শ্রীমদ্ভদ্গীতার অর্জ্জুনবিষাদযোগের ১৫ শ্লোকে বর্ণিত আছে-'হৃষীকেশ পাঞ্চজন্য নামক শঙ্খ বাজাইলেন।' শ্রীমহাভারতের অনুশাসন পর্ব্বের ১৪৯ তম অধ্যায়ে বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রম্ এ শ্রীভগবানের এই 'হৃষীকেশ' নামের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে। ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য্যের বিষ্ণুসহস্রনাম শাঙ্করভাষ্য-১৯ শ্লোকে এ উল্লেখিত আছে-
"হৃষিক" অর্থাৎ পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়ের যিনি ঈশ অর্থাৎ ঈশ্বর তিনিই পরমাত্মা হৃষীকেশ ; ইহারই বশীভূত হয়ে ইন্দ্রিয়গণ স্ব স্ব বিষয়ে প্রবৃত্ত হয়। সূর্য ও চন্দ্র তাপদান ও বস্তু প্রকাশ করে লোক সমুদায়কে আহ্লাদিত করেন বলে হৃষী নামে অভিহিত হন। ঐ সূর্য ও চন্দ্র তাঁর কেশস্বরূপ বা কেশ-সংস্থিত কিরণস্বরূপ, তাই তাঁর নাম হৃষীকেশ।
'হে পান্ডুনন্দন! যিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কেশ নামক অংশুর(কিরণের) দ্বারা সর্বদা যুক্ত করে, তাঁদের দ্বারা জগৎকে জাগরিত এবং নিদ্রিত করে তা হতে পৃথকভাবে উত্থিত হন(অর্থাৎ সর্বত্র অসংগ থাকেন)। জগৎকে জাগরিত এবং নিদ্রিত করার জন্য তিনি জগতের হর্ষণ এবং আনন্দপ্রদানকারী হন। তিনি তাঁর কেশ (শক্তি)-স্বরূপ অগ্নি (এখানে অগ্নি অর্থ তেজ বা সূর্য) এবং চন্দ্রের দ্বারা জগৎকে হৃষ্ট করেন বলে হৃষীকেশ (হর্ষণ + কেশ), মহেশ্বর, বরদানকারী ও লোক (ভূঃ প্রভৃতি লোক এবং সেই লোকবাসীগনের)-পালকরূপে চরাচরে খ্যাত হন।'-(মহাভারত শান্তিপর্ব ৩৪২।৬৬-৬৭)
No comments:
Post a Comment