Friday, 30 April 2021

"সুব্রহ্মণ্য ভুজঙ্গ স্তোত্রম্"


সদা বালরূপাপি বিঘ্নাদ্রিহন্ত্রী

মহাদন্তিবক্ত্রাপি পঞ্চাস্যমান্যা ।

বিধীন্দ্রাদিমৃগ্যা গণেশাভিধা মে

বিধত্তাং শ্রিয়ং কাপি কল্যাণমূর্তি ||১||

ভাবার্থ - যিনি বালকাকৃতি হলেও বিঘ্নপর্ব্বত বিধ্বস্ত করে থাকেন, গজেন্দ্রবদন হলেও পঞ্চাস্য ( সিংহ, গণেশ পক্ষে পঞ্চানন শিব ) যাঁর আদর করে থাকেন, ব্রহ্মা, ইন্দ্র প্রভৃতি ( দেবগণ ) যাঁর অন্বেষণ করেন, সেই গণেশনাম্নী অনির্ব্বচনীয় মঙ্গলমূর্তি আমার শ্রী সম্পাদন করুন ||১||

ন জানামি শব্দং ন জানামি বার্থং

ন জানামি পদ্যং ন জানামি গদ্যম ।

চিদেকা ষড়াস্যা হৃদি দ্যোততে মে

মুখান্নিশ্চ্যবন্তে গিরশ্চাপি চিত্রম ||২||

ভাবার্থ - আমি না জানি শব্দ, না জানি অর্থ, না জানি পদ্য, না জানি গদ্য। আশ্চর্য্যের বিষয়, আমার হৃদয়ে এক ষড়াননা চিন্ময়মূর্তি প্রকাশমানা আছেন, আর বাণীসমূহ আমার মুখ হতে অনর্গল ক্ষরিত হচ্ছে ||২||

ময়ূরাধিরূঢ়ং মহাবাক্যগূঢ়ং

মহোহারিদেহং মহচ্চিত্তগেহম ।

মহীদেবদেবং মহাবেদভাবং

মহাদেববালং ভজে লোকপালম ||৩||

ভাবার্থ - ময়ূরে আরূঢ়, মনোরম দেহ সম্পন্ন, মহাপুরুষগণের হৃদয় মন্দিরে অবস্থিত, ভূদেব বৃন্দের আরাধ্য, সমগ্র বেদরাশির আবির্ভাব হেতু তত্ত্বমস্যাদি মহাবাক্যের গূঢ়ার্থগম্য লোকপালক শিবকুমারকে ভজনা করি ||৩||

যদা সন্নিধানং গতা মানবা মে

ভবাম্ভোধিপারং গতাস্তে তদৈব ।

ইতি ব্যঞ্জয়ন সিন্ধুতীরে য আস্তে

তমীড়ে পবিত্রং পরাশক্তি পুত্রম ||৪||

ভাবার্থ - মানবগণ যখন আমার সমীপস্থ হয়, তখনই তারা ভবসমুদ্রের পারে গিয়ে থাকে, এই ( ভাব ) ব্যক্ত করবার জন্যই যিনি সাগরতীরে অবস্থিত, সেই পবিত্র পরাশক্তিপুত্র অর্থাৎ পার্বতীনন্দনকে স্তব করি ||৪||

যথাব্ধেস্তরঙ্গা লয়ং যান্তি তুঙ্গা-

স্তথৈবাপদঃ সন্নিধৌ সেবতাং মে ।

ইতীবোর্ম্মিপংক্তীর্নৃণাং দর্শয়ন্তং

সদা ভাবয়ে হৃৎসরোজে গুহং তম্ ||৫||

ভাবার্থ - যেমন সাগরের উচ্চ তরঙ্গ সকল আমার নিকট লয়প্রাপ্ত হচ্ছে, সেইরূপ মদীয় সেবকগণের বিপদ যতই উৎকট হোক ( আমার সমীপে ) তা লয়প্রাপ্ত হবেই। যিনি মানবগণকে যেন এই ভাবেই তরঙ্গ শ্রেণী প্রদর্শন করতেছেন – সেই কার্তিকেয় কে হৃদয়পদ্মে সদা ভাবনা করি ||৫||

গিরৌ মন্নিবাসে নরা যেহধিরূঢ়াং–

স্তদা পর্ব্বতে রাজতে তেহধিরূঢ়াঃ ।

ইতীব ব্রুবন্ গন্ধশৈলীধিরূঢ়ঃ

স দেবো মুদে মে সদা ষন্মুখোহস্তু ||৬||

ভাবার্থ - যে মানবগণ, খধি অর্থাৎ অজ্ঞানপূর্ব্বক ও আমার নিবাসপর্ব্বতে ( যখন ) আরোহন করে, তারা তখনই কৈলাসপর্ব্বতবাসী হয়ে যায় ( শিবসালোক্য প্রাপ্তির অধিকারী হয় ) যেন এ উপদেশ দেবার জন্যই যিনি গন্ধশৈলে অবস্থান করতেছেন, সেই দেব ষড়ানন সদা আমার আনন্দের কারণ হোক ||৬||

মহাম্ভোধিতীরে মহাপাপচোরে

মুনীন্দ্রানুকূলে সুগন্ধাঢ্যশৈলে ।

গুহায়াং বসন্তং স্বভাসালসন্তং

জনার্ত্তিং হরন্তং শ্রয়ামো গুহং তম্ ||৭||

ভাবার্থ - মহাপাপহারী মহাসমুদ্র তীরে মুনিবরপ্রিয় উত্তম গন্ধশৈলে গুহামধ্যে অবস্থিত, স্বীয় প্রভায় দেদীপ্যমান, আশ্রিত জনদুঃখবিনাশী সেই কার্তিকেয়ের আশ্রয় গ্রহণ করতেছি ||৭||

লসৎ স্বর্ণগেহে নৃণাং কামদোহে

সুমস্তোমসংছন্নমাণিক্যমঞ্চে ।

সমুদ্যৎ সহস্রার্কতুল্যপ্রকাশং

সদা ভাবয়ে কার্ত্তিকেয়ং সুরেশম ||৮||

ভাবার্থ - মানবগণের অভীষ্টসাধক উজ্জ্বল সুবর্ণমন্দিরে কুসুমরাশি সমাচ্ছন্ন মাণিক্যমঞ্চে উদীয়মান সহস্রসূর্য্যসমপ্রকাশ দেবশ্রেষ্ঠ কার্তিকেয়কে সদা ভাবনা করি ||৮||

রণদ্ধংসকে মঞ্জুলেহত্যন্তশোণে

মনোহারিলাবণ্যপীযূষপূর্নে ।

মনঃ ষটপদো মে ভবক্লেশতপ্তঃ

সদা মোদতাং স্কন্দ তে পাদপদ্মে ||৯||

ভাবার্থ - ধ্বনিতনূপুর, মনোহারলাবণ্য সুধাপূর্ণ, অত্যন্ত লোহিত কার্তিকেয় চরণকমলে সংসারক্লেশতপ্ত মদীয় মনঃষটপদ সদা প্রমোদ প্রাপ্ত হোক ||৯||

সুবর্ণাভদিব্যাম্বরৈর্ভাসমানাং

ক্কণৎকিঙ্কিণীমেখলাশোভমানাম্ ।

লসদ্ধেমপট্টেন বিদ্যোতমানাং

কটিং ভাবয়ে স্বন্দ তে দীপ্যমানাম্ ||১০||

ভাবার্থ - হে স্কন্দ, যা স্বভাব-ভাস্বর সুবর্ণাভ দিব্যবসনে শোভিত কিঙ্কিণীমুখর মেখলাদামে বিরাজমান, সুবর্ণময় সুচারুপীঠে অধিরূঢ় তুমি যাকে ( অধিকতর ) উজ্জ্বল করেছ, আমি সেই তোমার কটিদেশকে ভাবনা করি ||১০||

পুলিন্দেশকন্যা ঘনাভোগতুঙ্গ–

স্তনালিঙ্গনাসক্ত কাশ্মীররাগম্ ।

নমনস্যাম্যহং তারকারে তবোরঃ

স্বভক্তাবনে সর্ব্বদা সানুরাগম্ ||১১||

ভাবার্থ - হে তারকাসুর বিজয়িন, পুলিন্দ রাজতনয়ার ঘন পীবর তুঙ্গ স্তনালিঙ্গনে তদীয় কুঙ্কুমরাগ রঞ্জিত, স্বভক্তরক্ষণের সদা অনুরাগী, তোমার বক্ষঃস্থলকে আমি নমস্কার করি ||১১||

বিধৌ কৃপ্তদণ্ডান স্বলীলাধৃতাণ্ডান্

নিরস্তেভশুণ্ডান দ্বিষৎকালদণ্ডান্ ৷

হতেন্দ্রারিষণ্ডান জগত্রাণশৌণ্ডান

সদা তে প্রচন্ডাশ্রয়ে বাহুদণ্ডাণ ||১২||

ভাবার্থ - ( হে কার্তিকেয় ) তোমার যে করিশুণ্ডদর্পহারী অসুরসঙ্ঘ বিজয়ী লোকরক্ষাদক্ষ প্রচন্ড বাহুদণ্ড চন্দ্রের দণ্ড বিধান করেছেন, নিজ লীলা বশে আণ্ড অর্থাৎ অণ্ডজ ( কুক্কুট পক্ষী ) ধারণ করেছেন অথবা নিজ লীলা বশে আণ্ড অর্থাৎ ব্রহ্মান্ডের ধারণ হেতু এবং শত্রুগণের কালদন্ড স্বরূপ, আমি সর্বদা তাদের আশ্রিত গ্রহণ হচ্ছি ||১২||

সদা শারদাঃ ষণ্ মৃগাঙ্কা যদি স্যুঃ

সমুদ্যন্ত এব স্থিতাশ্চেৎ সমন্তাৎ ।

সদা পূর্ণবিম্বাঃ কলঙ্কৈশ্চ হীনা–

স্তদা ত্বন্মুখানাং ব্রুবে স্কন্দ সাম্যম ||১৩||

ভাবার্থ - হে স্কন্দ, যদি সর্বদা শরৎকালীন ছয়টি চন্দ্র হয়, এবং যদি একসঙ্গে চতুর্দিকে উদিত হয়, এবং সদা পূর্ণমন্ডল ও নিকলঙ্ক হয়, তাহলে তোমার ষড়াননের সাদৃশ্য আছে বলতে পারি, অর্থাৎ তোমার মুখমণ্ডল জগতে অতুলনীয় ||১৩||

স্ফুরন্মন্দহাসৈঃ সহংসানি চঞ্চৎ–

কটাক্ষাবলী ভৃঙ্গ সঙ্ঘোজ্জ্বলানি ।

মধুস্যন্দি বিম্বাধরানীশসূনো

তবালোকয়ে ষন্মুখাম্ভোরুহাণি ||১৪||

ভাবার্থ - হে মহেশ্বরনন্দন, স্ফুরিত মৃদুমন্দ হাস্য যোগে হংসশোভিত কটাক্ষপাত স্বরূপ ভ্রমরাবলি দ্বারা বিরাজিত মধুনিস্যন্দি বিম্বাধর যুক্ত তোমার ছয়টি মুখপদ্ম আমি অবলোকন করতেছি ||১৪||

বিশালেষু কর্ণান্তদীর্ঘেষ্বজস্রং

দয়াস্যন্দিষু দ্বাদশস্বীক্ষণেষু ।

ময়ীষৎ কটাক্ষঃ সকৃৎ পাতিতশ্চেদ্

ভবেৎ তে দয়াশীল কা নাম হানিঃ ||১৫||

ভাবার্থ - কর্ণপ্রান্ত পর্যন্ত আয়ত নিরন্তর করুণামৃতবর্ষী দ্বাদশলোচনের মধ্যে ( কোন এক লোচনের ) ঈষৎ কটাক্ষপাত যদি আমার প্রতি করো, হে দয়াশীল, তাতে তোমার হানি কি? ||১৫||

সুতাঙ্গোদভবো মেহসি জীবেতি ষড়ধা

জপন মন্ত্রমীশো মুদা জিঘ্রতে যান ।

জগদ্ভারভৃদ্ভ্যো জগন্নাথ তেভ্যঃ

কিরীটোজ্জ্বলেভ্যো নমো মস্তকেভ্যঃ ||১৬||

ভাবার্থ - হে পুত্র, তুমি আমার দেহ হতে উৎপন্ন, বেঁচে থাক – এই আশীর্ম্মন্ত্র ছয় ছয়বার জপ করে মহেশ্বর আনন্দ সহকারে যাকে আঘ্রাণ করেছেন, হে জগৎপথে, জগদভারহারী কিরীটোজ্জ্বল সেই তোমার মস্তক সকলকে ( আমার ) নমস্কার ||১৬||

স্ফুরদ্রত্নকেয়ূরহারাভিরাম–

শ্চলৎকুণ্ডলশ্রীলসদ্গণ্ডভাগঃ ।

কটৌ পীতবাসাঃ করে চারুশক্তিঃ

পুরস্তান্মমাস্তাং পুরারেস্তনূজঃ ||১৭||

ভাবার্থ - যিনি রত্নোজ্জ্বল কেয়ূরহারে রমনীয়, যার গণ্ডস্থল দোদুল্যমান কুণ্ডলশ্রী পরিশোভিত, কটিতটে পীত বস্ত্র ও হস্তে সুন্দর শক্তি অস্ত্র, সেই ত্রিপুরারি নন্দন আমার সম্মুখে অবস্থিতি করুন ||১৭||

ইহায়াহি বৎসেতি হস্তং প্রসার্য্যা

হ্বয়ত্যাদরাচ্ছঙ্করো মাতুরঙ্কাৎ ।

সমুৎপত্য তাতং শ্রয়ন্তং কুমারং

হরাশ্লিষ্টগাত্রং ভজে বালমূর্তিম||১৮||

ভাবার্থ - ‘বৎস এখানে এস' এই বলে হস্তদ্বয় প্রসারণ পূর্বক শিব আদরে আহ্বান করলে যিনি মাতৃক্রোড় হতে ঝাঁপিয়ে পিতাকে আশ্রয় করেন, শিবালিঙ্গিত সেই বালক মূর্তি কুমারকে ভজনা করি ||১৮||

কুমারেশসূনো গুহ স্কন্দ সেনা

পতে শক্তিপাণে ময়ূরাধিরূঢ় ।

পুলিন্দাত্মজাকান্ত ভক্তার্তিহারিন্

প্রভো তারকারে সদা রক্ষ মাং ত্বম ||১৯||

ভাবার্থ - হে ঈশনন্দন কুমার, স্কন্দ, হে শক্তিপাণে ময়ূরবাহন গুহ, হে পুলিন্দতনয়াপতে ভক্তদুঃখহারিন প্রভো তারক-বিজয়িন, আমাকে সর্বদা রক্ষা করো ||১৯||

প্রশান্তেন্দ্রিয়ে নষ্টসংজ্ঞে বিচেষ্টে

কফোদগারিবক্ত্রে ভয়োৎকম্পিগাত্রে ।

প্রয়াণোন্মুখে ময্যনাথে তদানীং

দ্রুতং মে দয়ালো ভবাগ্রে গুহ ত্বম ||২০||

ভাবার্থ - আমার ইন্দ্রিয়চয় শক্তিহীন, সংজ্ঞালুপ্ত, মুখ হতে কফ উদগীর্ণ, গাত্র ভয়ে কম্পিত, মৃত্যু আসন্ন, অনাথ আমি চেষ্টাহীন, তখন হে দয়ালু গুহ, আমার সম্মুখে আসো||২০||

কৃতান্তস্য দূতেষু চণ্ডেষু কোপা–

দ্দহ-চ্ছিন্দিভিন্দীতি মাং তর্জ্জয়ৎসু ।

ময়ূরং সমারুহ্য মাভৈরিতি ত্বং

পুরঃ শক্তিপাণি-র্মমায়াহি শীঘ্রম ||২১||

ভাবার্থ - যখন প্রচন্ড যমদূতগণ সক্রোধে তর্জন করিবে, ‘একে দগ্ধ করো, কেটে ফেলো, ফেঁড়ে ফেলো ', তখন ময়ূরে আরোহন পূর্বক শক্তি-হস্তে লয়ে মাভৈঃ বলতে বলতে সত্বর আমার সম্মুখে আসো ||২১||

প্রণম্যাসকৃৎ পাদয়োস্তে পতিত্বা

প্রসাদ্য প্রভো প্রার্থয়েহনেকবারম্ ।

ন বক্তুং ক্ষমোহহং তদানীং কৃপাব্ধে

ন কার্য্যন্তকালে মনাগপ্যুপেক্ষা ||২২||

ভাবার্থ - হে প্রভো, তোমার পায়ে পড়ে প্রনাম দ্বারা প্রসন্নতা বিধান করে বারংবার প্রার্থনা করতেছি, সেই সময় বলবার সামর্থ্য থাকবে না, হে কৃপাসিন্ধু ( তাই বলে ) যেন অন্তকালে একটু অপেক্ষা করো না ||২২||

সহস্রাণ্ডভোক্তা ত্বয়া শূরনামা

হতস্তারকঃ সিংহবক্ত্রশ্চ দৈত্যঃ ।

মমান্তর্হৃদিস্থং মনঃ ক্লেশমেকং

ন হংসি প্রভো কিং করোমি ক্ব যামি ||২৩||

ভাবার্থ - তুমি সহস্র ব্রহ্মাণ্ডভোক্তা বিখ্যাত অসুর তারককে এবং সিংহবক্ত্র, দৈত্যকে বিনষ্ট করেছ, হে প্রভো, আমার হৃদয়াভ্যন্তরে অবস্থিত একটা মনঃক্লেশকে নষ্ট না করো তো আমি কি করব, কোথায় যাব? ||২৩||

অহং সর্ব্বদা দুঃখভারাবসন্নো

ভবান দীনবন্ধুস্ত্বদন্যং ন যাচে ।

ভবদ্ভক্তিরোধং সদা কৃপ্তবাধং

মমাধিং দ্রুতং নাশয়োমা সুত ত্বম ||২৪||

ভাবার্থ - হে উমাতনয়, আমি সর্বদা দুঃখভারে অবসন্ন, আপনি দীনবন্ধু, আমি আপনার ব্যতীত ( কারোও নিকট ) প্রার্থনা করিবো না। আপনার ভক্তির প্রতিবন্ধক নিত্যকৃতের বাধাজনিত যে মনঃপীড়া আমার আছে, অবিলম্বে তা বিনাশ করুন||২৪||

অপস্মারকুষ্ঠক্ষয়ার্শঃপ্রমেহঃ

জরোন্মাদগুল্মাদিরোগা মহান্তঃ ।

পিশাচাশ্চ সর্ব্বে ভবৎপত্রভূতিং

বিলোক্য ক্ষণাৎ তারকারে দ্রবন্তে ||২৫||

ভাবার্থ - হে তারকাসুর শত্রু, অপস্মার, কুষ্ঠ, ক্ষয়, অর্শঃ, প্রমেহ, জ্বর, উন্মাদ এবং গুল্ম প্রভৃতি মহান রোগসকল এবং সমস্ত পিশাচগণ, আপনার বাহনের ঐশ্বর্য দর্শন করেই ক্ষণমধ্যে পলায়ন করে ||২৫||

দৃশি স্কন্দ মূর্তিঃ শ্রুতৌ স্কন্দকীর্তি

র্মুখে মে পবিত্রং সদা তচ্চরিত্রম্ ।

করে তস্য কৃত্যং বপুস্তস্য ভৃত্যং

গুহে সন্তু লীনা মমাশেষভাবাঃ ||২৬||

ভাবার্থ - আমার নয়নে কার্তিকেয়ের মূর্তি, তার কীর্তি কথা, মুখের সর্বদাই তার পবিত্র চরিত্র, হস্তে তাঁরই কর্ম এবং সর্বশরীরে তাঁরই ভৃত্যভাব। এই রূপ আমার সমস্ত সত্তাই যেন কার্তিকেয়ে লীন হয়ে থাকে ||২৬||

মুনীনামুতাহো নৃণাং ভক্তিভাজা–

মভীষ্টপ্রদাঃ সন্তি সর্ব্বত্র দেবাঃ ।

নৃণামন্ত্যজানামপি স্বার্থদানে

গুহ্যদ্দেবমন্যং ন জানে ন জানে ||২৭||

ভাবার্থ - মুনিগণ ও ভক্তিভাজন মানব গণের অভীষ্ট দাতা দেবগন সর্বত্র আছেন, কিন্তু অন্ত্যজ মানবগণেরও স্বার্থ প্রদানে এক কার্তিকেয় ব্যতীত অপর দেবতা আমি জানিনা, জানিনা ||২৭||

কলত্রং সুতা বন্ধুবর্গঃ পশুর্বা

নরো বাথ নারী গৃহে যে মদীয়াঃ ।

যজন্তো নমন্তঃ স্তুবন্তো ভবন্তং

স্মবন্তশ্চ তে সন্তু সর্ব্বে কুমার ||২৮||

ভাবার্থ - ভার্য্যা, কন্যা, পুত্র, বন্ধুবর্গ অথবা পশু ( অধিক কি ) আমার সম্বন্ধযুক্ত পুংজাতি বা স্ত্রী জাতি যারা আছে, হে কার্তিকেয়, তারা সকলেই যেন ( যথাসম্ভব ) যজন, প্রণাম, স্তব ও স্মরণে রত থাকে ||২৮||

মৃগাঃ পক্ষিণো দংশকা যে চ দুষ্টা–

স্তুথা ব্যাধয়ো বাধকা যে মদঙ্গে ।

ভবচ্ছক্তিতীক্ষ্ণগ্রভিন্নাঃ সুদূরে

বিনশ্যন্তু তে চূর্ণিতক্রৌঞ্চশৈল ||২৯||

ভাবার্থ - হে ক্রৌঞ্চপর্বত বিদারণ, যে সকল দুষ্ট মৃগ, পক্ষী, দংশক এবং যেসকল দুষ্টব্যাধি আমার দেহে আছে, আপনার শক্তি অস্ত্রের তীক্ষ্ণাগ্রভাগ দ্বারা বিদীর্ণ হয়ে তার বিনাশপ্রাপ্ত হোক ||২৯||

জনিত্রী পিতা চ স্বপুত্রাপরাধং

সহেতে ন কিং দেবসেনাধিনাথ ।

অহং চাতিবালো ভবান লোকতাতঃ

ক্ষমাস্বাপরাধং সমস্তং মহেশ ||৩০||

ভাবার্থ - হে দেবসেনাপতে, মাতা পিতা কি নিজ পুত্রের অপরাধ ক্ষমা করেন না? আমি অতি বালক, আপনি জগৎ পিতা, অতএব হে মহান ঈশ, আমার সমস্ত অপরাধ ক্ষমা করতেই হবে ||৩০||

নমঃ কেকিনে শক্তয়ে চাপি তুভ্যং

নমশ্ছাগ তুভ্যং নমঃ কুক্কুটায় ।

নমঃ সিন্ধবে সিন্ধুদেশায় তুভ্যং

পুনঃ স্কন্দমূর্তে নমস্তে নমোহস্তু ||৩১||

ভাবার্থ -( হে কার্তিকেয় ) তোমার প্রীত্যর্থে ময়ূরকে নমস্কার, শক্তি অস্ত্রকে নমস্কার, কুক্কুট কে নমস্কার, হে ছাগ, তোমাকেও নমস্কার । ( হে কার্তিকেয় ) তুমি সমুদ্র দেশে অবস্থিত, তোমাকে এবং সমুদ্রকে নমস্কার। হে স্কন্দরূপ ধারিন, তোমাকে আমার নমস্কা, নমস্কার ||৩১||

জয়ানন্দভূমন জয়াপারধামন

জয়ামোঘকীর্ত্তে জয়ানন্দমূর্তে ।

জয়ানন্দসিন্ধো জয়াশেষবন্ধো

জয় ত্বং সদা মুক্তিদানেশসূনো ||৩২||

ভাবার্থ - হে আনন্দভূমন, তোমার জয়। হে অশেষ তেজোনিধি, তোমার জয়। হে অমোঘকীর্তে, তোমার জয়, হে আনন্দ মূর্তে, তোমার জয়, হে আনন্দ সাগর, তোমার জয়। হে অশেষ জনের বন্ধু, তোমার জয়, হে সদা মুক্তিদান ব্রতী শিবনন্দন, তোমার জয় হোক ||৩২||

ভুজঙ্গাখ্যবৃত্তেন কৃপ্তং স্তবং যঃ

পঠেদ্ ভক্তিযুক্তো গুহং সংপ্রণম্য ।

সপুত্রান কলত্রং ধনং দীর্ঘমায়ু–

র্লভেত স্বয়ং স্কন্দসাযুজ্যমন্তে ||৩৩||

ভাবার্থ - ভুজঙ্গ প্রয়াত নামক ছন্দে গ্রথিত এই স্তোত্র যে ব্যক্তি ভক্তি যুক্ত হয়ে কার্তিকেয়কে প্রণাম পূর্বক পাঠ করবে, সে বহুপুত্র, ভার্য্যা, ধন ও দীর্ঘায়ু প্রাপ্ত হয়ে অন্তকালে স্বয়ং কার্তিকেয়সাযুজ্য লাভ করে ||৩৩||

|| ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ সুব্রাহ্মণ্য ভুজঙ্গ স্তোত্রং সম্পূর্ণম ||

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ্ শিষ্য শ্রীমদ্ শঙ্করাচার্য বিরচিত সুব্রাহ্মণ্য ভুজঙ্গ প্রয়াত স্তোত্র সমাপ্ত।

 

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...