Sunday, 5 June 2022

আত্মাশ্রিতা মায়া তিন প্রকারে বিনাশ প্রাপ্ত হয়ঃ-

 


শ্রুতিতে এই বিষয়ে স্পষ্ট আলোচনা হইয়াছে। যথা—

"শাস্ত্রেণ ন স্যাৎ পরমার্থদৃষ্টিঃ, কার্য্যক্ষমং পশ্যতি চাপরোক্ষম্। প্রারব্ধনাশাৎ প্রতিভাসনাশঃ, এবং ত্রিধা নশ্যতি চাত্মমায়া।।"- (বরাহ উপনিষৎ-২/৬৯)

১. শাস্ত্রের দ্বারা অর্থাৎ বেদান্তশাস্ত্র অধ্যয়নজনিত ব্রহ্মাত্মবিষয়ক পরোক্ষ জ্ঞানের দ্বারা, মায়া ও তৎকার্য্য জগৎপ্রপঞ্চে পরমার্থ দৃষ্টি থাকে না। অর্থাৎ 'মায়া ও তৎকার্য্য জগৎ পরমার্থতঃ আছে' এইপ্রকার বুদ্ধি বিনষ্ট হয়।

২. আর অবিদ্যাধ্বংসী ব্রহ্মাত্মবিষয়ক অপরোক্ষকে জ্ঞানী কার্য্যক্ষমরূপে অর্থাৎ মায়া, তৎকার্য্য জগৎ ও বন্ধনের বাধকরূপে দর্শন করেন।

৩. প্রারব্ধের নাশ হইলে প্রতিভাস অর্থাৎ ব্রহ্মাত্মবিষয়ক অপরোক্ষ জ্ঞানের দ্বারা আবরণ ও বিক্ষেপশক্তিযুক্তা মায়ার নাশ হইলেও, প্রারব্ধ কর্ম্মরূপ প্রতিবন্ধকবশতঃ বিক্ষেপশক্তির অবিনষ্ট অংশবিশেষের বলে ব্রহ্মজ্ঞের দৃষ্টিতে 'দগ্ধ বস্ত্রের ন্যায়' যে মায়া ও তৎকার্য্য জগৎপ্রপঞ্চের প্রতীতি হয়, তাহা বিনষ্ট হয়।

এইরূপে আত্মাশ্রিতা মায়া তিন প্রকারে বিনাশ প্রাপ্ত হয়।

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...