বেদান্তমতে পদার্থ দ্বিবিধ—দৃক্ এবং দৃশ্য। অন্যান্য বাদিগণের পরিকল্পিত পদার্থসমূহ এই দুই পদার্থেই অন্তর্ভাব হয়ে থাকে। তন্মধ্যে দৃক্ পদার্থ আত্মা, তা পারমার্থিক এবং এক। সর্বদা একরূপ হলেও ঔপাধিক ভেদে ত্রিবিধ হয়ে থাকেন, যথা—ঈশ্বর, জীব ও সাক্ষী। তন্মধ্যে কারণীভূত অজ্ঞান যাঁর উপাধি তিনিই ঈশ্বর।
তন্মধ্যে
ঈশ্বর স্বকীয় উপাধি অবিদ্যার সত্ত্ব রজঃ তমঃ এই
তিন গুণের ভেদবশতঃ বিষ্ণু, ব্রহ্মা ও রুদ্রভেদে ত্রিবিধ
হয়ে থাকেন। কারণীভূত সত্ত্বগুণরূপ উপাধি দ্বারা অবচ্ছিন্ন (উপাধি) ঈশ্বরচৈতন্য বিষ্ণু, তিনি পালনকর্তা। কারণীভূত
রজঃগুণ দ্বারা উপহিত ঈশ্বরচৈতন্য ব্রহ্মা, তিনি সৃষ্টিকর্তা। যদ্যপি
মহাভূতের কারণ না হওয়াতে
হিরণ্যগর্ভ ব্রহ্মা নন, তথাপি স্থূলভূতের
সৃষ্টিকর্তা হওয়াতে কোন কোন স্থলে
তাঁকে উপাচারবশতঃ ব্রহ্মা বলা হয়। কারণীভূত
তমোগুণ দ্বারা উপহিত ঈশ্বরচৈতন্য রুদ্র, ইনি সংহারকর্তা।
এরূপ
এক ঈশ্বরেরই চতুর্ভূজ, চতুর্মুখ এবং পঞ্চমুখ প্রভৃতি
পুরুষাকারভেদ এবং শ্রী, ভারতী,
ভবানী প্রভৃতি স্ত্রী আকার ভেদ হয়ে
থাকে। এতদ্ভিন্ন মৎস্য কূর্মাদি অনন্ত অবতারগণও লীলাবশতঃ ভক্তগণের অনুগ্রহের নিমিত্ত আবির্ভূত হয়ে থাকেন। রামপূর্বতাপনী
উপনিষদে বলা হয়েছে—
চিন্ময়স্যাদ্বিতীয়স্য
নিষ্কলস্যাশরীরিণঃ।
উপাসকানাং
কার্য্যার্থং ব্রহ্মণো রূপকল্পনা।।
-(রামপূর্বতাপনী উপনিষৎ
-১।৭)
অর্থাৎ
উপাসকগণের কার্যনিমিত্তই চৈতন্যস্বরূপ, অদ্বিতীয়, নিরবয়ব অশরীরী ব্রহ্মের রূপকল্পনা হয়ে থাকে।.....
তথ্যসূত্রঃ-
ভগবান্
শঙ্করাচার্যের নির্বাণদশকমের উপর পরমহংস পরিব্রাজকাচার্য
শ্রীমন্মধুসূদন সরস্বতীকৃত সিদ্ধান্তবিন্দু।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
জুলাই
৭, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment