রজ্জুতে কল্পিত সর্পের ন্যায় চৈতন্যস্বরূপ আত্মাতে মায়া দ্বারা বিকল্পিত মনই দ্বৈতরূপে অবভাত হচ্ছে।
মনোদৃশ্যমিদং
দ্বৈতং যৎকিঞ্চিৎসচরাচরম্ ।
মনসো
হ্যমনীভাবে দ্বৈতং নৈবোপলভ্যতে ॥
-(মাণ্ডুক্যকারিকা, ৩/৩১)
— এই যা
কিছু স্থাবরজঙ্গমাত্মক দ্বৈতজগৎ পরিদৃষ্ট হচ্ছে, তৎসমস্তই মনোমাত্র; কারণ যতক্ষণ মন
আছে ততক্ষণ জগৎ আছে। যেহেতু
মনের সত্তায় দ্বৈতের সত্তা, মনের অভাবে দ্বৈতেরও
অভাব হয়ে থাকে। বিবেকের
অভ্যাস এবং বিবেকজ বৈরাগ্যের
দ্বারা মনের অমনীভাব হলে
অর্থাৎ রজ্জুতে সর্পের ন্যায় মন যখন নিরোধ
সমাধিতে বা সুষুপ্তিতে লয়প্রাপ্ত
হয়, তখন দ্বৈতের উপলব্ধি
হয় না।
এখন
প্রশ্ন, মন কি প্রকারে
অমনীভাব প্রাপ্ত হয়?
আত্মসত্যানুবোধেন
ন সঙ্কল্পয়তে যদা ।
অমনস্তাং
তদা যাতি গ্রাহ্যাভাবে তদগ্রহম্
।।
-(মাণ্ডুক্যকারিকা-৩/৩২)
— আত্মার সত্যত্ব
সাক্ষাৎ উপলব্ধিহেতু "বাচারম্ভণং বিকারো নামধেয়ং মৃত্তিকেত্যেব সত্যম্" অর্থাৎ মৃণ্ময় কলসী প্রভৃতি কার্যবস্তু
বাক্যারব্ধ নামমাত্র, কারণরূপী মৃত্তিকাই একমাত্র সত্য; ছান্দোগ্য শ্রুতির এই বাক্যানুসারে মৃত্তিকার
ন্যায় আত্মাই একমাত্র সত্যবস্তু। শাস্ত্র এবং আচার্যের উপদেশের
পশ্চাৎ সেই সত্যবস্তু আত্মার
সাক্ষাৎ উপলব্ধি দ্বারা গ্রাহ্যপদার্থের অভাবহেতু সেই মন আর
সঙ্কল্প করে না। দাহ্য
পদার্থের অভাবে অগ্নি যেরূপ জ্বলন-ক্রিয়া করে না, সেইরূপ
মন অগ্রহ অর্থাৎ গ্রহণ-বিষয়ক সঙ্কল্পরহিত হয়ে অমনীভাব প্রাপ্ত
হয়।.......
তথ্যসূত্রঃ-
আচার্য গৌড়পাদ বিরচিত মাণ্ডুক্যকারিকা, ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্যের ভাষ্য সমেত।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
নভেম্বর
১৯, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment