কঠশ্রুতির (১/৩/১০) শাঙ্করভাষ্যে উল্লেখ রহিয়াছে-"অব্যক্ত হইতে প্রথম উৎপন্ন হিরণ্যগর্ভতত্ত্ব যাহা জ্ঞানশক্তি ও ক্রিয়াশক্তিস্বরূপ, সেই মহান আত্মা (–সমষ্টিবুদ্ধি হিরণ্যগর্ভ) ঐ বুদ্ধি-উৎপাদক ভূতসূক্ষ্ম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।"
ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞের
সংযোগই যে ভূতকারণ সেই বিষয়ে শ্রীভগবান বলিতেছেন- "সর্বকার্য (উৎপত্তিশীল বস্তু)
হইতে মহত্ত্বহেতু এবং আত্মবিকারস্বরূপ সর্বকার্যের ভরণকারী 'মহৎ' নামে প্রসিদ্ধ ব্রহ্ম,
আমার স্বভূতা মদীয়া মায়া ত্রিগুণাত্মিকা প্রকৃতি— যিনি স্বীয় বিকারজাত সর্বভূতের
যোনি অর্থাৎ উৎপত্তির কারণ। সেই মহদ্ব্রহ্মরূপ যোনিতে আমি (ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞ প্রকৃতিদ্বয়
দ্বারা শক্তিমান ঈশ্বর) গর্ভাধান (হিরণ্যগর্ভ জন্মের বীজ অর্থাৎ সর্বভূত জন্মকারণের
বীজ নিক্ষেপ) করি অর্থাৎ অবিদ্যা, কাম ও কর্ম-রূপ উপাধি অনুবিধায়ী ক্ষেত্রজ্ঞকে ক্ষেত্রের
সহিত সংযোজন করি। সেই গর্ভাধান হইতে হিরণ্যগর্ভের উৎপত্তিদ্বারা সর্বভূতের উৎপত্তি
হইয়া থাকে।"-(শাঙ্করভাষ্য, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-১৪/৩)
সৃষ্টির
আরম্ভে প্রকৃতির এই প্রথম পরিণামকে মহত্তত্ত্বও বলা হয়। আধুনিক সাংখ্যকারগণ উহাকেই
বুদ্ধিতত্ত্ব বলেন। শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণে প্রকৃতি থেকে চিত্তের উৎপত্তিপূর্বক তাহার
লক্ষণ বর্ণিত আছে-"সেই পরমপুরুষ দৈববশত (জীবের অদৃষ্টবশত) ক্ষুভিতধর্মিণী স্বীয়া
প্রকৃতিতে বীর্য (চিদরূপা শক্তি) আধান করেন। তখন সেই প্রকৃতি হিরণ্ময় অর্থাৎ প্রকাশবহুল
মহৎতত্ত্বকে সৃষ্টি করেন।"-(শ্রীধর স্বামী টীকা, শ্রীমদ্ভাগবতম্-৩/২৬/১৯)
No comments:
Post a Comment