যদি প্রমাণ প্রমেয়াদি প্রপঞ্চের সত্তা স্বীকার না করা হয়, তাহলে অদ্বৈত সিদ্ধান্তে শূন্যবাদের অনুপ্রবেশ হেতু এটা নাস্তিক দর্শনে পর্যবসিত হয়—এই আশঙ্কার উত্তরে আচার্য শ্রীহর্ষ 'খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্' গ্রন্থে বলেছেন—
এইভাবে
প্রমাণাদি প্রপঞ্চের অসত্তা স্বীকার করলেও সৌগত (বৌদ্ধ) ও ব্রহ্মবাদীর (বেদান্তীর)
মধ্যে পার্থক্য এই যে, শূন্যবাদী
বৌদ্ধগণ জ্ঞান জ্ঞেয়াত্মক নিখিল প্রপঞ্চকেই অনির্বচনীয় (মিথ্যা) রূপে বর্ণনা করেন, যা বুদ্ধদেবের লঙ্কাবতার
সূত্রে বর্ণিত আছে—'বুদ্ধি হতে বিবেচিত অর্থাৎ জ্ঞান হতে ভিন্নরূপে বিষয়ীভূত পদার্থসমূহের কোন স্বভাব অর্থাৎ স্বরূপ নির্ণয় করা যায় না, তেমনি বুদ্ধিও (জ্ঞানও) বিচারসহ নয়। অতএব তারা (জ্ঞান ও জ্ঞেয়) উভয়ই
নিরভিলপ্য অর্থাৎ অনির্বচনীয় এবং নিঃস্বভাব (স্বরূপহীন)।'
কিন্তু
ব্রহ্মবাদিগণ বলেন যে, বিজ্ঞান ব্যতিরিক্ত এই বিশ্বপ্রপঞ্চ সদসদ্বিলক্ষণ
অর্থাৎ অনির্বাচ্য (মিথ্যা)। যুক্তি এই
যে, এই বিশ্ব সৎ
হতে পারে না, যেহেতু বক্ষ্যমাণ বহুদোষ কলুষিত। শশশৃঙ্গাদির ন্যায় অসৎও হতে পারে না, কেননা তাহলে লৌকিক ও বিচারকগণের সমস্ত
ব্যবহারের ব্যাঘাত ঘটে।
তথ্যসূত্রঃ-
'কবি-তার্কিক
চক্রবর্ত্তি' আচার্য শ্রীহর্ষ বিরচিত "খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্", প্রমাত্বখণ্ডন। মহামহোপাধ্যায় শ্রীমোহন ভট্টাচার্য তর্কবেদান্ততীর্থ অনুদিত।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
সেপ্টেম্বর
২৯, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment