Tuesday, 17 December 2019

'পঞ্চীকরণ সূত্রম্' (১-৮)


                                              

শঙ্করাচার্য্য বিরচিত 'পঞ্চীকরণ সূত্রম্' সুরেশ্বরাচার্য্যের বার্তিক সমেতঃ-
শ্রীশ্রীশঙ্করভগবৎ বিরচিতং সূত্রম্-'অথাতঃ পরমহংসানাং সমাধিবিধিং ব্যাখ্যাস্যামঃ।।১
ভাবার্থঃ- 'অথ' এই মাঙ্গলিক শব্দ উচ্চারণপূর্বক 'অতঃ' অর্থাৎ তত্ত্বজ্ঞানের উপযোগ্যতাহেতু, পরমহংসগণের সমাধিবিধি ব্যাখ্যা করব।
শ্রীমৎ শঙ্করভগবৎ পূজ্যপাদশিষ্য শ্রীমৎ সুরেশ্বরাচার্য্যের বার্তিকঃ- ॐকার সমস্ত বেদের সার এবং তত্ত্বজ্ঞানের প্রকাশক। সেই ॐকারের দ্বারা মুমুক্ষুগণের কিপ্রকারে চিত্ত সমাহিত হয়, তাই প্রকাশ করা হচ্ছে।১
আচার্য্য শ্রীশ্রীশঙ্করভগবৎ বিরচিতং সূত্রম্-
'সৎ-শব্দবাচ্যম্ অবিদ্যাশবলং ব্রহ্ম।।'২
ব্রহ্মণঃ অব্যক্তম্।।৩
ভাবার্থঃ- অবিদ্যা হয়েছে 'শবল' অর্থাৎ উপাধি যাঁর এমন যে ব্রহ্ম, তিনিই বিচার্য সৎ-শব্দবাচ্য।।২
ব্রহ্ম হতে অব্যক্ত প্রধান অর্থাৎ অব্যাকৃতা বিক্ষেপাবরণাত্মিকা মায়া উদ্ভূতা হয়েছেন।।৩

শ্রীমৎ শঙ্করভগবৎ পূজ্যপাদশিষ্য শ্রীমৎ সুরেশ্বরাচার্য্যের বার্তিকঃ-
সৃষ্টির পূর্বে নিত্যমুক্ত অবিক্রিয় এক পরংব্রহ্মই বর্তমান ছিলেন। সেই ব্রহ্মতে শক্তিভূতা এবং নিজেতেই (ব্রহ্মতেই) অধ্যস্তা যে মায়া, তাঁহার আধ্যাসিক তাদাত্মাহেতু অব্যাকৃতাত্মক অর্থাৎ অনভিব্যক্ত নামরূপাত্মক জগতের তিনিই ঈশ্বর নামধেয় বীজস্বরূপ অর্থাৎ উপাদান কারণ।
ব্যাখ্যাঃ-সুরেশ্বরাচার্য্যের বার্তিকের উপর শ্রীমৎ অভিনবনারায়ণেন্দ্র সরস্বতী বিরচিত আভরণম্ এ বর্ণিত আছে- এখানে ভগবান ভাষ্যকার শঙ্কর কর্তৃক অধ্যারোপ-অপবাদ-ন্যায়ের দ্বারা প্রত্যক্ অর্থৎ জীব সাক্ষিচৈতন্য ও ব্রহ্মচৈতন্যের অভেদ-প্রতিপত্তি-প্রকার দেখানোর জন্য অধিষ্ঠানব্রহ্মের বাস্তবরূপ এবং তাতে অধ্যারোপ্য প্রপঞ্চের সৃষ্টি সিদ্ধবৎ গ্রহণ করে, তাকে কেবল অধ্যারোপ মাত্র বলিয়াছেন। 'বস্তুতে অবস্তুর আরোপ অর্থাৎ ভ্রমের নাম অধ্যারোপ।'-(বেদান্ত সার ১৩) 'বস্তুবিবর্ত অবস্তু সকল মিথ্যা অর্থাৎ চিদাত্মাতে অজ্ঞানকল্পিত জগৎপ্রপঞ্চ সমস্তই মিথ্যা, চিদাত্মাই সত্য- এইরূপ প্রতিপাদনকে অর্থাৎ জড়-পদার্থের মিথ্যাত্ব অর্থাৎ কার্য্য সকল মিথ্যা, কারণই সত্য-এইরূপ দেখানোকে অপবাদ বলে।-(বেদান্ত সার ৬০)
বার্তিকাচার্য্য সুরেশ্বরও প্রথমে জগদধ্যারোপের পূর্বে অবস্থিত অধিষ্ঠানভূত আত্মস্বরূপ সম্বন্ধে বলিতেছেন-'সৃষ্টির পূর্বে নিত্যমুক্ত অবিক্রিয় এক পরংব্রহ্মই বর্তমান ছিলেন।'অর্থাৎ ব্রহ্ম দেশকালরূপ বস্তুপরিচ্ছেদশূন্য, অতএব সৃষ্টিরপূর্বে এক সজাতীয় বিজাতীয়-স্বগতভেদশূন্য পরম অর্থাৎ পরমানন্দস্বরূপ, নিত্যমূক্ত, ত্রিকালেই সর্ব অনর্থরূপ প্রপঞ্চসম্বন্ধশূন্য সচ্চিদানন্দত্মক পরংব্রহ্মই বর্তমান ছিলেন।
শ্রুতিও তাই বলিতেছেন -'সদেব সোম্যেদমগ্র আসীদেকমেবাদ্বিতীয়ম্'- (ছান্দোগ্য উপনিষৎ-৬/২/১)।
‘হে প্রিয়দর্শন, এই জগৎ উৎপত্তির পূর্ব্বে এক অদ্বিতীয় সৎ রূপেই বিদ্যমান ছিল।

এইরূপ অন্যস্থলেও শ্রুতি বলিতেছে-
'আত্মা বা ইদমেক এবাগ্র আসীত্৷ নান্যৎ কিঞ্চন মিষত্৷-(ঐতরেয় উপনিষৎ-১/১/১)
ইহা অর্থাৎ এই জগৎ উৎপত্তির পূর্ব্বে একমাত্র আত্মস্বরূপেই বিদ্যমান ছিল, ব্যাপারবান্ অন্য কিছুই ছিল না।

'বিজ্ঞানমানন্দং ব্রহ্ম'-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৩/৯/২৮)।
অর্থাৎ ব্রহ্ম বিজ্ঞান ও আনন্দস্বরূপ।

'সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম'(তৈত্তিরীয় উপনিষৎ-২/১/১)
অর্থাৎ ব্রহ্ম সত্য জ্ঞান ও অনন্তস্বরূপ।

ইত্যাদি শ্রুতিহেতু এইরূপ অর্থ। যদিও দেশকালাতীত অদ্বিতীয়ের সহিত 'ছিলেন'-রূপ কালসম্বন্ধ যুক্তিযুক্ত হয় না, তথাপি শ্রোতাদের বুঝিবার সুবিধার জন্য ব্রহ্মে কালসম্বন্ধ আরোপ করে শ্রুতি উপদেশ করিতেছেন-এইরূপ বুঝিতে হইবে।
জগদুপাদান ব্রহ্মের কালত্রয়ের সহিত সম্বন্ধশূন্য কেন? তা সুরেশ্বর আচার্য্য বার্তিকে 'অবিক্রিয়ম্' অর্থাৎ অবিকারী ইত্যাদি পদের দ্বারা স্পষ্ট করিয়াছেন। বৃহদারণ্যক শ্রুতিও তাই বলছেন-''স বা এষ মহানজ আত্মাজরোমরোমৃতোভযো ব্রহ্ম'-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৪/৪/২৫) অর্থাৎ সেই এই মহান ও জন্মরহিত আত্মাই জরাবিহীন-অবিনাশী অমৃতস্বরূপ অভয়স্বরূপ ও নিরতিশয় মহান।'
ব্রহ্মের নিরবয়বত্ব ও বিভুত্বহেতু তাতে পরিণাম ও পরিস্পন্দন অসম্ভব বলিয়া ব্রহ্মের উপাদানত্বও নাই অর্থাৎ স্বীকৃত হয় না। তাহলে 'আত্মান আকাশঃ সম্ভূতঃ'-(তৈত্তিরীয় উপনিষৎ-২/১) অর্থাৎ 'আত্মা থেকে আকাশ হয়েছিল।', 'তৎ তেজোহসৃজত'-(ছান্দোগ্য উপনিষৎ-৬/২/৩) অর্থাৎ 'তাহা হইতে তেজ সৃষ্টি হইয়াছিল।' ইত্যাদি শ্রুতিসকল হইতে যে ব্রহ্মের উপাদানত্ব-অভিধান পাওয়া যায়, তাহা কেমন করে সিদ্ধ হয়?
উত্তর হইল- 'তত্ত্বের অন্যথাভাবলক্ষণ' পরিণাম অর্থাৎ যেমন মৃত্তিকারূপ তত্ত্বটি হইতে ঘটের উৎপত্তি হয়, তখন ঘট অন্য প্রকারতা ধর্ম্ম বিশিষ্ট হইলেও তাহাতে তত্ত্ব বা কারণ মৃত্তিকা বর্তমান থাকে, এইভাবে পরিণামরূপ ব্রহ্মের জগৎকার্য্যত্ব সম্বন্ধে উপাদানত্ব হওয়া অসম্ভব হওয়ায়, ব্রহ্মের 'অতত্ত্বতঃ অন্যথালক্ষণ'-বিবর্ত অর্থাৎ শুক্তিতে যখন রজতভ্রান্তি হয়, তখন রজতরূপ মিথ্যা প্রতীতিটির সহিত তত্ত্বরূপ অর্থাৎ কারণরূপ শুক্তি ত্রিকালে পৃথক্ থাকেই, ঐ মিথ্যা প্রত্যয়ের অধিষ্ঠান হওয়ারূপ বিবর্ত-উপাদনত্ব সম্ভব হয়, এইজন্য সুরেশ্বর আচার্য্য বার্তিকে বলেছেন-'সেই ব্রহ্ম নিজ মায়া' ইত্যাদি। সেই ব্রহ্মতে শক্তিভূতা এবং নিজেতেই (ব্রহ্মতেই) অধ্যস্তা যে মায়া, তাঁহার আধ্যাসিক তাদাত্ম্য হইয়া থাকে, সেইজন্য ব্রহ্মকে বীজ বা উপাদান বলা যাইতে পারে। যেহেতু শুক্তি প্রভৃতির স্বরূপ বিকৃত না হইয়াই মিথ্যা-রজতাদির উপাদানত্ব অর্থাৎ আধ্যাসিক কারণত্ব দেখা যায়। অবিক্রিয় ব্রহ্মের জগদ্ বিবর্তের উপাদানত্ব অবিরুদ্ধ এইরূপ অর্থ।
(টীকাঃ- 'সতত্ত্বতোহন্যথা প্রথা বিকার ইত্যুদীরিতঃ। অতত্ত্বতোহন্যথা প্রথা বিবর্ত ইত্যুদাহৃতঃ।।'-(বেদান্ত সার ৬০)
অর্থাৎ যে কারণ স্বরূপ হইতে চ্যুত হয়ে কার্য্য উৎপন্ন করে তা বিকাররূপ কার্য্য; যেমন দুগ্ধ দধি হয়। আর যে কারণটি স্বরূপ হতে চ্যুত না হয়ে কার্য্য উৎপন্ন করে সেই কার্য্যের নাম বিবর্ত। যেমন রজ্জু সর্প হয়।
তাছাড়া আচার্য্য গৌড়পাদ মাণ্ডুক্যকারিকায় বলিতেছেন-
অনিশ্চিতা য়থা রজ্জুরন্ধকারে বিকল্পিতা ।
সর্পধারাদিভির্ভাবৈস্তদ্বদাত্মা বিকল্পিতঃ ॥ মাণ্ডুক্যকারিকা-২।১৭।।
অর্থাৎ অজ্ঞাত রজ্জু যেমন সর্পরূপে প্রতীতির হেতু, অজ্ঞাত নির্বিশেষ ব্রহ্মই তদ্রূপ জগৎরূপে প্রতীতির হেতু।)

আবার সেই নিত্যমুক্ত ব্রহ্মে উৎপত্তির পূর্ব্বে জগতের সুক্ষ্মরূপে অবস্থান অসম্ভব বলিয়া কি করে ব্রহ্মে জগদ্ বীজত্বের প্রতিষ্ঠা করা যায়?
তাই পূজ্যপাদ সুরেশ্বরাচার্য্য বার্তিকে বলিতেছেন-অব্যাকৃতাত্মক অর্থাৎ অনভিব্যক্ত নামরূপাত্মক জগতের তিনিই ঈশ্বর নামধেয় বীজস্বরূপ অর্থাৎ উপাদান কারণ।
স্বতঃসিদ্ধ নিত্যমুক্ত ব্রহ্মের সুক্ষ্মজগৎরূপ কার্য্যের আশ্রয়ত্ব অসম্ভব হইলেও তদাশ্রিত মায়াতে তাহা সম্ভব হওয়ায়, সেই অব্যাকৃতাত্মক অর্থাৎ অনভিব্যক্ত নামরূপাত্মক জগদাশ্রয় মূল মায়ার দ্বারা (শক্তি-শক্তিমানের আধ্যাসিক তাদাত্ম্য সম্বন্ধে এবং শ্রুতিতে 'সেই এই জগৎ অব্যাকৃতরূপে ছিল'-এইরূপ উপদেশ থাকায়, ব্রক্ষকেও অব্যাকৃতাত্মক
অর্থাৎ অনভিব্যক্ত নামরূপাত্মক জগদাশ্রয় বলা চলে।

(টীকাঃস্বতঃসিদ্ধ বিষয়ে টীকা হইল-'স্বস্য সত্তায়াঃ স্বত এব প্রমাণম্।' যো বেত্তি বিশ্বং ন চ তস্য বেত্তা'(শ্বেতাশ্বতর উপনিষৎ ৩।১৯)-অজ্ঞানবোধিনী।
অর্থাৎ নিজের সত্তার তুমি নিজেই প্রমাণ। যিনি সমগ্র বিশ্বকে জানেন, তাঁহার বেত্তা কেউ নাই।)
অতএব ব্রহ্মের জগৎবীজত্ব যুক্তই হইল-এইরূপ অর্থ।

অনন্ত শ্রীমৎ শঙ্কর ভগবৎপূজ্যপাদ্ বিরচিত-

সূত্রম্- অব্যক্তাৎ মহৎ।।৪

ভাবার্থঃ-অব্যাকৃতা প্রকৃতি হতে মহৎতত্ত্বের উদ্ভব হয়। ৪

সূত্রম্- মহতোহহংকারঃ।। ৫

ভাবার্থঃ-মহৎ হতে অহংকারের উৎপত্তি। ৫

সূত্রম্- অহংকারাৎ পঞ্চতন্মাত্রাণি।।৬

ভাবার্থঃ-অহংকার হতে পঞ্চ তন্মাত্র।৬

সূত্রম্- পঞ্চতন্মাত্রেভ্যঃ পঞ্চমহাভূতানি।।৭

ভাবার্থঃ-পঞ্চ তম্মাত্র হতে পঞ্চ স্থূল ভূতের উৎপত্তি হয়।৭

সূত্রম্- পঞ্চমহাভূতেভ্যঃ অখিলং জগৎ।।৮

ভাবার্থঃ-পঞ্চীকৃত পঞ্চ মহাভূত সকল হতে অখিল জগৎ উৎপত্তি হয়।।৮

ভগবান্ শঙ্করাচার্যের শিষ্য শ্রীমৎ সুরেশ্বরাচার্যের বার্তিক- এই ভাবে ব্রহ্মের প্রপঞ্চ-উপাদানত্ব (উপাদান কারণত্ব) প্রতিপাদন করে, এখন তাঁতে জগতের অধ্যারোপ দেখাবার জন্য তা হতে সৃষ্টি - বিবরণ বলছেন-

সেই অব্যক্তা প্রকৃতি হতে (কর্ণেন্দ্রিয়ের শব্দোৎপাদক সর্বাপকৃষ্ট শব্দ-স্পন্দ-কণারূপ) শব্দতন্মাত্ররূপ আকাশ উৎপন্ন হয়েছে, তা হতে (ত্বগেন্দ্রিয়ের স্পর্শোৎপাদক সর্বাপকৃষ্ট স্পর্শ-স্পন্দ-কণারূপ) স্পর্শতন্মাত্রাত্মক বায়ু,তা হতে (চক্ষুরিন্দ্রিয়গ্রাহ্য রূপোৎপাদক সর্বাপকৃষ্ট রূপ-স্পন্দ-কণারূপ) রূপতন্মাত্রাত্মক তেজের উৎপত্তি হয়েছে।।৩।।

বার্তিক- সেই তেজঃ হতে ( রসনায় রসোৎপাদক রস- স্পন্দ-কণারূপ ) রসাত্মিকা আপ (জল) এবং সেই জল-সমূহ হতে (নাসিকায় গন্ধোৎপাদক গন্ধ-স্পন্দ-কণারূপ) গন্ধতন্মাত্র-গুণবিশিষ্ট মহীর উৎপত্তি হয়। আকাশের একটি মাত্র অসাধারণ গুণ শব্দ অর্থাৎ কর্ণেন্দ্রিয়-গ্রাহ্য ধ্বনির উৎপাদক সর্বাপকৃষ্ট স্পন্দ-কণা।।৪।।

পূর্বোক্তরূপে (অস্তিত্ব, অনিত্যত্ব), শব্দ, স্পর্শ, (সাধারণ) ও রূপ (বিশেষ) গুণহেতু তেজের তিনটি গুণ। (মতান্তরে রসাকর্ষণ, ঊর্ধ্ব গতি, বেগ এই গুণত্রয় বায়ু হতে প্রাপ্ত সাধারণ গুণও তেজের আছে)। তারপর (অস্তিত্ব, অনিত্যত্ব) শব্দ, স্পর্শ, রূপ (সাধারণ) ও রস (অসাধারণ) গুণহেতু আপের চারটি গুণ। (মতান্তরে দ্রবত্ব, স্নেহত্ব, স্যন্দনত্বও জলের বিশেষ গুণ )।।৫।।

এবং পূর্বোক্তরূপে (অস্তিত্ব, অনিত্যত্ব) শব্দ, স্পর্শ, রূপ, রস (সাধারণ) এবং গন্ধ (বিশেষ) গুণহেতু মহী-ভূত পঞ্চগুণ-বিশিষ্ট। (মতান্তরে কঠিনত্ব, ভস্মাবশেষত্ব ক্ষিতির অপর দুটি বিশেষ গুণ)। এই (মহদব্রহ্মাখ্য, যাতে সাক্ষিচৈতন্য প্রতিবিম্বরূপ গর্ভাধান করে থাকেন) পঞ্চ মূল অপঞ্চীকৃত ভূতে অভিমানহেতু চিদাভাসরূপ সূত্রাত্মা (প্রতিবিম্ববাদীদের চিৎপ্রতিবিম্ব) সম্ভূত হলেন; অর্থাৎ মহত্তত্ত্বাভিমানী, ব্যষ্টি-সমষ্টি লিঙ্গ যাঁর সূক্ষ্মশরীর, সর্ব ব্যষ্টি-লিঙ্গশরীরে ব্যাপ্ত বলে যিনি সর্বাত্মক এবং হিরণ্যোজ্জ্বল পঞ্চীকৃত স্থূল সৃষ্টির যিনি গর্ভস্বরূপ অথবা হিরণ্যোজ্জ্বল সত্ত্ব-প্রধান মহদ্-ব্রহ্মাখ্য প্রকৃতি যাঁর গর্ভস্থান, তাঁর উৎপত্তি হলো।।৬।।

সেই পঞ্চ মূল-ভূত হতে পাঁচটি স্থূলভূতের উৎপত্তি হয় এবং তা হতে ঐ সমষ্টি স্থূলভূতাভিমানী বিরাট্-পুরুষ উৎপন্ন হন। পন্ডিতগণকর্তৃক পঞ্চীকৃত ভূত সকলই স্থূলভূত বলে কথিত হয়।।৭।।........

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...