শঙ্করাচার্য বিরচিত "শ্রীশারদাপ্রার্থনা" অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ বঙ্গানুবাদ সমেত—
নমস্তে শারদে দেবি কাশ্মীরপুরবাসিনি ।
ত্বামহং প্রার্থয়ে নিত্যং বিদ্যাদানং চ দেহি মে ।।১।।
ভাবার্থ- হে কাশ্মীরপুরবাসিনী শারদা দেবী, তোমায় নমস্কার, আমি তোমার কাছে নিত্য (প্রত্যহ) প্রার্থনা করি, আমায় অনুগ্রহ করে বিদ্যা দান কর।
যা শ্রদ্ধা ধারণা
মেধা বাগ্দেবী বিধিবল্লভা ।
ভক্তজিহ্বাগ্রসদনা শমাদিগুণদায়িনী ।।২।।
ভাবার্থ- তুমিই শ্রদ্ধা, ধারণা, মেধা ও বাগ্দেবী (বাক্শক্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী) তথা বিধির (ব্রহ্মার) পত্নী। তুমি ভক্তের জিহ্বার অগ্রভাগে বাস কর ও শম, দম, তিতিক্ষা প্রভৃতি গুণদায়িনী।
নমামি যামিনীং নাথলেখালঙ্কৃতকুন্তলাম্ ।
ভবানীং ভবসন্তাপনির্বাপণসুধানদীম্ ।।৩।।
ভাবার্থ- হে যামিনী (সংযমী বা ধৈর্যশীল), তোমাকে নমস্কার। তোমার কেশের বেণীবন্ধন আঁকাবাঁকা ডোরা যেন জ্ঞানের রেখা দিয়ে সজ্জিত। হে ভবানী, তুমি সুধামৃত নদীর ন্যায় এই ভব সংসারের শোক, দুঃখাদি নিরাময় কর।
ভদ্রকাল্যৈ নমো নিত্যং সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।
বেদবেদাঙ্গবেদান্তবিদ্যাস্থানেভ্য এব চ ।।৪।।
ভাবার্থ- ভদ্রকালীকে সর্বদা নমস্কার। সরস্বতীকে বারংবার নমস্কার। বেদ, বেদাঙ্গ, বেদান্ত এবং বিদ্যাস্থানসমূহকেও নমস্কার।
ব্রহ্মস্বরূপা পরমা জ্যোতিরূপা সনাতনী ।
সর্ববিদ্যাধিদেবী যা তস্যৈ বাণ্যৈ নমো নমঃ ।।৫।।
ভাবার্থ - তুমি পরব্রহ্মের স্বরূপ ও জ্যোতিরূপা তথা সনাতনী, তুমি সর্ববিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। হে বাণী, তোমাকে প্রণাম করি।
যয়া বিনা জগৎসর্বং শশ্বজ্জীবন্মৃতং ভবেৎ ।
জ্ঞানাধিদেবী যা তস্যৈ সরস্বত্যৈ নমো নমঃ ।।৬।।
ভাবার্থ- যিনি বিনা সম্পূর্ণ জগৎ মৃত মনে হবে যদিও তা প্রকৃত পক্ষে জীবিত, সেই জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীকে প্রণাম।
যয়া বিনা জগৎসর্বং মূকমুন্মত্তবৎসদা ।
যা দেবী বাগধিষ্ঠাত্রী তস্যৈ বাণ্যৈ নমো নমঃ ||৭||
ভাবার্থ - আমি সেই বাক্যের অধিষ্ঠাত্রী বাগ্দেবী বাণীকে প্রণাম করি যার অনুপস্থিতিতে সমগ্র জগৎ মূক (বাক্শক্তিহীন) তথা উন্মত্তের মত হয়ে যেত।
ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্যস্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ শ্রীশারদাপ্রার্থনা অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ সম্পূর্ণম্।
ইতি ভগবান্ শঙ্করাচার্য বিরচিত শ্রীশারদাপ্রার্থনা অথবা সরস্বতীস্তুতিঃ সমাপ্ত।
শ্রীশুভ চৌধুরী
জানুয়ারি ২৯, ২০২০ খৃষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment