Wednesday, 31 January 2024

শ্রীশারদাপ্রার্থনা

 


শঙ্করাচার্য বিরচিত "শ্রীশারদাপ্রার্থনা" অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ বঙ্গানুবাদ সমেত

নমস্তে শারদে দেবি কাশ্মীরপুরবাসিনি

ত্বামহং প্রার্থয়ে নিত্যং বিদ্যাদানং দেহি মে ।।১।। 

ভাবার্থ- হে কাশ্মীরপুরবাসিনী শারদা দেবী, তোমায় নমস্কার, আমি তোমার কাছে নিত্য (প্রত্যহ) প্রার্থনা করি, আমায় অনুগ্রহ করে বিদ্যা দান কর।

যা শ্রদ্ধা ধারণা মেধা বাগ্দেবী বিধিবল্লভা

ভক্তজিহ্বাগ্রসদনা শমাদিগুণদায়িনী ।।২।।

ভাবার্থ- তুমিই শ্রদ্ধা, ধারণা, মেধা বাগ্দেবী (বাক্শক্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী) তথা বিধির (ব্রহ্মার) পত্নী। তুমি ভক্তের জিহ্বার অগ্রভাগে বাস কর শম, দম, তিতিক্ষা প্রভৃতি গুণদায়িনী।

নমামি যামিনীং নাথলেখালঙ্কৃতকুন্তলাম্

ভবানীং ভবসন্তাপনির্বাপণসুধানদীম্ ।।৩।।

ভাবার্থ- হে যামিনী (সংযমী বা ধৈর্যশীল), তোমাকে নমস্কার। তোমার কেশের বেণীবন্ধন আঁকাবাঁকা ডোরা যেন জ্ঞানের রেখা দিয়ে সজ্জিত। হে ভবানী, তুমি সুধামৃত নদীর ন্যায় এই ভব সংসারের শোক, দুঃখাদি নিরাময় কর। 

ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ

বেদবেদাঙ্গবেদান্তবিদ্যাস্থানেভ্য এব ।।৪।। 

ভাবার্থ- ভদ্রকালীকে সর্বদা নমস্কার। সরস্বতীকে বারংবার নমস্কার। বেদ, বেদাঙ্গ, বেদান্ত এবং বিদ্যাস্থানসমূহকেও নমস্কার। 

ব্রহ্মস্বরূপা পরমা জ্যোতিরূপা সনাতনী

সর্ববিদ্যাধিদেবী যা তস্যৈ বাণ্যৈ নমো নমঃ ।।৫।। 

ভাবার্থ - তুমি পরব্রহ্মের স্বরূপ জ্যোতিরূপা তথা সনাতনী, তুমি সর্ববিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। হে বাণী, তোমাকে প্রণাম করি। 

যয়া বিনা জগৎসর্বং শশ্বজ্জীবন্মৃতং ভবেৎ

জ্ঞানাধিদেবী যা তস্যৈ সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।।৬।।

ভাবার্থ- যিনি বিনা সম্পূর্ণ জগৎ মৃত মনে হবে যদিও তা প্রকৃত পক্ষে জীবিত, সেই জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীকে প্রণাম। 

যয়া বিনা জগৎসর্বং মূকমুন্মত্তবৎসদা

যা দেবী বাগধিষ্ঠাত্রী তস্যৈ বাণ্যৈ নমো নমঃ |||| 

ভাবার্থ - আমি সেই বাক্যের অধিষ্ঠাত্রী বাগ্দেবী বাণীকে প্রণাম করি যার অনুপস্থিতিতে সমগ্র জগৎ মূক (বাক্শক্তিহীন) তথা উন্মত্তের মত হয়ে যেত। 

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্যস্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ শ্রীশারদাপ্রার্থনা অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ সম্পূর্ণম্। 

ইতি ভগবান্ শঙ্করাচার্য বিরচিত শ্রীশারদাপ্রার্থনা অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ সমাপ্ত।

 

শ্রীশুভ চৌধুরী

জানুয়ারি ২৯, ২০২০ খৃষ্টাব্দ।

Monday, 15 January 2024

চিৎসুখাচার্য—

 


শ্রীহর্ষ আনন্দবোধেন্দ্রের ন্যায় চিৎসুখাচার্য অদ্বৈতবেদান্তের একটি স্তম্ভ বিশেষ। ইনি দক্ষিণভারতে কামকোটি মঠের পীঠাধীশরূপে শেষ জীবন অতিবাহিত করেন বলে জানা যায়। ইনি নব্যন্যায়ে অতি অসাধারণ পণ্ডিত ছিলেন এবং নৈয়ায়িক প্রভৃতি যাবতীয় প্রতিপক্ষের মত খণ্ডবিখণ্ডিত করে "প্রত্যক্-তত্ত্ব-প্রদীপিকা" বা 'চিৎসুখী' নামক অদ্বৈতবেদান্তের একটি কালজয়ী গ্রন্থ রচনা করেন। ইনার গুরুর নাম জ্ঞানোত্তমাচার্য। তত্ত্ব-প্রদীপিকার নমস্কার শ্লোকে জ্ঞানোত্তমাচার্যকে তাঁর গুরু বলে উল্লেখ করেছেন।

তত্ত্ব-প্রদীপিকা ব্রহ্মসূত্রের ন্যায় চার অধ্যায়ে বিভক্ত। প্রথম অধ্যায়ে সমন্বয়, দ্বিতীয়ে অবিরোধ, তৃতীয়ে ব্রহ্মজ্ঞানের সাধন, চতুর্থে ব্রহ্মবিজ্ঞানের ফল বা মুক্তিতত্ত্ব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। শ্রীহর্ষের খণ্ডনখণ্ডখাদ্যের রচনাশৈলী অনুসরণ করেই তত্ত্ব-প্রদীপিকা লিখিত হয়েছে। গদ্যে তত্ত্ব-বিচার করে শ্লোকে সিদ্ধান্ত নিবদ্ধ করা হয়েছে। তত্ত্ব-প্রদীপিকার উপর চিৎসুখাচার্যের শিষ্য সুখপ্রকাশের শিষ্য প্রত্যগ্রূপ ভগবান্ নয়ন-প্রসাদিনী নামে অতি অপূর্ব টীকা রচনা করেছেন।

তত্ত্ব-প্রদীপিকার দ্বিতীয় অধ্যায়ে চিৎসুখ ন্যায়ের ষোড়শ পদার্থ এবং বৈশেষিকের সপ্তপদার্থ খণ্ডন করবার উদ্দেশ্যে বল্লভাচার্যের ন্যায়-লীলাবতীর এবং উদয়নাচার্য প্রভৃতির লক্ষণ উদ্ধৃত করে খণ্ডন করেছেন। ন্যায়কন্দলী রচয়িতা শ্রীধরাচার্য এবং গঙ্গেশ উপাধ্যায়ও খণ্ডনে বাদ যান নি। শ্রীহর্ষ তৎকৃত খণ্ডন-খণ্ডখাদ্যে উদয়নাচার্য প্রভৃতির বিরুদ্ধে তর্কের শরজাল বিস্তার করে ন্যায়-মত বিধ্বস্ত করলে গঙ্গেশ উপাধ্যায়, বল্লভাচার্য, বর্দ্ধমান উপাধ্যায় প্রভৃতির আক্রমণে ন্যায় বৈশেষিক মতের যে জাগরণ দেখতে পাওয়া যায়, বিশেষতঃ গঙ্গেশ উপাধ্যায় কর্তৃক তত্ত্বচিন্তামণিতে শ্রীহর্ষের মত খণ্ডিত হওয়ায় অদ্বৈত বেদান্ত চিন্তায় যে দূর্বলতা দেখা দেয়, আচার্য চিৎসুখ সেই দৌর্বল্য বিদূরিত করে অদ্বৈত সিদ্ধান্ত সুদৃঢ় ভিত্তিতে স্থাপন করেন। পরপক্ষ খণ্ডন এবং স্বীয় পক্ষ স্থাপন, এই উভয় অংশে চিৎসুখের তত্ত্ব-প্রদীপিকার ন্যায় গ্রন্থ আর দ্বিতীয় নেই বললেও অত্যুক্তি হয় না। এর থেকে ধারণা করা যায় চিৎসুখাচার্য বল্লভাচার্যের পরবর্তী খৃষ্টীয় ১৩শ শতকে আবির্ভূত হন। তবে তিনি বিদ্যারণ্যের পূর্ববর্তী ছিলেন, কারণ বিদ্যারণ্য মুনীশ্বর সর্বদর্শন-সংগ্রহে চিৎসুখের নাম উল্লেখ করেছেন।

তত্ত্ব-প্রদীপিকা ব্যতীত চিৎসুখাচার্য শাঙ্কর ভাষ্যের ভাব-প্রকাশিকা টীকা, মণ্ডনমিশ্রের ব্রহ্মসিদ্ধির উপর অভিপ্রায়-প্রকাশিকা নামে টীকা, সুরেশ্বরাচার্যের নৈষ্কর্মসিদ্ধির উপর ভাবতত্ত্ব-প্রকাশিকা টীকা, খণ্ডন-খণ্ডখাদ্যের টীকা, বিবরণ-তাৎপর্য-দীপিকা টীকা বিষ্ণুপুরাণের টীকা, আনন্দবোধের ন্যায়মকরন্দের এবং প্রমাণমালার টীকা, শঙ্কর-চরিত, অধিকরণমঞ্জরী, ষড়্দর্শনসংগ্রহ-বৃত্তি প্রভৃতি বিবিধ গ্রন্থমালা রচনা করে অদ্বৈতবাদের প্রতিপক্ষ মত নিরাস করতঃ ভগবান্ শঙ্করাচার্যের ভাষ্য ধারার বিশেষ পুষ্টি সাধন করেন। শুনা যায় যে, মধ্বাচার্য দিগ্বিজয় কালে ইনার সঙ্গে বিচার করেন নি।........

তথ্যসূত্রঃ-

. বেদান্তদর্শনঅদ্বৈতবাদ, আশুতোষ শাস্ত্রী কাব্য-ব্যাকরণ-সাংখ্য-বেদান্ততীর্থ বিদ্যাবাচস্পতি।

. শ্রীযোগেন্দ্রনাথ তর্কসাংখ্যবেদান্ততীর্থ অনুবাদিত "অদ্বৈতসিদ্ধিঃ" গ্রন্থের ভূমিকা।

শ্রীশুভ চৌধুরী

জানুয়ারি ১৪, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ।

ব্রহ্মতত্ত্ব শব্দের অগোচর, গুরুকৃপায় অধ্যারোপ অপবাদ ন্যায়ে উপদিষ্ট হয়ঃ-

 


ব্রহ্ম শব্দের অগোচর, বাক্য মনের অতীত। বাক্যদ্বারা তাঁকে প্রকাশ করা যায় না। বাষ্কলিকর্তৃক পৃষ্ট হয়ে গুরু বার্ধ্ব মৌনদ্বারাই এই ব্রহ্মতত্ত্ব ব্যাখ্যান করেছিলেন। বাষ্কলি গুরু বার্ধ্বকে বললেন —'হে ভগবান্! আমাকে ব্রহ্মবিষয়ে উপদেশ করুন।' বার্ধ্ব নিরুত্তর রইলেন। শিষ্য দ্বিতীয় তৃতীয়বার একই প্রশ্ন করলে গুরু বার্ধ্ব বললেন—'আমি তো উপদেশ দিচ্ছি, তুমিই বুঝতে পারছ না। আত্মা উপশান্তস্বরূপ।' বার্ধ্ব মৌন অবলম্বন করেই সেই কথা বললেন।

যোগবাশিষ্ঠে দেখা যায় শ্রীরামচন্দ্র যতিরাজ বশিষ্ঠদেবকে বলেছিলেন —'যদি মৌনাবলম্বন করেই তত্ত্ব বুঝাবার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়, তবে আপনি আমাকে এত উপদেশ দিলেন কেন? প্রথম হতেই আপনি মৌন ধারণ করলেই হত?' প্রত্যুত্তরে শ্রীবশিষ্ঠ বলেছিলেন—'তাহলে লোকে ভাবত যে আমি মূর্খ, কিছু জানি না। তাই নানা কথা বলে এখন চুপ করেছি। এখন তুমিও মৌনাবলম্বনের রহস্য বুঝবে।' আসল তত্ত্বটি মুখে বলা যায় না। তবে আচার্যগণ ব্রহ্ম, আত্মা, ঋত, সত্য ইত্যাদি নানা শব্দ কল্পনা করেছেন। তাই শ্রুতি নানা কল্পিত উপায়ে সেই তত্ত্ব বর্ণন করেছেন। 'ঋতমাত্মা পরং ব্রহ্ম সত্যমিত্যাদিকা বুধৈঃ। কল্পিতা ব্যবহারার্থং সংজ্ঞাস্তস্য মহাত্মনঃ।'-(যোগবাশিষ্ঠ)

নাম, জাতি, গুণ, ক্রিয়া প্রভৃতির কোন একটি থাকলে তবেই সেই বস্তুটিকে শব্দ দ্বারা প্রকাশ করা যায়। ব্রহ্ম নাম-জাতি-আদি-রহিত। অতএব শব্দের অগোচর। কিছু বলতে গেলেই দ্বৈত এসে পড়ে। তাই গুরু পরম কৃপায় অধ্যারোপ অপবাদ ন্যায়ে শিষ্যকে উপদেশ দেন। অধ্যারোপ হল ভ্রম, রজ্জুতে সর্পভ্রম। আচার্য সদানন্দ যোগী তৎকৃত বেদান্তসারে বলেছেন

"অসর্পভূতায়াং রজ্জৌ সর্প আরোপবৎ বস্তুনি অবস্তু-আরোপঃঅধ্যারোপঃ। অপবাদঃ নামরজ্জুবিবর্তস্য সর্পস্য রজ্জুমাত্রত্ববৎ বস্তু-বিবর্তস্য অবস্তুনঃ অজ্ঞানাদেঃ প্রপঞ্চস্য বস্তুমাত্রত্বম্।"-(বেদান্ত-সারঃ)

সর্প (সাপ) নয় এমন যে রজ্জু (দড়ি), তাতে যেমন সর্পের আরোপ হয়, সেরকম বস্তুতে অবস্তুর আরোপকে অধ্যারোপ বলে। সার কথা হল, সত্য কোন বস্তুতে অসত্য অন্য কোন বস্তুর জ্ঞান করাকে অধ্যারোপ বলে। রজ্জুর বিবর্ত সর্প যেমন রজ্জুমাত্র, সেরূপ বস্তুর বিবর্ত যে অজ্ঞানাদি সকল জড়পদার্থ, তাও বস্তু মাত্রই, এরূপ নিশ্চয় বুদ্ধির নাম অপবাদ।

অসঙ্গ উদাসীন পরমাত্ম-বস্তুর বিবর্তভূত অজ্ঞান থেকে আরম্ভ করে সমূহ জড় জগৎ পর্যন্ত সকল কিছুই স্বরূপতঃ আধার চৈতন্যমাত্রই; দৃশ্য অদৃশ্য জগতের আধারভূত চৈতন্যই বস্তু, বাকি সব অবস্তু, মিথ্যাএরূপ বোধ করাকেই অপবাদ বলে।

তথ্যসূত্রঃ-

. যোগবাশিষ্ঠসারঃ, স্বামী ধীরেশানন্দ অনুবাদ ব্যাখ্যাকৃত।

. আচার্য সদানন্দ-যোগীন্দ্র সরস্বতী বিরচিত বেদান্ত-সারঃ।

শ্রীশুভ চৌধুরী

ডিসেম্বর ২২, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।

শ্রীকৃষ্ণমিশ্র যতি ও 'প্রবোধচন্দ্রোদয়'—

 


সম্ভবতঃ খৃষ্টীয় একাদশ শতকের শেষভাগে শ্রীকৃষ্ণমিশ্র যতি আবির্ভূত হন। ইনি 'প্রবোধচন্দ্রোদয়' নামক একখানা নাটক রচনা করেন। এই প্রবোধচন্দ্রোদয়ে তিনি অদ্বৈতবেদান্তকে নাটকের রূপ দিয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণমিশ্র শ্রীহর্ষের ন্যায় একাধারে অসামান্য কবি এবং দার্শনিক পণ্ডিত ছিলেন। পরবর্তী জীবনে তিনি সন্ন্যাস অবলম্বন পূর্বক আদর্শ অদ্বৈতবাদী হন। প্রবোধ বা জ্ঞানই চন্দ্র। চন্দ্রের উদয়ে যেমন অন্ধকার বিদূরিত হয়, সেইরূপ জ্ঞানের উদয়ে অজ্ঞানন্ধকার বিধ্বস্ত হয়। এজন্যই শ্রীকৃষ্ণমিশ্র তাঁর নাটকের এরূপ নামকরণ করেছেন।

শ্রীকৃষ্ণমিশ্র প্রবোধচন্দ্রোদয়ে মানুষের বিভিন্ন মানসিক বৃত্তি গুলোকে নট নটীরূপে চিত্রিত করে ধর্ম, জ্ঞান, ঐশ্বর্য প্রভৃতিকে রক্ত মাংসের মানুষ সাজিয়ে রঙ্গমঞ্চে দর্শক-মণ্ডলীর সম্মুখে উপস্থিত করেছেন। অজ্ঞান নাটকীয় চরিত্রের রাজা। পাপ, অধর্ম প্রভৃতি তাঁর প্রিয় সহচর। অজ্ঞান কাশী রাজ্য অধিকার করে তত্রত্য ধর্মপ্রাণ রাজা জ্ঞানকে নির্বাসিত করল। কাশী অর্থাৎ জ্ঞানপুরী অজ্ঞানে আচ্ছন্ন হল। পুণ্য পলায়ন করল, পাপের শ্রীবৃদ্ধি হল। এই দুঃসময়ে ভবিষ্যদ্বাণীতে জানাগেল যে পুনরায় জ্ঞানরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে, উপনিষদুক্ত তত্ত্বজ্ঞানের সাথে জ্ঞানরাজের মিলন হবে। তত্ত্ববিদ্যা জ্ঞানের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য অজ্ঞানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল। অজ্ঞান পরাজিত বিনষ্ট হল, পাপ বিধ্বস্ত হল। জ্ঞানের নির্মল আলোকে নিখিল জীব, জগৎ উদ্ভাসিত হল, এটাই সংক্ষেপে প্রবোধচন্দ্রোদয়ের প্রতিপাদ্য। অদ্বৈত বেদান্তবাদ এরূপে নাটকীয় চিত্রে চিত্রিত করা গ্রন্থকারের অসাধারণ কৃতিত্বের পরিচায়ক। প্রবোধচন্দ্রোদয়ের উপর রামদাস দীক্ষিতের প্রকাশ নামক টীকা নাণ্ডিল্যগোপ প্রভুর চন্দ্রিকা নামে টীকা আছে। .....

তথ্যসূত্রঃ- বেদান্তদর্শনঅদ্বৈতবাদ, প্রথম খণ্ড, আশুতোষ শাস্ত্রী কাব্য-ব্যাকরণ-সাংখ্য-বেদান্ততীর্থ বিদ্যাবাচস্পতি।

শ্রীশুভ চৌধুরী

জানুয়ারি ১৫, ২০২৪ খৃষ্টাব্দ।

তুরীয় ব্রহ্মের স্বরূপঃ-

  মাণ্ডুক্য উপনিষদে তুরীয় ব্রহ্মতত্ত্বের উপদেশ রয়েছে। ঐ দুর্জ্ঞেয় তুরীয় তত্ত্ব বুঝানোর জন্য ওঁকার বা প্রণবকে ব্রহ্মের প্...