Saturday, 8 January 2022

আর্তত্রাণ নারায়ণাষ্টাদশকম্

 


প্রহ্লাদ প্রভুরস্তি চেত্তব দৃরিঃ সর্বত্র মে দর্শয়

স্তম্ভে চৈনমিতি ব্রুবন্তমসুরং তত্রাবিরাসীদ্ধরিঃ ।

বক্ষস্তস্যবিদারয়ন্নিজনখৈর্বাৎসল্যমাবেদয়ন্ন্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১||

ভাবার্থ - “হে প্রহ্লাদ । তুমি বলছ, হরি তোমার ঈশ্বর এবং সেই হরি সর্বত্রই বিরাজিত আছেন, যদি এই হয়, তা হলে এই স্তম্ভমধোও তোমার হরিকে আমায় দেখাও।” হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে এই কথা কইলে তৎক্ষণাৎ শ্রীহরি স্তম্ভমধ্যে আর্বিভূত হলেন এবং আশু স্বীয় তীক্ষ্ণ নখাগ্র দ্বারা দৈত্যপতির বক্ষঃস্থল বিদীর্ণ এবং নিজভক্তের প্রতি ) বাৎসল্যভাব প্রদর্শন- করত আর্তব্যক্তির রক্ষাকার্য্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই মদীয় আশ্রয় ||১||

শ্রীরামাব বিভীষণোয়মধুনা ত্বার্তো ভয়াদাগতঃ

সুগ্রীবানয় পালয়েহমধুনা পৌলস্ত্যমেবাগতম্ ।

এবং যোঽভয়মস্য সর্ববিদিতং লঙ্কাধিপত্যং দদা-

বার্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||২||

ভাবার্থ - একদা বিভীষণ দশানন কাছ থেকে তিরস্কৃত হয়ে শ্রীরামের শরণগ্রহণ করবেন, এইরূপ স্থির করে রামচন্দ্রের সন্ধানে উপস্থিত হলে সুগ্রীব রামচন্দ্রকে বললেন, শ্রীরাম, বিভীষণ নিতান্ত আর্ত ও ভীত হয়ে আপনার শরণগ্রহণমানসে এখানে সমাগত হয়েছে । একে রক্ষা করুন।” (তখন শ্রীরাম কইলেন) “সুগ্রীব, তুমি সেই পুলস্ত্যনন্দনকে আমার কাছে আনয়ন কর, আমি এখনই একে রক্ষা ব্যবস্থা করছি ।” এই প্রকারে রামচন্দ্র বিভীষণকে অভয়দানপূর্বক লঙ্কারাজ্যের আধিপত্য প্রদান যে করেছিলেন, তা সকলেই জ্ঞাত আছে। আর্তজনের রক্ষাকার্য্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||২||

নক্রগ্রস্তপদং সমুদ্যতকরং ব্রহ্মেশ দেবেশ মাং

পাহীতি প্রচুরার্তরাবকরিণং দেবেশ শক্তীশ চ ।

মা শোচেতি ররক্ষ নক্রবদনাঞ্চক্রশ্রিয়া তৎক্ষণাদ্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৩||

ভাবার্থ - গজকুম্ভীরের সংগ্রামকালে যখন কুম্ভীর গজরাজের পদে আক্রমণ করেছিল, তখন গজ অনন্যোপায় হয়ে শুণ্ড উত্তোলন করত বলেছিল, “হে ব্রহ্মেশ্‌, হে দেবেশ, হে শক্তীশ, হে দেব, হে ঈশ্বর, আমাকে পরিত্রাণ কর ।” ( গজরাজের এই আর্তনাদ শ্রবণ পূর্বক নারায়ণ উপস্থিত হয়ে বললেন, ) "করিবর, শোক করিও না ।” এই বলে, চক্রাস্ত্রপ্রভাবে কুম্ভীরের মুখ হতে গজরাজকে তৎক্ষণাৎ যিনি রক্ষা করেন, আর্তব্যক্তির রক্ষাকার্য্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারারণই আমার একমাত্র আশ্রয় ||৩||

হা কৃষ্ণাচ্যুত হা কৃপাজলনিধে হা পাণ্ডবানাং গতে

ক্বাসি ক্বাসি সুয়োধনাদবগতাং হা রক্ষ মাং দ্রৌপদীম্ ।

ইত্যুক্তোঽক্ষয়মস্ত্ররক্ষিততনুং যোঽরক্ষদাপদ্গণাদ্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৪||

ভাবার্থ - যখন দুর্যোধনের আজ্ঞাক্রমে দুঃশাসন, সভামধ্যে কৃষ্ণার বস্ত্রহরণ করতেছিল, তখন দ্রুপদকুমারী নিরুপায় ভেবে, “হা কৃষ্ণ, হা অচ্যুত, হা করুণাজলনিধে, হা পাণ্ডব গতে, তুমি কোথায় আছ, কোথায় আছ ? দুর্যোধন আমাকে অবমানিতা করছে, এই অনাথ দ্রৌপদীকে রক্ষা কর” বললে দ্রৌপদীর এই সকল কাতরোক্তি শ্রবণে যিনি অক্ষর বসন দ্বারা কষ্ণার তনুযষ্টি রক্ষিত করে বিপন্ন দ্রুপদনন্দিনীকে রক্ষা করেছিলেন, আর্তত্রাণপরায়ণ সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার গতি ||৪||

যৎপাদাব্জনখোদকং ত্রিজগতাং পাপৌঘবিধ্বসনং

যন্নামামৃতপূরণঞ্চ পিবতাং সন্তাপসংহারকম্ ।

পাষাণশ্চ যদঙ্ঘ্রিতো নিজবধূরূপং মুনেরাপ্তবান্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৫||

ভাবার্থ - যার চরণ-কমল-নখের জল ত্রিভুবনের পাপরাশি দূর করে, যার নামসুধা পান করলে নিখিল সন্তাপ বিদুরিত হয়, যার পাদস্পর্শে পাষাণও ( অহল্যা ) মুনিবধূরূপ মানবীতনু লাভ করেছিল; আর্তজনের রক্ষা- কার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||৫||

যন্নাম শ্রুতিমাত্রতোঽপরিমিতং সংসারবারাং নিধিং

ত্যক্ত্বা গচ্ছতি দুর্জনোঽপি পরমং বিষ্ণোঃ পদং শাশ্বতম্ ।

তন্নৈবাদ্ভুতকারণং ত্রিজগতাং নাথস্য দাসোস্ম্যহম্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৬||

ভাবার্থ - যার নাম শ্রবণ করলে দুর্জন লোক আশু অপার সংসারসাগর পার হয়ে নিত্যধাম বিষ্ণুর পরম-পদ লাভ করে, ( যিনি অদ্ভুত কার্য্য- সাধন করছেন ), আমি সেই অদ্ভূতকারণ জগৎপতি জনার্দনে দাস। আর্তজনের রক্ষাকার্য্যে তৎপর সেই ভগবান নারায়ণ আমার আশ্রয় ||৬||

পিত্রা ভ্রাতরমুত্তমাঙ্কগমিতং ভক্তোত্তমং যো ধ্রুবং

দৃষ্ট্বা তৎসমমারুরুক্ষুমুদিতং মাত্রাঽবমানং শতম্ ।

যোদাত্তং শরণাগতং তু তপসা হেমাদ্রিসিংহাসনং

হ্যার্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৭||

ভাবার্থ - একদা ধ্রুব স্বীয় পিতার ক্রোড়ে আরোহণ করবেন, এই বাসনায় জনক-সন্নিধানে গমন করেন, তখন পিতা ধ্রুবকে অবহেলা করে তার বৈমাত্রেয় ভ্রাতাকে অঙ্কোপরি তুলে লইলেন এবং ধ্রুবের বিমাতা তাকে নানারূপ তিরস্কার করেছিলেন । বালক ধ্রুব তাতে অবমানিত হয়ে কঠোর তপস্যা দ্বারা জনার্দনের আরাধনা করেন। জনার্দন তাতে প্রীত হয়ে ধ্রুবকে সুমেরুশিখরে সর্বোৎকৃষ্ট অক্ষরস্থান প্রদান করেন। আর্তজনের রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||৭||

নাধীত শ্রুতয়ো ন তত্ত্বমতয়ো ঘোষস্থিতা গোপিকা

জারিণ্যঃ কুলজাতিধর্মবিমুখা অধ্যাত্মভাবং যয়ুঃ ।

ভক্তির্যস্য দদাতি মুক্তিমতুলাং জারস্য যঃ সদ্গতি-

র্হ্যার্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৮||

ভাবার্থ - বেদাধ্যয়ন-বর্জিত ব্রজগোপিকারা শ্রীকৃষ্ণের পরমতত্ত্ব না জেনেও জাতিকুল-ধর্ম বিসর্জন পূর্বক যে জারভাবে সেবা করেছিল, তাতেই তারা অধ্যাত্মভাব লাভ করে। অতএব জারভাবেও যার প্রতি ভক্তি মুক্তি-দায়িনী এবং যিনি সজ্জনগণের একমাত্র গতি, আর্তজনের রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারারণই আমার আশ্রয় ||৮||

ক্ষুত্তৃষ্ণার্তসহস্রশিষ্যসহিতং দুর্বাসসং ক্ষোভিতং

দ্রৌপদ্যাভয় ভক্তিয়ুক্তমনসা শাকং স্বহস্তার্পিতম্ ।

ভুক্ত্বাঽতর্পয়দাত্মবৃত্তিমখিলামাবেদয়ন্ যঃ পুমান্

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||৯||

ভাবার্থ - ভয় ও ভক্তিযুক্ত হৃদয়ে দ্রৌপদীর স্বহস্তার্পিত শাক- কণিকামাত্র ভক্ষণ করে যিনি ক্ষুধা-তৃষার্ত বহু সহস্র শিষ্যসহ উপস্থিত কোপন-স্বভাব মহর্ষি দুর্বাসাকে ভোজন-তৃপ্তি প্রদান করত স্বীয় সর্বাত্মভাব জ্ঞাপন করেছিলেন, আর্তত্রাণপরায়ণ সেই ভগবান্‌ নারারণ আমার আশ্রয় ||৯||

যেনারাক্ষি রঘূত্তমেন জলধেস্তীরে দশাস্যানুজ-

স্ত্বায়াতং শরণং রঘূত্তম বিভো রক্ষাতুর মামিতি ।

পৌলস্ত্যেন নিরাকৃতোঽথ সদসি ভ্রাত্রা চ লঙ্কাপুরে

হ্যার্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১০||

ভাবার্থ - রাবণ স্বীয় কনিষ্ঠ সহোদর বিভীষণকে লঙ্কা-নগরীস্থ সভা হতে বিদূরিত করলে, বিভীষণ সাগরতীরে রঘুনাথের শরণগ্রহণ করে বলিলেন, “আমার ভ্রাতা আমাকে পরিত্যাগ করেছেন ), আমি বিপন্ন, আপনি আমাকে রক্ষা করুন।” রামরূপধারী যিনি তাকে রক্ষা করেছিলেন । আর্তজনের রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১০||

যেনাবাহি মহাহবে বসুমতী সংবর্তকালে মহা-

লীলাক্রোডবপুর্ধরেণ হরিণা নারায়ণেন স্বয়ম্ ।

যঃ পাপিদ্রুমসম্প্রবর্তমচিরাদ্ধত্ত্বা চ যোগাৎ প্রিয়াম্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১১||

ভাবার্থ - যখন বসুমতী প্রলয়পয়োধি-সলিলে নিমগ্ন হচ্ছিলেন, তখন জনার্দন লীলা-বরাহরূপ পরিগ্রহ করে ধরণীকে বহন করেছিলেন এবং অচিরে আক্রমণকারী পাপীগণকে সংহার করে প্রিয়া বসুমতীকে প্রাপ্ত হয়েছিলেন। আর্তব্যক্তির রুক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১১||

যোদ্ধাসৌ ভুবনত্রয়ে মধুপতির্ভর্তা নরাণাং বলে

রাধায়া অকরোদ্রতে রতিমনঃপূর্তিঃ সুরেন্দ্রানুজঃ ।

যো বা রক্ষতি দীনপাণ্ডুতনয়ান্নাথেতি ভীতিং গতান্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১২||

ভাবার্থ - যিনি ত্রিলোকীতলে অদ্বিতীয় যোদ্ধা, যিনি মধুপুরীর ঈশ্বর, যিনি সুরেন্দ্রের কনিষ্ঠ সহোদর, যিনি মানবগণের ভরণকর্তা ও বলরামের অনুরক্ত, যিনি রাধিকার রতি-বাসনা পরিপূর্ণ করেছেন এবং পাগুবগণ ভীত হয়ে শরণাগত হলে যিনি সেই দীনদশাপন্ন পাওুনন্দনদেরকে রক্ষা করেন, আর্ত ব্যক্তির রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১২||

যঃ সান্দীপনিদেশতশ্চ তনয়ং লোকান্তরাৎ সন্নতং

চানীয় প্রতিপাদ্য পুত্রমরণাদুজ্জৃম্ভমাণার্তয়ে ।

সন্তোষং জনয়ন্নমেয়মহিমা পুত্রার্থসম্পাদনাদ্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১৩||

ভাবার্থ - যিনি ( গুরু সান্দীপনির ) পরলোকগত পুত্রকে ( পরলোক হতে ) আনয়ন করে, পুত্রমরণ-শোকাচ্ছন্ন গুরু সান্দীপনির হস্তে প্রদান করত সস্তোষসাধন করেন, গুরুর কার্য্য সম্পাদন দ্বারা, অমিতমহিম সম্পন্ন আর্তত্রাণ পরায়ণ সেই ভগবান্‌ নারায়ণ আমার আশ্রয় ||১৩||

যন্নামস্মরণাদঘৌঘসহিতো বিপ্রঃ পুরাঽজামিলঃ

প্রাণান্মুক্তিমশেষিতামনু চ যঃ পাপৌঘদাবাতিয়ুক্ ।

সদ্যো ভাগবতোত্তমাত্মনি মতিং প্রাপাম্বরীষাভিধ-

শ্চার্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১৪||

ভাবার্থ - পুরাকালে দীবানলসদশ পাপরাশিজনিত-পীড়া-ভোগ-যোগ্য বিপ্র অজামিল অন্তিমকালে যার নাঁম স্মরণে সমস্ত পাপবর্জ্জিত হয়ে পরিণামে শাশ্বত মুক্তি প্রাপ্ত হয়েছিলেন, এবং অন্বরীষ, প্রধান ভগবদ্ভক্তস্বরূপ আত্মাকে সদ্যঃ জানতে পেরেছিলেন, আর্তব্যক্তির রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১৪||

যোঽরক্ষদ্বসনাদিনিত্যরহিতং বিপ্রং কুচৈলাভিধং

দৈন্যাদ্দীনজনৈকপালনপরঃ শ্রীশঙ্খচক্রোজ্জ্বলঃ ।

তজ্জীর্ণাম্বরমুষ্টিপাত্রপৃথুকানাদায় ভুক্ত্বা ক্ষণাদ্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১৫||

ভাবার্থ - দীনজনের একমাত্র পালক শ্রীশঙ্খচক্রোজ্জ্বল যে দেব, সদা বসনাদিশূন্য কুচেলনামক এক ব্রাহ্মণকে তার জীর্ণ বস্ত্রখণ্ড হতে এক মুষ্টি চিপি টুক গ্রহণ পূর্বক ভক্ষণ করে তৎক্ষণাৎ দারিদ্র্য হতে পরিত্রাণ করেছিলেন, আর্তব্যক্তির রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১৫||

যৎকল্যাণগুণাভিরামমমলং মন্ত্রানিশং শিক্ষতে

যস্মিন্ সৎ পততি প্রতিষ্ঠিতমিদং বিশ্বং বদত্যাগমঃ ।

যো যোগীন্দ্রমনঃসরোরুহতমঃপ্রধ্বংসকৃদ্ভানুমান্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১৬||

ভাবার্থ - যার নির্মল মঙ্গলময় গুণে রমণীয় শিক্ষা, মননশীল সাধক সতত করে থাকেন, এই বিশ্ব যাতে আবির্ভূত, প্রতিষ্ঠিত এবং লীন হয়, আগম একে বলেন, যিনি যোগিবৃন্দের মানসিক অজ্ঞানরূপ তিমির-সংহারে সাক্ষাৎ সূর্যস্বরূপ, আর্তজনের রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১৬||

কালিন্দীহৃদয়াভিরামপুলিনে পুণ্যে জগন্মঙ্গলে

চন্দ্রাম্ভোজবটে পুটে পরিসরে ধাত্রা সমারাধিতে ।

শ্রীরঙ্গে ভুজগেন্দ্রভোগশয়নে শেতে সদা যঃ পুমান্-

আর্তত্রাণপরায়ণঃ স ভগবান্নারায়ণো মে গতিঃ ||১৭||

ভাবার্থ - যে পরমপুরুষ অতিমনোহর সর্বকল্যাণকর পবিত্র যমুনা-পুলিন প্রদেশে কর্পুর শুভ্র-প্রলয়-সাগর জলজাত বটপত্রে বিধাতৃ-সমারাধিত পরি শ্রীরঙ্গক্ষেত্রে এবং অনন্তশয্যায় সদা শয়ান, আর্তজনের রক্ষাকার্যে নিরতচিত্ত সেই ভগবান্‌ নারায়ণই আমার আশ্রয় ||১৭||

বাৎসল্যাদভয়প্রদানসময়াদার্তার্তিনির্বাপণাদ্-

ঔদার্যাদঘশোষণাদগণিতশ্রেয়ঃ পদপ্রাপণাৎ ।

সেব্যঃ শ্রীপতিরেব সর্বজগতামেতে হি তৎসাক্ষিণঃ

প্রহ্লাদশ্চ বিভীষণশ্চ করিরাট্ পাঞ্চাল্যহল্যা ধ্রুবঃ ||১৮||

ভাবার্থ - বাৎসল্য, অভয়-দান, দুঃখ-নিবারণ, ঔদার্য, পাপধ্বংসন এবং অসীম-মঙ্গলপদ-প্রদানের জন্য শ্রীপতিই সর্ব্বজগতের সেব্য | প্রহলাদ, বিভীষণ, গজরাজ, দ্রৌপদী, অহল্যা এবং ধ্রুব ( যথাক্রমে বাৎসল্যাদির ) সাক্ষী । ( নারায়ণ প্রহ্লাদের প্রতি যে প্রকার বাৎসল্য প্রকাশ করেছিনেন, তা সকলেই অবগত আছে ; আর তিনি বিভীষণকে অভয়দান করেছিলেন ; গজরাজ যখন কুম্ভীরের সহিত সংগ্রামে আক্রান্ত হয়েছিল, আর্তত্রাণপরায়ণ নারায়ণ সেই সময়ে সেই গজরাজকে রক্ষা করেছিলেন, দ্রুপদনন্দিনীর প্রতি অসীম উদারতা প্রকাশ করেছিলেন। গৌতমপত্নী অহল্যা পতিশাপে পাষানী হয়েছিলেন, নারায়ণ তার অখিল পাপ বিনাশ করেন ও ধ্রুবের প্রতি করুণা করে তাকে অত্যুচ্চপদ প্রদান করেছিলেন ) ||১৮||

|| ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্যস্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ আর্তত্রাণপরায়ণ নারায়ণাষ্টাদশকং সম্পূর্ণম্ ||

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য শ্রীমদ্ শঙ্করাচার্য ভগবতঃ বিরচিত আর্তত্রাণপরায়ণ নারায়ণাষ্টাদশক স্তোত্র সমাপ্ত।

 

No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...