষ্ঠদেব বলেছেন—
"নোদেতি নাস্তমায়াতি
সুখে দুঃখে মুখপ্রভা।
যথাপ্রাপ্তে
স্থিতির্যস্য স জীবন্মুক্ত উচ্যতে।"
-(যোগবাশিষ্ঠ রামায়ণ,
উৎপত্তিপ্রকরণ, ৯/৬)
যিনি
সুখপ্রাপ্তিতে হর্ষ, দুঃখের দ্বারা দৈন্যপ্রাপ্ত হন না, যাঁর
যদৃচ্ছালব্ধ বস্তুতেই দেহযাত্রা নির্বাহ হয় তাঁকেই জীবন্মুক্ত বলা হয়।
আচার্য
বিদ্যারণ্য স্বামী 'জীবন্মুক্তিবিবেকঃ' শীর্ষক গ্রন্থে বলেছেন—
"মুখপ্রভা অর্থাৎ
হর্ষ। জীবন্মুক্ত ব্যক্তির মালা, চন্দন, পূজাদি দ্বারা সুখ প্রাপ্ত হলেও সংসারী সাধারণ জীবের মতো আনন্দ উদিত হয় না। মুখপ্রভার অস্তগমন অর্থাৎ দৈন্য। ধনহানি, ধিক্কারাদি দুঃখ প্রাপ্ত হলেও তিনি বিমর্ষ হন না। বর্তমান
কালে নিজপ্রচেষ্টাবিশেষ ব্যতীত প্রারব্ধ কর্মবশে সমানীত, পূর্বপ্রবাহক্রমে আগত যথাপ্রাপ্ত ভিক্ষান্নাদির দ্বারা জীবনধারণ করেন। সমাধির দৃঢ়তাহেতু মালাচন্দনাদির উপলব্ধি হয় না। কখনো ব্যুত্থান অবস্থায় মালাচন্দনাদির আপাত প্রতীয়মান হলেও বিবেক-বিচারের দৃঢ়তাবশত ত্যাজ্য-গ্রাহ্যবুদ্ধির অভাব হয়; ফলে (জীবন্মুক্তের পক্ষে) হর্ষ-শোকাদির অনুৎপত্তি যুক্তিযুক্ত।"........
তথ্যসূত্রঃ-
বিদ্যারণ্য
মুনীশ্বর বিরচিত "জীবন্মুক্তিবিবেকঃ", জীবন্মুক্তিপ্রমাণপ্রকরণ।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
অক্টোবর
৩, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment