Monday, 9 May 2022

লিঙ্গোপাধি জীবের দেহান্তরপ্রাপ্তিকালে মুখ্যপ্রাণ ও ইন্দ্রিয়সকলের গতি শ্রবণঃ-

 


প্রথমে বলে রাখি, সুক্ষ্মশরীররূপ উপাধির সহিত সম্বন্ধবশতঃই আত্মার জন্ম, মরণ, গমন ও আগমন প্রভৃতি বিকারাত্মক সর্বপ্রকার সাংসারিক ব্যবহার হইয়া থাকে। এবার আসি প্রস্তাবিত প্রকরণে, বেদান্ত মীমাংসা শাস্ত্রের রংহত্যধিকরণে ভগবান সূত্রকার বাদরায়ণ বলিতেছেন-

"প্রাণগতেশ্চ৷৷"-(ব্রহ্মসূত্র-৩.১.৩)

ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য ভাষ্যে বলিতেছেন—

'তমুত্ক্রামন্তং প্রাণোনূত্ক্রামতি প্রাণমনূত্ক্রামন্তং সর্বে প্রাণা অনূত্ক্রামন্তি'-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৪/৪/২)

অর্থাৎ "সে (লিঙ্গোপাধি জীব) উৎক্রমণ করিলে তাহাকে অনুসরণকরতঃ মুখ্যপ্রাণ উৎক্রমণ করে, মুখ্যপ্রাণ উৎক্রমণ করিলে তাহাকে অনুসরণকরতঃ সকল ইন্দ্রিয় উৎক্রমণ করে", ইত্যাদি শ্রুতিসকলের দ্বারা দেহান্তরপ্রাপ্তিকালে প্রাণসকলের গতি শ্রাবিত হইতেছে।

প্রাণ ও ইন্দ্রিয়সকল পর পর উৎক্রান্ত হয় এরূপ অর্থ নহে। জীবাদির প্রাধান্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া বর্ণনামধ্যে পারম্পর্য স্বীকৃত হইয়াছে। বস্তুতঃ ইন্দ্রিয়াদিবিশিষ্ট লিঙ্গশরীরের উৎক্রমণই জীবের উৎক্রমণ। আথর্ব্বণ উপনিষদেও এইরূপ কথা আছে, "কে উৎক্রমণ করিলে অর্থাৎ দেহত্যাগ করিলে, আমি উৎক্রমণ করিব, এবং কে দেহে প্রতিষ্ঠিত থাকিলে আমি প্রতিষ্ঠিত থাকিব; এই ব্যবস্থার জন্য তিনি প্রাণ সৃষ্টি করিলেন..."-(প্রশ্ন উপনিষৎ-৬/৩)

ছবিটি সংগৃহীত, চিত্রাঙ্কনে Sirsho Acharya

 

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...