ইদানিং কিছু নির্দিষ্ট অর্বাচীন সম্প্রদায় দাবি করছে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার সাংখ্যযোগের ২৪ নং শ্লোক নাকি প্রক্ষিপ্ত। সেই অতিজ্ঞানীদের মতে এই শ্লোকের প্রক্ষিপ্ততার কারণ হল পুনরুক্তি দোষ। এই বিষয়ে আজকের আলোচনার সূত্রপাত করছি। ভগবান ভাষ্যকার শঙ্করাচার্য বহু পূর্বেই এই আপত্তির খণ্ডন করেছেন গীতার এই শ্লোকের ভাষ্যে। যথা-
ভাষ্যানুবাদ-
(পূর্বপক্ষ) এই সকল শ্লোকের প্রতি পুনরুক্তি দোষারোপ করা কি উচিত নয়? যেহেতু
"ন জায়তে ম্রিয়তে বা" ইত্যাদি একটি শ্লোকের দ্বারা আত্মার নিত্যত্ব এবং
অবিক্রিয়ত্ব পূর্বেই বলা হয়েছে। সেখানে আত্মবিষয়ক যা কিছু বলা হয়েছে তা এই শ্লোকার্থ
হতে অতিরিক্ত নয়, কেবল কিছু শব্দের পুনরুক্তি এবং কিঞ্চিৎ অর্থের পুনরুক্তি।
(উত্তরপক্ষ)
আত্মবস্তুর দুর্বোধত্বহেতু (সহজে বোধগম্য নহে, এই হেতু), শ্রীভগবান বাসুদেব পুনঃ পুনঃ
ঐ প্রসঙ্গ উত্থাপিত করে বিভিন্ন শব্দ দ্বারা সেই একই বস্তু নিরুপণ করছেন এই চিন্তা
করে যে সেই সূক্ষ্মতত্ত্ব সংসারীদের বুদ্ধিগোচর হয়ে সংসার নিবৃত্তির হেতু হবে।......
বেদান্তমীমাংসা
শাস্ত্রে এই বিষয়ের আরও স্পষ্ট মীমাংসা আছে। যথা-
"শ্রবণ,
মনন, নিদিধ্যাসন, এ সকল অনুষ্ঠান একবার করলে যদি আত্মদর্শন না হয়—তবে পুনঃ পুনঃ করতে
হবে। যতদিন না আত্মদর্শন হয় ততদিন পর্যন্ত করতে হবে। শাস্ত্র সেই অভিপ্রায়েই বার
বার এবং শ্রবণাদি বহুবিধ উপায় উপদেশ করেছেন।"
-(সূত্রার্থ
সংক্ষেপ, ব্রহ্মসূত্র ৪/১/১)
No comments:
Post a Comment