ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য বিরচিত '#কালভৈরবাষ্টকম্'
ও এর ভাবার্থঃ-
শ্রীকালভৈরবাষ্টকং
দেবরাজসেব্যমানপাবনাঙ্ঘ্রিপঙ্কজং
ব্যালযজ্ঞসূত্রমিন্দুশেখরং কৃপাকরম্ ।
নারদাদিযোগিবৃন্দবন্দিতং দিগম্বরং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||১||
ভাবার্থ - দেবরাজ ইন্দ্র যাঁর পতিত পাবন চরণ কমল
সেবা করেন, সৰ্প যাঁর গলদেশের যজ্ঞসুত্ৰ, যিনি চন্দ্ৰশেখর, যিনি দয়া নিধান, নারদাদি
যোগিগণ যাকে বন্দনা করেন, যিনি দিগম্বর আমি সেই কাশিপুরের অধীশ্বর কালভৈরবকে ভজনা করি
||১||
ভানুকোটিভাস্বরং ভবাব্ধিতারকং পরং
নীলকণ্ঠমীপ্সিতার্থদায়কং ত্রিলোচনম্ ।
কালকালমম্বুজাক্ষমক্ষশূলমক্ষরং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||২||
ভাবার্থঃ- যিনি কোটি সুৰ্য্য প্ৰতীকাশ, যিনি সংসার
সাগরের কর্ণধার এবং পরাৎপর, যার কণ্ঠদেশ নীলবর্ণে রঞ্জিত, যিনি বাঞ্ছাকল্পতরু ও ত্ৰিলোচন,
যিনি কালসংহারকারী মহাকাল এবং পদ্মপলাশলোচন, যিনি অক্ষমালা ও শূল ধারণ করেন এবং যিনি
সনাতন, কাশীপুরীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে আমি ভজনা করি ||২||
শূলটঙ্কপাশদণ্ডপাণিমাদিকারণং
শ্যামকায়মাদিদেবমক্ষরং নিরাময়ম্ ।
ভীমবিক্রমং প্রভুং বিচিত্রতাণ্ডবপ্রিয়ং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৩||
ভাবার্থ - শূল, টঙ্ক (পাষাণভেদী অস্ত্ৰ বিশেষ),
নাগপাশ ও দণ্ড যাঁর হস্তে, যিনি এই জগতের আদি কারণ, যাঁহার দেহ শ্যামবৰ্ণ, যিনি আদি
দেব, অবিনাশী ও নিরাময়, যাঁর (অসুর-বিনাশকারী) বিক্ৰম অতি ভয়ানক, যিনি জগতের প্রভু
এবং বিচিত্র তাণ্ডবপ্রিয়, কাশিকা রাজধানীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে আমি ভজনা করি ||৩||
ভুক্তিমুক্তিদায়কং প্রশস্তচারুবিগ্রহং
ভক্তবৎসলং স্থিতং সমস্তলোকবিগ্রহম্ ।
বিনিক্বণন্মনোজ্ঞহেমকিঙ্কিণীলসৎকটিং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৪||
ভাবার্থ - যিনি ভক্তজনের ভোগ ও মোক্ষবিধান করেন,
যাঁর দেহ প্ৰশস্ত ও মনোরম, যিনি ভক্তবৎসল ও সুখাসীন, এই ত্ৰিভুবন যার মূৰ্ত্তি, যার
কটিদেশ মঝুরধ্বনিবিশিষ্ট মনোহর সুবর্ণকিঙ্কিণী দ্বারা পরিশোভিত, কাশিকা রাজধানীর অধীশ্বর
সেই কালভৈরবকে ভজনা করি ||৪||
ধর্মসেতুপালকং ত্বধর্মমার্গনাশকং
কর্মপাশমোচকং সুশর্মদায়কং বিভুম্ ।
স্বর্ণবর্ণশেষপাশশোভিতাঙ্গমণ্ডলং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৫||
ভাবার্থ - যিনি (সংসার সাগরের) ধৰ্মরূপ সেতু রক্ষা
করেন, এবং অধৰ্মপথ বিনাশ করেন, যিনি ভক্তজনের কৰ্মপাশ ছেদন করেন ও বিমল আনন্দ দান করেন,
যিনি এই সংসারের প্রভু, স্বর্ণের ন্যায় মনোহর বর্ণবিশিষ্ট অনন্ত সৰ্পরূপ রজ্জুতে যাঁর
অঙ্গ সুশোভিত, কাশিকা রাজধানীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে ভজনা করি ||৫||
রত্নপাদুকাপ্রভাভিরামপাদযুগ্মকং
নিত্যমদ্বিতীয়মিষ্টদৈবতং নিরংজনম্ ।
মৃত্যুদর্পনাশনং করালদংষ্ট্রমোক্ষদং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৬||
ভাবার্থ - রত্ননিৰ্মিত পাদুকা দ্বারা যাঁর পদযুগল
বিরাজিত, যিনি সনাতন, মনোভিরাম এবং যিনি সৰ্বতোভাবে অদ্বিতীয়, যিনি ত্ৰিজগতের ইষ্টদেব
ও নিরঞ্জন (নির্লিপ্ত), যিনি ভক্তের জন্য মৃত্যুর দিগ্বিজয়জনিত দৰ্প বিনাশ করেন, কালের
করালদংষ্ট্রার মধ্য হতে যিনি ভক্তকে উদ্ধার করেন, কাশিকা রাজধানীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে
ভজনা করি ||৬||
অট্টহাসভিন্নপদ্মজাণ্ডকোশসন্ততিং
দৃষ্টিপাতনষ্টপাপজালমুগ্রশাসনম্ ।
অষ্টসিদ্ধিদায়কং কপালমালিকাধরং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৭||
ভাবার্থ - (প্ৰলয় সময়ে) যাঁর অট্টহাসে অনন্ত
ব্ৰহ্মাণ্ডকোষ চূর্ণ বিচুর্ণ হয়, যাঁর দৃষ্টিপাতমাত্ৰে পাপজাল ভস্মীভূত হয়, যাঁর
(দেবাসুর শিরোধাৰ্য্য) শাসন নিতান্ত উগ্র, যিনি সাধকগণকে অষ্টসিদ্ধি দান করেন, এবং
যাঁর গলদেশ নরকপাল মালায় অলঙ্কৃত ; কাশিকাপুরীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে ভজনা করি
||৭||
ভূতসঙ্ঘনায়কং বিশালকীর্তিদায়কং
কাশিবাসলোকপুণ্যপাপশোধকং বিভুম্ ।
নীতিমার্গকোবিদং পুরাতনং জগৎপতিং
কাশিকাপুরাধিনাথকালভৈরবং ভজে ||৮||
ভাবার্থ - যিনি (প্রমথ প্রভৃতি) ভূতগণের (জীব সমূহের)
নায়ক, যিনি কীৰ্তিলিপ্সু, জনগনকে কৰ্মানুযায়ী অসাধারণ কীৰ্ত্তি দান করেন, যাঁর প্ৰসাদে
কাশীবাসিজনগণের পুণ্যপ্ৰভাবে পাপরাশি দূরীভূত হয়, যিনি জগতের বিভু এবং নীতিপথে অভিজ্ঞ,
যিনি (সনাতন বলে) পুরাতন এবং জগৎপতি; কাশিকাপুরীর অধীশ্বর সেই কালভৈরবকে ভজনা করি
||৮||
॥ ফল শ্রুতি ॥
কালভৈরবাষ্টকং পঠন্তি যে মনোহরং
জ্ঞানমুক্তিসাধনং বিচিত্রপুণ্যবর্ধনম্ ।
শোকমোহদৈন্যলোভকোপতাপনাশনং
প্রয়ান্তি কালভৈরবাংঘ্রিসন্নিধিং নরা ধ্রুবম্
||৯||
ভাবার্থ - যাঁরা বিচিত্র পুণ্যবর্দ্ধন, জ্ঞান ও
মুক্তিসাধন, শোক, মোহ, দৈন্য, লোভ, কোপ ও তাপনাশক এই “কালভৈরবাষ্টক’ পাঠ করেন, তাঁরা
নিশ্চয় শ্ৰীকালভৈরবের পদপ্রান্তে উপনীত হন ||৯||
|| ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্যস্য শ্রীগোবিন্দ
ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ শ্রী কালভৈরবাষ্টকং সম্পূর্ণম্ ||
ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য শ্রীমৎ শঙ্কর ভগবৎ বিরচিত কালভৈরবা অষ্টক স্তোত্র সমাপ্ত।
..........................................................................
শ্রীশুভ চৌধুরী
ডিসেম্বর ২০, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment