Wednesday, 30 June 2021

অন্যবিধ অচ্যুতাষ্টকম্-

 


শঙ্করাচার্য বিরচিত অন্যবিধ অচ্যুতাষ্টকম্-

অচ্যুতং কেশবং রামনারায়ণং

কৃষ্ণদামোদরং বাসুদেবং হরিম্ ।

শ্রীধরং মাধবং গোপিকাবল্লভং

জানকীনায়কং রামচন্দ্রং ভজে ||১||

ভাবার্থ - (যিনি) অচ্যুত, কেশব, রাম, নারায়ণ, কৃষ্ণ, দামােদর, বাসুদেব হরি ; ( যিনি) শ্রীধর, মাধব, গােপিকাবল্লভ, জানকীনায়ক, শ্রীরামচন্দ্র ; ( তাকে ) ভজনা করি ||১||

অচ্যুতং কেশবং সত্যভামাধবং

মাধবং শ্রীধরং রাধিকারাধিতম্ ।

ইন্দিরামন্দিরং চেতসা সুন্দরং

দেবকীনন্দনং নন্দনং সন্দধে ||২||

ভাবার্থ - যিনি কখনই চ্যুত হয়ে না, যিনি ক (ব্ৰহ্মা), ঈশ (শিব) এবং ব (বায়ু-বরুণ-স্বরূপ), যিনি সত্যভামা-পতি, মধুবংশে যার জন্ম, অত্যন্ত ঐশ্বর্য্য যাতে বর্তমান, রাধিকা যাকে আরাধনা করেছেন, লক্ষ্মী-নিকেতন, সেই দেবকীগর্ভজাত সু্দর নন্দ-নন্দনকে হৃদয়ে মিলিত করি ||২||

বিষ্ণবে জিষ্ণবে শঙ্খিনে চক্রিণে

রুক্মিণিরাগিণে জানকীজানয়ে ।

বল্লবীবল্লভায়াঽর্চিতায়াত্মনে

কংসবিধ্বংসিনে বংশিনে তে নমঃ ||৩||

ভাবার্থ - ( যিনি) বিষ্ণু, জিষ্ণু, শঙ্খ-চক্র-ধারী, রুক্মিণীর অনুরক্ত, জানকীপতি, গােপীবল্পভ ; ( যিনি ) অর্চিত ( সর্বলোকপূজিত ), আত্মা ( পরমাত্মা ), সেই কংসবিধ্বংসী মুরলীধর তােমাকে নমস্কার ||৩||

কৃষ্ণ গোবিন্দ হে রাম নারায়ণ

শ্রীপতে বাসুদেবাজিত শ্রীনিধে ।

অচ্যুতানন্ত হে মাধবাধোক্ষজ

দ্বারকানায়ক দ্রৌপদীরক্ষক ||৪||

ভাবার্থ - হে কৃষ্ণ, গােবিন্দ, হে রাম-নারায়ণ, হে শ্রীপতে, বাসুদেব, হে অজিত, হে শ্রীনিধে, হে অচ্যুত, অনন্ত, মাধব, অধােক্ষজ, হে দ্বারকানায়ক, তুমিই দ্রৌপদীকে (কৌরব-সভায় লজ্জা হতে) রক্ষা করেছিলে ||৪||

রাক্ষসক্ষোভিতঃ সীতয়া শোভিতো 

দণ্ডকারণ্যভূপুণ্যতাকারণঃ ।

লক্ষ্মণেনান্বিতো বানরৈঃ সেবিতো

ঽগস্ত্যসম্পূজিতো রাঘবঃ পাতু মাম্ ||৫||

ভাবার্থ - যিনি রঘুবংশে জন্মগ্রহণ করে সীতাবিবাহের পর সীতা ও লক্ষ্মণসহ দণ্ডকারণ্যভূমিকে পবিত্র করেছিলেন, রাক্ষসকৃত ক্ষোভ প্রাপ্ত হয়ে বানরগণের সেবায় সীতাসহ শােভা প্রাপ্ত হয়েন, অগন্তা-সম্পূজিত তিনি আমাকে রক্ষা করুন ||৫||

ধেনুকারিষ্টকোহানিষ্টকৃদ্ দ্বেষিণাম্

কেশিহা কংসহৃদ্ বংশিকাবাদকঃ ।

পূতনাকোপকঃ সূরজাখেলনো

বালগোপালকঃ পাতু মাম্ সর্বদা ||৬||

ভাবার্থ - যিনি পূতনা-বৈরী, ধেনুক ও অরিষ্ট অসুরের হন্তা, যিনি কেশী দৈত্যকে হনন করেছেন, যিনি শত্রুগণের অনর্থসম্পাদনে দক্ষ, সেই যমুনাবিহারী বংশীবদন বালগােপাল সর্বদা আমাকে রক্ষা করুন ||৬||

বিদ্যুদ্যুদ্যোতবৎ প্রস্ফুরদ্ বাসসং

প্রাবৃড়ম্ভোদবৎপ্রোল্লসদ্ বিগ্রহম্ ।

বন্যয়া মালয়া শোভিতোরঃস্থলং

লোহিতাঙ্ঘ্রিদ্বয়ং বারিজাক্ষং ভজে ||৭||

ভাবার্থ - যার পরিধানবন্ত্র বিদ্যুৎপ্রকাশবৎ উজ্জল, যার শরীর বর্ষাকালীন অলধরের ন্যায় বিরাজমান, বন-মালা-শােভিত-বক্ষল অরুণ চরণ-যুগল সেই পুণ্ডরীকাক্ষকে ভজনা করি ||৭||

কুঞ্চিতৈঃ কুন্তলৈর্ভ্রাজমানাননং

রত্নমৌলিং লসৎকুণ্ডলং গণ্ডয়োঃ ।

হারকেয়ূরকং কঙ্কণপ্রোজ্জ্বলং

কিঙ্কিণীমঞ্জুলং শ্যামলং তং ভজে ||৮||

ভাবার্থ - কুঞ্চিত কুন্তলজালে যার মুখমণ্ডল শােভাসম্পন্ন, যার রত্নময় কিরীট ও গণ্ডযুগলে কুণ্ডল দোদুল্যমান, (যিনি) হার ও কেয়ূর ধারণে ( ভক্তগণের ) সুখ-সম্পাদক, কঙ্কণে ভূষিত কিঙ্কিণী-শােভিত সেই শ্যামকে ভজনা করি ||৮||

অচ্যুতস্যাষ্টকং যঃ পঠেদিষ্টদং

প্রেমতঃ প্রত্যহং পূরুষঃ সস্পৃহম্ ।

বৃত্ততঃ সুন্দরং কর্তৃ বিশ্বম্ভরস্তস্য

বশ্যো হরির্জায়তে সত্বরম্ ||৯||

ভাবার্থ - সুললিত বৃত্তে নিবন্ধ জগদীশ্বরবােধক অভীষ্টপ্রদ এই অচ্যুতাষ্টক যে পুরুষ প্রত্যহ প্রেম পূর্ব্বক সাগ্রহে পাঠ করিবে, হরি তার সন্বর বশীভূত হবেন ||৯||

॥ ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ অন্যবিধ অচ্যুতাষ্টকম সম্পূর্ণম্ ॥

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ বিরচিত অন্যবিধ অচ্যুতাষ্টকম স্তোত্র সমাপ্ত।

 

দেবীচতুঃষষ্ট্যুপচারপূজাস্তোত্রম্

 


উষসি মাগধমঙ্গলগায়নৈ–

র্ঝটিতি জাগৃহি জাগৃহি জাগৃহি ।

অতিকৃপার্দ্রকটাক্ষনিরীক্ষণৈ–

র্জগদিদং জগদম্ব সুখী কুরু ||১||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! প্রত্যুষে ( ঊষাকালে ) স্তুতি পাঠকগণের মঙ্গলগান দ্বারা শীঘ্র জাগো, জাগো, জাগো ( এবং ) এই জগৎকে অতি কৃপা দ্বারা আর্দ্রকটাক্ষে নিরীক্ষণ দ্বারা সুখী করো ||১||

কনকময়বিতর্দিশোভমানং

দিশি দিশি পূর্ণসুবর্ণকুম্ভয়ুক্তম্ ।

মণিময়মণ্টপমধ্যমেহি মাতঃ

ময়ি কৃপয়াশু সমর্চনং গ্রহীতুম্ ||২||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! আমার প্রতি কৃপাপূর্বক পূজা গ্রহণ করবার জন্য সুবর্ণময় বেদিকা শোভিত প্রতি দিকে ( দশদিকে ) পূর্ণ স্বর্ণকুম্ভযুক্ত মণিময় মণ্ডপের মধ্যভাগে শীঘ্র আগমন করো ||২||

কনককলশশোভমানশীর্ষং

জলধরলম্বি সমুল্লসৎপতাকম্ ।

ভগবতি তব সন্নিবাসহেতোঃ

মণিময়মন্দিরমেতদর্পয়ামি ||৩||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! ( আমি ) তোমার নিবাসের জন্য এই স্বর্ণকলস দ্বারা শোভিত শীর্ষ জলধরলম্বি অর্থাৎ মেঘ পর্যন্ত উচ্ছিত পতাকা-শোভিত মণিময় মন্দির অর্পণ করতেছি ( গ্রহণ করো ) ||৩||

তপনীয়ময়ী সুতূলিকা

কমনীয়া মৃদুলোত্তরচ্ছদা ।

নবরত্নবিভূষিতা ময়া

শিবিকেয়ং জগদম্ব তেঽর্পিতা ||৪||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! আমার দ্বারা স্বর্ণময়ী, উত্তম তূলিকাযুক্ত ( অর্থাৎ গদীযুক্ত ) সুন্দর, মৃদু আস্তরন বস্ত্রযুক্ত ( বিছানার চাদরবিশিষ্ট ) নবরত্ন শোভিত এই শিবিকা ( পাল্কী ) তোমাকে অর্পিত করলাম ||৪||

কনকময়বিতর্দিস্থাপিতে তূলিকাঢ্যে

বিবিধকুসুমকীর্ণে কোটিবালার্কবর্ণে ।

ভগবতি রমণীয়ে রত্নসিংহাসনেঽস্মিন্

উপবিশ পদয়ুগ্মং হেমপীঠে নিধায় ||৫||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! পাদযুগল স্বর্ণনির্মিত পাদপীঠে স্থাপন করে স্বর্ণময় বেদিকায় স্থাপিত, তূলিকাযুক্ত ( অর্থাৎ গদীযুক্ত ) বিবিধ কুসুমাকীর্ণ, কোটি বালসূর্য্যসদৃশ বর্ণযুক্ত ( অর্থাৎ প্রাতঃকালীন উদয়োন্মুখ সূর্য্যবৎ রক্তবর্ণ ) মনোহর এই রত্নসিংহাসনে উপবেশন করো ||৫||

মণিমৌক্তিকনির্মিতং মহান্তং

কনকস্তম্ভচতুষ্টয়েন যুক্তম্ ।

কমনীয়তমং ভবানি তুভ্যং

নবমুল্লোচমহং সমর্পয়ামি ||৬||

ভাবার্থ - হে ভবানী, ( সম্বোধন ) আমি তোমাকে মণি ও মুক্তানির্মিত বিশাল, চারটি স্বর্ণ স্তম্ভযুক্ত সুন্দরতম নতুন চন্দ্রাতপ সমর্পণ করতেছি ||৬||

দূর্বয়া সরসিজান্বিতবিষ্ণু-

ক্রান্তয়া চ সহিতং কুসুমাঢ্যম্ ।

পদ্ময়ুগ্মসদৃশে পদয়ুগ্মে

পাদ্যমেতদুররীকুরু মাতঃ ||৭||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! ( তোমার ) পদ্মযুগল সদৃশ পদযুগলে এই দুর্বা, কমল ও অপরাজিতা পুষ্প সহিত এবং ( অন্য ) কুসুমযুক্ত পাদ্য ( অর্পিত হলো ) স্বীকার করো ||৭||

গন্ধপুষ্পয়বসর্ষপদূর্বা-

সংয়ুতং তিলকুশাক্ষতমিশ্রম্ ।

হেমপাত্রনিহিতং সহ রত্নৈঃ

র্রঘ্যমেতদুররীকুরু মাতঃ ||৮||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! এই গন্ধপুষ্প, যব, সর্ষপ, দূর্বা সংযুক্ত, তিল, কুশ, আতপ চাল মিশ্রিত, রত্নসহ স্বর্ণপাত্রে রক্ষিত অর্ঘ্য স্বীকার করো ||৮||

জলজদ্যুতিনা করেণ জাতী-

ফলতক্কোললবঙ্গগন্ধয়ুক্তৈঃ ।

অমৃতৈরমৃতৈরিবাতিশীতৈঃ

ভগবত্যাচমনং বিধীয়তাম্ ||৯||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! পদ্মসদৃশ হস্তদ্বারা জায়ফল, কাঁকলা নামক সুগন্ধদ্রব্য ও লবঙ্গের সুগন্ধযুক্ত অতি শীতল অমৃতবৎ জল দ্বারা আচমন করো ||৯||

নিহিতং কনকস্য সম্পুটে

পিহিতং রত্নপিধানকেন যৎ ।

তদিদং জগদম্ব তেঽর্পিতং

মধুপর্কং জননি প্রগৃহ্যতাম্ ||১০||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! এই স্বর্ণ-( নির্মিত ) পাত্রে রক্ষিত, রত্ন ( নির্মিত ) আবরণ দ্বারা আবৃত মধুপর্ক তোমাকে অর্পিত করা হলো, মাতঃ! গ্রহণ করো ||১০||

এতচ্চম্পকতৈলমম্ব বিবিধৈঃ পুষ্পৈঃ মুহুর্বাসিতং

ন্যস্তং রত্নময়ে সুবর্ণচষকে ভৃঙ্গৈঃ ভ্রমদ্ভিঃ বৃতম্ ।

সানন্দং সুরসুন্দরীভিরভিতো হস্তৈঃ ধৃতং তে ময়া

কেশেষু ভ্রমরভ্রমেষু সকলেষ্বঙ্গেষু চালিপ্যতে ||১১||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! আমার কর্তৃক এই নানা প্রকার পুষ্পদ্বারা বারংবার সুবাসিত, রত্নময় সুবর্ণপাত্রে রক্ষিত, ভ্রমণকারী ভৃঙ্গ দ্বারা সমাবৃত, ( অর্থাৎ সুগন্ধ দ্বারা আকৃষ্ট ভ্রমরবৃন্দ যার চতুর্দিকে উড়তেছে ) চতুর্দিকে দেবস্ত্রীগণ কর্তৃক হস্ত দ্বারা আনন্দের সহিত ধৃত, চম্পকতৈল তোমার ভ্রমর ভ্রমোৎপাদনকারী ( অর্থাৎ ভ্রমর-কৃষ্ণ ) কেশে এবং সকল অঙ্গে লিপ্ত হচ্ছে ||১১||

মাতঃ কুঙ্কুমপঙ্কনির্মিতমিদং দেহে তবোদ্বর্তনং

ভক্ত্যাহং কলয়ামি হেমরজসা সংমিশ্রিতং কেসরৈঃ ।

কেশানামলকৈঃ বিশোধ্য বিশদান্ কস্তূরিকোদঞ্চিতৈঃ

স্নানং তে নবরত্নকুম্ভসহিতৈঃ সংবাসিতোষ্ণোদকৈঃ ||১২||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! আমি ভক্তিভাবে তোমার দেহে স্বর্ণচূর্ণ কেশর ( নাগকেশর ) যুক্ত ও কুঙ্কুমপঙ্ক নির্মিত বিলেপন, কস্তূরিকা মিশ্রিত জলযুক্ত আমলকী দ্বারা তোমার স্নান কল্পনা করেছি ||১২||

দধিদুগ্ধঘৃতৈঃ সমাক্ষিকৈঃ

সিতয়া শর্করয়া সমন্বিতৈঃ ।

স্নাপয়ামি তবাহমাদরাৎ

জননি ত্বাং পুনরুষ্ণবারিভিঃ ||১৩||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! আমি দধি, দুগ্ধ, ঘৃত যুক্ত, মধুসহিত শুভ্র শর্করা সমন্বিত উষ্ণ জল দ্বারা পুনরায় তোমাকে শ্রদ্ধাভরে স্নান করিয়েছি ||১৩||

এলোশীরসুবাসিতৈঃ সকুসুমৈর্গঙ্গাদি তীর্থোদকৈঃ

মাণিক্যামলমৌক্তিকামৃতরসৈঃ স্বচ্ছৈঃ সুবর্ণোদকৈঃ ।

মন্ত্রান্ বৈদিকতান্ত্রিকান্ পরিপঠন্ সানন্দমত্যাদরাৎ

স্নানং তে পরিকল্পয়ামি জননি স্নেহাত্ত্বমঙ্গীকুরু ||১৪||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! অতিশয় আদর বশতঃ এলাচ ও বেনার মূল দ্বারা সুবাসিত মানিক্যবৎ নির্মল ও মুক্তার ন্যায় অমৃত রসস্বরূপ, স্বচ্ছ, সুন্দর বর্ণযুক্ত জল ও কুসুমযুক্ত গঙ্গাদি তীর্থবারি দ্বারা বৈদিক ও তন্ত্রোক্ত মন্ত্র পাঠ করতে করতে স্নান কল্পনা করতেছি; তুমি ( আমার প্রতি ) স্নেহ বশতঃ স্বীকার করো ||১৪||

বালার্কদ্যুতি দাডিমীয়কুসুমপ্রস্পর্ধি সর্বোত্তমং

মাতস্ত্বং পরিধেহি দিব্যবসনং ভক্ত্যা ময়া কল্পিতম্ ।

মুক্তাভিঃ গ্রথিতং সুকঞ্চুকমিদং স্বীকৃত্য পীতপ্রভং

তপ্তস্বর্ণসমানবর্ণমতুলং প্রাবর্ণমঙ্গীকুরু ||১৫||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! মৎকর্তৃক ভক্তিভাবে কল্পিত উদয়োন্মুখ সূর্য্যসদৃশ ভাস্বর দাড়িম্ব পুষ্পের সহিত বিলক্ষণ স্পর্দ্ধাসম্পন্ন ( রক্তবর্ণ ) সর্বোত্তম দিব্যবস্ত্র তুমি পরিধান করো । পীতবর্ণ প্রভাবিশিষ্ট মুক্তাখচিত এই সুন্দর কাঁচুলি গ্রহণ করে তপ্তকাঞ্চনসম বর্ণ বিশিষ্ট অতুলনীয় উত্তরীয় বস্ত্র স্বীকার করো ||১৫||

নবরত্নময়ে ময়ার্পিতে

কমনীয়ে তপনীয়পাদুকে ।

সবিলাসমিদং পদদ্বয়ং

কৃপয়া দেবি তয়োর্নিধীয়তাম্ ||১৬||

ভাবার্থ - হে দেবী ! নবরত্ন খচিত মনোহর সুবর্ণ নির্মিত পাদুকা মৎকর্তৃক অর্পিত হয়েছে, তাতে ( পাদুকাতে তোমার ) এই বিলাসযুক্ত পদযুগল কৃপাপূর্বক স্থাপন করো ||১৬||

বহুভিরগরুধূপৈঃ সাদরং ধূপয়িত্বা

ভগবতি তব কেশান্ কঙ্কতৈর্মার্জয়িত্বা ।

সুরভিভিররবিন্দৈশ্চম্পকৈশ্চার্চয়িত্বা

ঝটিতি কনকসূত্রৈর্জূটয়ন্বেষ্টয়ামি ||১৭||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! তোমার কেশপাশ বহু প্রকার অগুরু ধূপ দ্বারা ধূপিত করে চিরুনি দ্বারা আঁচড়িয়ে সুগন্ধ পদ্ম ও চম্পক পুষ্পদ্বারা সজ্জিত করে স্বর্ণসূত্র দ্বারা শীঘ্র বন্ধন পূর্বক আদরের সহিত বেষ্টন করতেছি ||১৭||

সৌবীরাঞ্জনমিদমম্ব চক্ষুষোস্তে

বিন্যস্তং কনকশলাকয়া ময়া যৎ ।

তন্নুনং মলিনমপি ত্বদক্ষিসঙ্গাৎ

ব্রহ্মেন্দ্রাদ্যভিলষণীয়তামিয়ায় ||১৮||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! মৎকর্তৃক স্বর্ণশলাকা দ্বারা যে সৌবীরাঞ্জন ( সুর্মা ) তোমার চক্ষুর্দ্বয়ে বিন্যস্ত হয়েছে, নিশ্চয়ই মলিন ( কৃষ্ণবর্ণ ) হওয়া সত্বেও ও তোমার চক্ষুর সম্বন্ধ বশতঃ ব্রহ্মা ও ইন্দ্রাদির অভিলাষের বস্তু হয়েছে ||১৮||

মঞ্জীরে পদয়োর্নিধায় রুচিরাং বিন্যস্য কাঞ্চীং কটৌ

মুক্তাহারমুরোজয়োরনুপমাং নক্ষত্রমালাং গলে ।

কেয়ূরাণি ভুজেষু রত্নবলয়শ্রেণীং করেষু ক্রমাৎ

তাটঙ্কে তব কর্ণয়োর্বিনিদধে শীর্ষে চ চূড়ামণিম্ ||১৯||

ভাবার্থ - তোমার পদদ্বয়ে নূপুর স্থাপন করে কটিতে মনোহর কাঞ্চী ( চন্দ্রহার ) বিন্যাস করে, স্তনদ্বয়ের মধ্যে অনুপম মুক্তাহার, গলদেশে ২৭টি মুক্তা নির্মিত হার , বাহুতে কেয়ূর, করে ( মণিবন্ধে ) রত্ন বলয়সমূহ, কর্ণদ্বয়ে তাটঙ্ক নামক কর্ণভূষণ, মস্তকে চূড়ামণি বিন্যাস করতেছি ||১৯||

ধম্মিল্লে তব দেবি হেমকুসুমান্যাধায় ফালস্থলে

মুক্তারাজিবিরাজমানতিলকং নাসাপুটে মৌক্তিকম্ ।

মাতর্মৌক্তিকজালিকাং চ কুচয়োঃ সর্বাঙ্গুলীষূর্মিকাঃ

কট্যাং কাঞ্চনকিঙ্কিণীর্বিনিদধে রত্নাবতংসং শ্রুতৌ||২০||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তোমার করবীতে ( চুলের খোঁপায় ) স্বর্ণপুষ্প সকল, ললাটদেশে মুক্তাসমূহ শোভিত তিলক ( টিপ ), নাসাপুটে মুক্তা স্থাপন করে হে মাতঃ ! স্তনদ্বয়ে মুক্তানির্মিত জাল, সমস্ত অঙ্গুলীতে অঙ্গুরী ( আংটি ), কটিদেশে স্বর্ণনির্মিত ক্ষুদ্র ঘন্টিকা ( কটিভূষণ ), কর্ণে রক্তবর্ণ অবতংস নামক কর্ণভূষণ বিন্যাস করতেছি ||২০||

মাতঃ ফালতলে তবাতিবিমলে কাশ্মীরকস্তূরিকা-

কর্পূরাগরুভিঃ করোমি তিলকং দেহেঽঙ্গরাগং ততঃ ।

বক্ষোজাদিষু যক্ষকর্দমরসং সিক্ত্বা চ পুষ্পদ্রবং

পাদৌ চন্দনলেপনাদিভিরহং সম্পূজয়ামি ক্রমাৎ ||২১||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! তোমার অত্যন্ত নির্মল ললাটতলে কুঙ্কুম, কস্তুরী, কর্পূর, অগুরু দ্বারা তিলক করে, অনন্তর দেহে অঙ্গরাগ করতেছি। স্তনাদিতে যক্ষকর্দম রস ( অগুরু, কুঙ্কুম, কস্তুরী, কর্পূর ও চন্দন মিশ্রিত পদার্থ ) ও পুষ্পরস সেচন করে ক্রমে পাদদ্বয়কে চন্দন লেপনাদি দ্বারা আমি পূজা করতেছি ||২১||

রত্নাক্ষতৈস্ত্বাং পরিপূজয়ামি

মুক্তাফলৈর্বা রুচিরৈরবিদ্ধৈঃ ।

অখণ্ডিতৈর্দেবি যবাদিভির্বা

কাশ্মীরপঙ্কাঙ্কিততণ্ডুলৈর্বা ||২২||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তোমাকে রক্তাক্ষত দ্বারা, অচ্ছিদ্র মনোহর মুক্তার দ্বারা, অখণ্ড যব দ্বারা ও কুঙ্কুমপঙ্ক লিপ্ত তণ্ডুল দ্বারা পূজা করতেছি||২২||

জননি চম্পকতৈলমিদং পুরো

মৃগমদোপয়ুতং পটবাসকম্ ।

সুরভিগন্ধমিদং চ চতুঃসমং

সপদি সর্বমিদং পরিগৃহ্যতাম্ ||২৩||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! ( তোমার ) সম্মুখস্থিত এই চম্পকতৈল, কস্তূরিকাবাসিত বস্ত্র, চন্দন, অগুরু, কস্তূরী ও কুঙ্কুম সমভাগে মিশ্রণে প্রস্তুত এই যে সুগন্ধ এই সকল শীঘ্র গ্রহণ করো ||২৩||

সীমন্তে তে ভগবতি ময়া সাদরং ন্যস্তমেতৎ

সিন্দূরং মে হৃদয়কমলে হর্ষবর্ষং তনোতি ।

বালাদিত্যদ্যুতিরিব সদা লোহিতা যস্য কান্তী-

রন্তর্ধ্বান্তং হরতি সকলং চেতসা চিন্তয়ৈব ||২৪||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! মৎকর্তৃক তোমার সীমন্তে ( সিঁথিতে ) সাদরে ন্যস্ত সিঁন্দুর আমার হৃদয়কমলে হর্ষের বর্ষণ উৎপাদন করে ( বিস্তার করে ) । যার উদীয়মান সূর্য্যের ন্যায় সর্বদা রক্তবর্ণ কান্তি চিত্তে চিন্তা দ্বারাই সমস্ত অন্তরধ্বান্ত ( অন্ধকার ) ( মোহাদি ) হরণ করে ||২৪||

মন্দারকুন্দকরবীরলবঙ্গপুষ্পৈঃ

ত্বাং দেবি সন্ততং অহং পরিপূজয়ামি ।

জাতীজপাবকুলচম্পককেতকাদি-

নানাবিধানি কুসুমানি চ তেঽর্পয়ামি ||২৫||

ভাবার্থ - হে দেবী ! আমি মন্দার, কুন্দ, করবী, লবঙ্গপুষ্প প্রভৃতি দ্বারা তোমাকে নিরন্তর পূজা করতেছি । তোমাকে মালতী, জবা, বকুল, চম্পক, কেতকী প্রভৃতি নানা প্রকার পুষ্প অর্পণ করতেছি ||২৫||

মালতীবকুলহেমপুষ্পিকা কাঞ্চনারকরবীরকৈতকৈঃ ।

কর্ণিকারগিরিকর্ণিকাদিভিঃ পূজয়ামি জগদম্ব তে বপুঃ ||২৬||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! তোমার শরীরকে ( আমি ) মালতী, বকুল, অশোক, কাঞ্চন, করবীর, কেতকী, কর্ণিকার, অপরাজিতা প্রভৃতি পুষ্প দ্বারা পূজা করতেছি ||২৬||

পারিজাতশতপত্রপাটলৈঃ মল্লিকাবকুলচম্পকাদিভিঃ ।

অম্বুজৈঃ সুকুসুমৈশ্চ সাদরং পূজয়ামি জগদম্ব তে বপুঃ ||২৭||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! তোমার শরীর কে পারিজাত, পদ্ম, পাটল, মল্লিকা, বকুল, চম্পক প্রভৃতি পুষ্প দ্বারা ও জলজ সুন্দর কুসুম দ্বারা আদরের সহিত পূজা করতেছি ||২৭||

লাক্ষাসংমিলিতৈঃ সিতাভ্রসহিতৈঃ শ্রীবাসসংমিশ্রিতৈঃ

কর্পূরাকলিতৈঃ শিরৈর্মধুয়ুতৈর্গোসর্পিষা লোড়িতৈঃ ।

শ্রীখণ্ডাগরুগুগ্গুলুপ্রভৃতিভির্নানাবিধৈর্বস্তুভিঃ

ধূপং তে পরিকল্পয়ামি জননি স্নেহাত্ত্বমঙ্গীকুরু ||২৮||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! লাক্ষারস সম্মিলিত, কর্পূরসহ শ্রীবাস ( ধূনা ) সংমিশ্রিত, কর্পূর দ্বারা সুগন্ধিত, গোঘৃত দ্বারা আলোড়িত, মধুযুক্ত পিপুলমূল, চন্দন, অগুরু, গুগ্গুল প্রভৃতি নানাবিধ বস্তু দ্বারা তোমার জন্য ধূপ কল্পনা করেছি, তুমি স্নেহ বশতঃ স্বীকার করো ||২৮||

রত্নালঙ্কৃতহেমপাত্রনিহিতৈর্গোসর্পিষা লোড়িতৈঃ

দীপৈর্দীর্ঘতরান্ধকারভিদুরৈর্বালার্ককোটিপ্রভৈঃ ।

আতাম্রজ্বলদুজ্জ্বলপ্রবিলসৎরত্নপ্রদীপৈস্তথা

মাতস্ত্বামহমাদরাদনুদিনং নীরাজয়াম্যুচ্চকৈঃ ||২৯||

ভাবার্থ - হে জননী ! আমি প্রতিদিন তোমাকে আদর পূর্বক রত্নালঙ্কৃত স্বর্ণপাত্রে স্থিত গব্যঘৃত যুক্ত দীর্ঘতর অন্ধকার ভেদ করতে সমর্থ কোটি উদীয়মান সূর্য্যপ্রভ দ্বীপ দ্বারা, তথা ঈষৎ তাম্রবর্ণ শিখা যুক্ত উজ্জ্বল শোভমান রত্নদীপ দ্বারা প্রচুর আরত্রিক করতেছি ||২৯||

মাতস্ত্বাং দধিদুগ্ধপায়সমহাশাল্যন্নসন্তানিকাঃ

সূপাপূপসিতাঘৃতৈঃ সবটকৈঃ সক্ষৌদ্ররম্ভাফলৈঃ ।

এলাজীরকহিঙ্গুনাগরনিশাকুস্তুম্ভরীসংস্কৃতৈঃ

শাকৈঃ সাকমহং সুধাধিকরসৈঃ সন্তর্পয়াম্যর্চয়ন্ ||৩০||

ভাবার্থ - হে জননী ! আমি তোমাকে বটক ( বড়া ) সহ দধি, দুগ্ধ, পায়েস, মহাশাল্যন্ন ও সর, সূপ, পিষ্টক, শর্করা ও ঘৃত, মধু সহ কদলী ফল, এলাচ, জিরা, হিঙ্গু, শুঁঠ, হরিদ্রা দ্বারা সংস্কৃত অমৃত হতে অধিক রসযুক্ত শাক দ্বারা অর্চনা করে তৃপ্ত করতেছি ||৩০||

সাপূপসূপদধিদুগ্ধসিতাঘৃতানি

সুস্বাদুভক্তপরমান্নপুরঃসরাণি ।

শাকোল্লসন্মরিচিজীরকবাহ্নিকানি

ভক্ষ্যাণি ভুঙ্ক্ষ্ব জগদম্ব ময়ার্পিতানি ||৩১||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! মৎকর্তৃক অর্পিত পিষ্টক, সূপ, দধি, দুগ্ধ, শর্করা, ঘৃত সহিত সুস্বাদু ভক্ত ( ভাত ) পরমান্ন প্রভৃতি, মরিচ, জিরা ও হিঙ্গু শোভিত শাক প্রভৃতি ভক্ষদ্রব্য ভোজন করো ||৩১||

ক্ষীরমেতদিদংমুত্তমোত্তমং

প্রাজ্যমাজ্যমিদমুজ্জ্বলং মধু ।

মাতরেতদমৃতোপমং পয়ঃ

সম্ভ্রমেণ পরিপীয়তাং মুহুঃ ||৩২||

ভাবার্থ - হে মাতঃ, এই সর্বোত্তম ক্ষীর (দুগ্ধ), এই উৎকৃষ্ট ঘৃত, এই উজ্জ্বল মধু, এই অমৃততুল্য জল আনন্দের সহিত বারংবার পান করো ||৩২||

উষ্ণোদকৈঃ পাণিয়ুগং মুখং চ

প্রক্ষাল্য মাতঃ কলধৌতপাত্রে ।

কর্পূরমিশ্রেণ সকুঙ্কুমেন

হস্তৌ সমুদ্বর্তয় চন্দনেন ||৩৩||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! স্বর্ণপাত্রে উষ্ণ জলদ্বারা পাণিযুগল ও মুখ প্রক্ষালনপূর্ব্বক কপরমিশ্রিত, কুঙ্কুমযুক্ত চন্দনদ্বারা হস্তদ্বয় বিলেপন করো ||৩৩||

অতিশীতমুশীরবাসিতং

তপনীয়ে কলশে নিবেশিতম্ ।

পটপূতমিদং জিতামৃতং

শুচি গঙ্গাজলমম্ব পীয়তাম্ ॥৩৪||

ভাবার্থ -হে মাতঃ ! অতিশীতল, বেনামূল দ্বারা সুবাসিত, স্বর্ণকলসে রক্ষিত, (কাপড়ছাঁকা) অমৃতজয়ী, এই পবিত্র গঙ্গাজল পান করো ||৩৪||

জম্ব্বাম্ররম্ভাফলসংয়ুতানি

দ্রাক্ষাফলক্ষৌদ্রসমন্বিতানি ।

সনারিকেলানি সদাড়িমানি

ফলানি তে দেবি সমর্পয়ামি ||৩৫||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তােমাকে জম্বু, আম্র, রম্ভা ফলসংযুক্ত, দ্রাক্ষাফল ও মধুযুক্ত, নারিকেল সহিত, দাড়িম্বফলযুক্ত ফল সকল সমর্পণ করতেছি ||৩৫||

কূশ্মাণ্ডকোশাতকিসংয়ুতানি

জম্বীরনারঙ্গসমন্বিতানি ।

সবীজপূরাণি সবাদরাণি

ফলানি তে দেবি সমর্পয়ামি ||৩৬||

ভাবার্থ -হে দেবী ! তােমাকে কুম্মাণ্ড ও ঝিঙ্গাযুক্ত, জম্বীর, নারঙ্গ (এক প্রকার কমলা লেবুজাতীয় ফল) সমন্বিত, বীজপুর (একপ্রকার লেবু) সহ, দাড়িম্বদল যুক্ত ফলসমূহ সমর্পণ করতেছি ||৩৬||

কর্পূরেণ যুতৈর্লবঙ্গসহিতৈস্তক্কোলচূর্ণান্বিতৈঃ

সুস্বাদুক্রমুকৈঃ সগৌরখদিরৈঃ সুস্নিগ্ধজাতীফলৈঃ ।

মাতঃ কৈতকপত্রপাণ্ডুরুচিভিস্তাম্বূলবল্লীদলৈঃ

সানন্দং মুখমণ্ডনার্থমতুলং তাম্বূলমঙ্গীকুরু ||৩৭||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! মুখশােভার জন্য কর্পূরযুক্ত লবঙ্গযুক্ত, কক্কোল নামক গন্ধদ্রব্যচূর্ণ যুক্ত,সুস্বাদু সুপারী যুক্ত, বিশুদ্ধ খদির যুক্ত, সুম্নিদ্ধ জাতীফল (জায়ফল) যুক্ত, কেতকী পত্রবৎ পাণ্ডুবর্ণ, তাম্বূল লতার পত্র দ্বারা (রচিত) অতুলনীয় তাম্বূল স্বীকার (গ্রহণ) কর ||৩৭||

এলালবঙ্গাদিসমন্বিতানি

তক্কোলকর্পূরবিমিশ্রিতানি ।

তাম্বূলবল্লীদলসংয়ুতানি

পূগানি তে দেবি সমর্পয়ামি ||৩৮||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তােমাকে এলালবঙ্গাদিসমন্বিত কক্কোল কর্পূর মিশ্রিত তাম্বুল লতার পত্র সংযুক্ত সুপারী সমর্পণ করতেছি ||৩৮||

তাম্বূলনির্জিতসুতপ্তসুবর্ণবর্ণং

স্বর্ণাক্তপূগফলমৌক্তিকচূর্ণয়ুক্তম্ ।

সৌবর্ণপাত্রনিহিতং খদিরেন সার্ধং

তাম্বূলমম্ব বদনাম্বুরুহে গৃহাণ ||৩৯||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! তাম্বূল (পান-লতার পত্র) দ্বারা পরাজিত, গলিত সুবর্ণের বর্ণ যুক্ত, স্বর্ণযুক্ত (সােনার পাত 'তবক' যুক্ত) সুপারী ও মুক্তাচূর্ণযুক্ত (চূণের স্থলে মুক্তার ভস্ম ব্যবহৃত হয়) সুবর্ণপাত্রস্থিত খদির (খয়ের) সহ তাম্বল মুখকমলে গ্রহণ কর ||৩৯||

মহতি কনকপাত্রে স্থাপয়িত্বা বিশালান্

ডমরুসদৃশরূপান্বদ্ধগোধূমদীপান্ ।

বহুঘৃতমথ তেষু ন্যস্য দীপান্ প্রকৃষ্টান্

ভুবনজননি কুর্বে নিত্যমারার্তিকং তে ||৪০||

ভাবার্থ - হে ভুবনজননি! বিশাল স্বর্ণপাত্রে বিশাল ডমরু সদৃশ আকৃতিবিশিষ্ট গােধূমবর্ণ দীপশিখা বিশিষ্ট উৎকৃষ্ট দীপসকল স্থাপন করে অনন্তর সেগুলিতে বহু ঘৃত দিয়ে সর্ব্বদা তােমার আরত্রিক করতেছি ||৪০||

সবিনয়মথ দত্বা জানুয়ুগ্মং ধরণ্যাং

সপদি শিরসি ধৃত্বা পাত্রমারার্তিকস্য ।

মুখকমলসমীপে তেঽম্ব সার্ধং ত্রিবারং

ভ্রময়তি ময়ি ভূয়াত্তে কৃপার্দ্রঃ কটাক্ষঃ ||৪১||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! অনন্তর জানুযুগলকে ভূমিতে রেখে শীঘ্র আরত্রিকপাত্র মস্তকে বিনয়ের সহিত ধারণ করে তােমার মুখপদ্মের নিকটে সার্দ্ধ তিনবার ভ্রমণ করতেছি যে, সেই আমাতে তােমার কৃপার্দ্র কটাক্ষপাত হোক ||৪১||

অথ বহুমণিমিশ্রৈর্মৌক্তিকৈস্ত্বাং বিকীর্য

ত্রিভুবনকমনীয়ৈঃ পূজয়িত্বা চ বস্ত্রৈঃ ।

মিলিতবিবিধমুক্তাং দিব্যমাণিক্যযুক্তাং

জননি কনকবৃষ্টিং দক্ষিণাং তেঽর্পয়ামি ||৪২||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! অনন্তর ত্রিভুবনের মনােহরণকারী বহুমণি মিশ্রিত মুক্তাসমূহ দ্বারা তােমাকে (আচ্ছাদন) করে ও বস্ত্রসমূহ দ্বারা পূজা করে বিবিধমুক্তামিলিত দিব্য মাণিক্যযুক্ত কনকবর্ষণকারিণী দক্ষিণা তােমাকে অর্পণ করিতেছি ||৪২||

মাতঃ কাঞ্চনদণ্ডমণ্ডিতমিদং পূর্ণেন্দুবিম্বপ্রভং

নানারত্নবিশোভিহেমকলশং লোকত্রয়াহ্লাদকম্ ।

ভাস্বন্মৌক্তিকজালিকাপরিবৃতং প্রীত্যাত্মহস্তে ধৃতং

ছত্রং তে পরিকল্পয়ামি শিরসি ত্বষ্ট্রা স্বয়ং নির্মিতম্ ||৪৩||

ভাবার্থ - হে জননী ! স্বয়ং বিশ্বকর্ম্মা কর্তৃক নির্ম্মিত এই স্বর্ণদণ্ড শােভিত, পূর্ণচন্দ্রবিম্ব সদৃশ প্রভাসম্পন্ন, নানা রত্নশােভিত, স্বর্ণকলসযুক্ত লােকত্রয়ের আহ্বাদজনক, উজ্জ্বল মুক্তাজাল (ঝালর) পরিবৃত, নিজহস্তে প্রীতির সহিত ধৃত ছত্র তােমার মস্তকে কল্পনা করতেছি ||৪৩||

শরদিন্দুমরীচিগৌরবর্ণৈ-

র্মণিমুক্তাবিলসৎসুবর্ণদণ্ডৈঃ ।

জগদম্ব বিচিত্রচামরৈস্ত্বা-

মহমানন্দভরেণ বীজয়ামি ||৪৪||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! আমি আনন্দভরে শরৎকালীন চন্দ্রকিরণবৎ গৌরবর্ণ, মণিমুক্তাশােভিত স্বর্ণদণ্ডযুক্ত, বিচিত্র চামর দ্বারা তােমাকে বীজন করতেছি ||৪৪||

মার্তাণ্ডমণ্ডলনিভো জগদম্ব যোঽয়ং

ভক্ত্যা ময়া মণিময়ো মুকুরোঽর্পিতস্তে ।

পূর্ণেন্দুবিম্বরুচিরং বদনং স্বকীয়-

মস্মিন্বিলোকয় বিলোলবিলোচনে ত্বম্ ||৪৫||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ! মৎকর্তৃক ভক্তিসহকারে এই যে সূর্য্যমণ্ডল সদৃশ মণিময় দৰ্পণ তােমাকে অর্পিত করা হয়েছে, হে বিলােলনয়নে! (চঞ্চল চক্ষুশালিনি) তুমি এতে নিজ পূর্ণচন্দ্র সদৃশ মুখমণ্ডল দর্শন কর ||৪৫||

ইন্দ্রাদয়ো নতিনতৈর্মকুটপ্রদীপৈ-

র্নীরাজয়ন্তি সততং তব পাদপীঠম্ ।

তস্মাদহং তব সমস্তশরীরমেত-

ন্নীরাজয়ামি জগদম্ব সহস্রদীপৈঃ ||৪৬||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ! ইন্দ্রাদি দেবগণ নতিকালে আনত মুকুটরূপ প্রদীপ দ্বারা সর্ব্বদা তােমার পাদপীঠের আরত্রিক করে থাকেন, এই জন্য আমি তােমার এই সমস্ত শরীরেই সহস্রপ্রদীপ দ্বারা আরত্রিক করতেছি ||৪৬||

প্রিয়গতিরতিতুঙ্গো রত্নপল্যাণয়ুক্তঃ

কনকময়বিভূষঃ স্নিগ্ধগম্ভীরঘোষঃ ।

ভগবতি কলিতোঽয়ং বাহনার্থং ময়া তে

তুরগশতসমেতো বায়ুবেগস্তুরঙ্গঃ ||৪৭||

ভাবার্থ - হে ভগবতী! মৎকর্তৃক তােমার বাহনের নিমিত্ত এই মনােহর গতিসম্পন্ন, অতি উচ্চ, রত্নখচিত পৃষ্ঠাসন (জিন) যুক্ত, স্বর্ণময় বিভূষণ (অলঙ্কার) অলঙ্কৃত, সিনিগ্ধ ও গম্ভীর হ্রেষা রবকারী, শতসংখ্যক অশ্বের সহিত উপস্থিত, বায়ুর ন্যায় বেগবান অশ্ব উপস্থিত করেছি ||৪৭||

মধুকরবৃতকুম্ভন্যস্তসিন্দূররেণুঃ

কনককলিতঘণ্টাকিঙ্কিণীশোভিকণ্ঠঃ ।

শ্রবণয়ুগলচঞ্চচ্চামরো মেঘতুল্যো

জননি তব মুদে স্যান্মত্তমাতঙ্গ এষঃ ||৪৮||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! মধুকর-পরিবৃত মস্তক (কুম্ভ-হস্তীর মস্তক), লিপ্ত সিন্দূররেণু যুক্ত, স্বর্ণখচিত ঘণ্টা ও কিঙ্কিণী (ক্ষুদ্রাকার ঘণ্টা) শোভিত কণ্ঠ, যার শ্রবণযুগল (কর্ণদ্বয়) চঞ্চল চামর সদৃশ, যে (স্বয়ং) মেঘ তুল্য, এই রূপ মত্তমাতঙ্গটি তােমার হর্ষের নিমিত্ত হোক ||৪৮||

দ্রুততরতুরগৈর্বিরাজমানং

মণিময়চক্রচতুষ্টয়েন যুক্তম্ ।

কনকময়মমুং বিতানবন্তং

ভগবতি তে হি রথং সমর্পয়ামি ||৪৯||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! তােমাকে (হি পাদপূরণে) দ্রুতগতিশীল অশ্বশােভিত, মণিময় চক্র চতুষ্টয়যুক্ত, স্বর্ণময় চন্দ্রাতপযুক্ত, এই রথ সমর্পণ করতেছি ||৪৯||

হয়গজরথপত্তিশোভমানং

দিশি দিশি দুন্দুভিমেঘনাদয়ুক্তম্ ।

অতিবহু চতুরঙ্গসৈন্যমেত-

দ্ভগবতি ভক্তিভরেণ তেঽর্পয়ামি ||৫০||

ভাবার্থ - হে ভগবতী ! (আমি) ভক্তিভরে তােমাকে অশ্ব, হস্তী, রথ ও পদাতিশােভিত, দিকে দিকে দুন্দুভিরূপ মেঘগর্জ্জনযুক্ত অতি বিশাল এই চতুরঙ্গ সৈন্য (অশ্ব প্রভৃতি অঙ্গবিশিষ্ট) অর্পণ করতেছি ||৫০||

পরিঘীকৃতসপ্তসাগরং

বহুসম্পৎসহিতং ময়াম্ব তে বিপুলম্ ।

প্রবলং ধরণীতলাভিধং

দৃঢদুর্গং নিখিলং সমর্পয়ামি ||৫১||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! মৎকর্তৃক তােমাতে, পরিখারূপে অবস্থিত সপ্তসাগরমুক্ত, বহু সম্পদশালী, বিপুল, প্রবল, সমগ্র, পৃথিবীতল নামক দৃঢ়দুর্গ সমর্পিত হচ্ছে ||৫১||

শতপত্রয়ুতৈঃ স্বভাবশীতৈঃ

রতিসৌরভ্যযুতৈঃ পরাগপীতৈঃ ।

ভ্রমরীমুখরীকৃতৈরনন্তৈঃ

ব্যজনৈস্ত্বাং জগদম্ব বীজয়ামি ||৫২||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! তােমাকে স্বভাবতঃ শীতল, শতপত্রযুক্ত, অতি সুগন্ধ-সমন্বিত পরাগ দ্বারা, পীতবর্ণ, ভ্রমরী সমূহ দ্বারা মুখর, অনন্ত ব্যজন (পাখা) দ্বারা বীজন করতেছি ||৫২||

ভ্রমরলুলিতলোলকুন্তলালী-

বিগলিতমাল্যবিকীর্ণরঙ্গভূমিঃ ।

ইয়মতিরুচিরা নটী নটন্তী

তব হৃদয়ে মুদমাতনোতু মাতঃ ||৫৩||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! ভ্রমর দ্বারা কম্পিত অতএব চঞ্চল কুন্তলপংক্তি হতে চ্যুত মাল্য দ্বারা আকীর্ণ (হয়েছে) রঙ্গভূমি (যার) এরূপ অতি মনােজ্ঞা নৃত্যশীলা, নটী তােমার হৃদয়ে আনন্দ বিস্তার করুক ||৫৩||

মুখনয়নবিলাসলোলবেণী-

বিলসিতনির্জিতলোলভৃঙ্গমালাঃ ।

যুবজনসুখকারিচারুলীলা

ভগবতি তে পুরতো নটন্তি বালাঃ ||৫৪||

ভাবার্থ - হে ভগবতী! তােমার সম্মুখে (যাদের) মুখ ও চক্ষুর ভঙ্গীর দ্বারা চঞ্চল বেণীর শােভায় চঞ্চল ভ্রমর-সমূহ পরাজিত, যুবকগণের সুখদায়ক মনােহর লীলাসম্পন্ন বালা স্ত্রীগণ নৃত্য করতেছে ||৫৪||

ভ্রমদলিকুলতুল্যালোলধম্মিল্লভারাঃ

স্মিতমুখকমলোদ্যদ্দিব্যলাবণ্যপূরাঃ ।

অনুপমিতসুবেষা বারয়োষা নটন্তি

পরভৃতকলকণ্ঠ্যো দেবি দৈন্যং ধুনোতু ||৫৫||

ভাবার্থ - হে দেবী! চঞ্চল ভ্রমর সমূহতুল্য চঞ্চল কেশপাশযুক্তা, ঈষৎ হাস্য যুক্ত মুখকমলে উদ্যত দিব্য লাবণ্য-প্রবাহযুক্তা, অনুপম (অতুলনীয়) সুন্দর বেষযুক্তা, কোকিলবৎ মধুর ধ্বনিযুক্তা, বারবনিতাগণ নৃত্য করতেছে। (এই সকল দিব্য আমােদে) দৈন্য দূর হোক ||৫৫||

ডমরুডিণ্ডিমজর্ঝরঝল্লরী-

মৃদুরবদ্রগড়দ্দ গড়াদয়ঃ ।

ঝটিতি ঝাঙ্কৃত ঝাঙ্কৃত ঝাঙ্কৃতৈঃ

বহুদয়ং হৃদয়ং সুখয়ন্তু তে ||৫৬||

ভাবার্থ - ডমরু, ডিণ্ডিম, কাঁড়া, ঝল্লরী, মৃদু শব্দযুক্ত দ্রগড়শীল (দড় দড় শব্দশীল) দ্রগড়াদি বাদ্য সহসা ঝাঙ ঝাঙ ঝাঙ (বাদ্য) শব্দ দ্বারা তােমার বহু দয়াযুক্ত হৃদয়কে সুখী করুক ||৫৬||

বিপঞ্চীষু সপ্তস্বরান্বাদয়ন্ত্য-

স্তব দ্বারি গায়ন্তি গন্ধর্বকন্যাঃ ।

ক্ষণং সাবধানেন চিত্তেন মাতঃ

সমাকর্ণয় ত্বং ময়া প্রার্থিতাসি ||৫৭||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! বীণাসমূহে সপ্তস্বর সমূহ বাদনরতা গন্ধর্ব্ব কন্যাগণ তােমার দ্বারে গান করতেছে, তুমি মৎকর্তৃক প্রার্থিত হয়ে ক্ষণকাল সাবধান চিত্তে (মনােযােগ সহকারে) শ্রবণ কর ||৫৭||

অভিনয়কমনীয়ৈর্নর্তনৈর্নর্তকীনাং

ক্ষনমপি রসয়িত্বা চেত এতত্ত্বদীয়ম্ ।

স্বয়মহমতিচিত্রৈর্নৃত্তবাদিত্রগীতৈঃ

ভগবতি ভবদীয়ং মানসং রঞ্জয়ামি ||৫৮||

ভাবার্থ - হে ভগবতী! এই তােমার চিত্তকে ক্ষণকালের জন্যও নর্তকীগণের অভিনয় দ্বারা ও মনােহর নৃত্যদ্বারা আনন্দিত করে আমি স্বয়ং অতি বিচিত্র নৃত্য বাদ্য ও গীত দ্বারা তােমার মনােরঞ্জন করতেছি ||৫৮||

তব দেবি গুণানুবর্ণনে চতুরা নো চতুরাননাদয়ঃ ।

তদিহৈকমুখেষু জন্তুষু স্তবনং কস্তব কর্তুমীশ্বরঃ ||৫৯||

ভাবার্থ - হে দেবী! তােমার গুণবর্ণনায় চতুরানন (ব্ৰহ্মা) চতুর্মুখযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কুশল নয়; সুতরাং (এমতাবস্থায়) এ জগতে একটি মাত্র মুখযুক্ত প্রাণীর মধ্যে কে তােমার স্তব করিতে সমর্থ ? (অর্থাৎ যার গুণ ব্রহ্মা চারমুখে বলতে পারেন না, আমার এক মুখে তা কেমন করে বলব)? ||৫৯||

পদে পদে যৎপরিপূজকেভ্যঃ

সদ্যোঽশ্বমেধাদিফলং দদাতি ।

তৎসর্বপাপক্ষয় হেতুভূতং

প্রদক্ষিণং তে পরিতঃ করোমি ||৬০||

ভাবার্থ - যা পূজাকারী ব্যক্তিকে প্রতি পদক্ষেপে সহসা (শীঘ্র) অশ্বমেধাদির ফল প্রদান করে, তােমার চতুর্দ্দিকে সেই সমস্তপাপক্ষয়কারক প্রদক্ষিণ করতেছি ||৬০||

রক্তোৎপলারক্তলতাপ্রভাভ্যাং

ধ্বজোর্দ্ধ্বরেখাকুলিশাঙ্কিতাভ্যাম্ ।

অশেষবৃন্দারকবন্দিতাভ্যাং

নমো ভবানীপদপঙ্কজাভ্যাম্ ||৬১||

ভাবার্থ - রক্তপদ্মের ন্যায় ঈষৎ রক্তবর্ণ লতাসদৃশ, ধ্বজ-উর্দ্ধরেখা-বজ্র-রেখাঙ্কিত,সমস্ত দেবগণবন্দিত, ভবানীপাদপদ্মে প্রণাম ||৬১||

চরণনলিনয়ুগ্মং পঙ্কজৈঃ পূজয়িত্বা

কনককমলমালাং কণ্ঠদেশেঽর্পয়িত্বা ।

শিরসি বিনিহিতোঽয়ং রত্নপুষ্পাঞ্জলিস্তে

হৃদয়কমলমধ্যে দেবি হর্ষং তনোতু ||৬২||

ভাবার্থ - হে দেবী, কমল দ্বারা পাদপদ্মযুগল পূজা করে কণ্ঠে স্বর্ণকমলের মালা অর্পণ করে এই মস্তকে স্থাপিত রত্নযুক্ত পুষ্পাঞ্জলি তােমার হৃদয়কমলের মধ্যভাগে (হৃদয়ে) হর্ষ বিস্তার করুক ||৬২||

অথ মণিময়মঞ্চকাভিরামে

কনকময়বিতানরাজমানে ।

প্রসরদগরুধূপধূপিতেঽস্মিন্

ভগবতি ভবনেঽস্তু তে নিবাসঃ ||৬৩||

ভাবার্থ - অনন্তর মণিময় বেদিকা দ্বারা মনােহর, স্বর্ণময় চন্দ্রাতপশােভিত, চতুর্দিকে বিস্তৃত অগুরু ধূপ দ্বারা ধূপিত (আমােদিত) এই মন্দিরে ভগবতি, তােমার নিবাস হোক (তুমি বাস কর) ||৬৩||

এতস্মিন্ মণিখচিতে সুবর্ণপীঠে

ত্রৈলোক্যাভয়বরদৌ নিধায় হস্তৌ ।

বিস্তীর্ণে মৃদুলতরোত্তরচ্ছদেঽস্মিন্

পর্যঙ্কে কনকময়ে নিষীদ মাতঃ ||৬৪||

ভাবার্থ - হে মাতঃ! এই মণিখচিত স্বর্ণপীঠে ত্রৈলােক্যকে অভয় ও বরদানকারী হস্তদ্বয় স্থাপনপূর্ব্বক এই অতিমৃদু আস্তরণবস্ত্রযুক্ত বিশাল স্বর্ণময় পালঙ্কে উপবেশন করো ||৬৪||

তব দেবি সরোজচিহ্নয়োঃ পদয়োর্নির্জিতপদ্মরাগয়োঃ ।

অতিরক্ততরৈরলক্তকৈঃ পুনরুক্তাং রচয়ামি রক্ততাম্ ||৬৫||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তােমার পদ্মচিহ্নিত পদ্মরাগজয়ী পদদ্বয়ে অত্যন্ত রক্তবর্ণ অলক্তক (আলতা) দ্বারা পুনরুক্ত (পদদ্বয় রক্তবর্ণ হওয়া সত্ত্বেও পুনরায় অলক্তক দ্বারা রক্তবর্ণ করার চেষ্টা পুনরুত্তি করার মতোই) রক্ততা সম্পাদন করতেছি ||৬৫||

অথ মাতরুশীরবাসিতং নিজতাম্বূলরসেন রঞ্জিতম্ ।

তপনীয়ময়ে হি পট্টকে মুখগণ্ডূষজলং বিধীয়তাম্ ||৬৬||

ভাবার্থ - হে মাতঃ, অনন্তর উশীর (বেনার মূল) দ্বারা সুবাসিত, নিজ তাম্বূল রস দ্বারা রঞ্জিত (মুখমধ্যস্থ চর্ব্বিত তাম্বূলরসে যা রক্তবর্ণ ধারণ করেছে) মুখস্থিত গণ্ডূষার্থ জল (মুখধাবনার্থ জল) স্বর্ণপাত্রে বিধান কর (নিক্ষেপ কর) ||৬৬||

ক্ষণমথ জগদম্ব মঞ্চকেঽস্মিন্

মৃদুতলতূলিকয়া বিরাজমানে ।

অতিরহসি মুদা শিবেন সার্ধং

সুখশয়নং কুরু তত্র মাং স্মরন্তী ||৬৭||

ভাবার্থ - হে জগন্মাতঃ ! অনন্তর ক্ষণকাল এই মৃদুতল (পৃষ্ঠভাগ) বিশিষ্ট গদীশােভিত মঞ্চে (বেদিকায়) হর্ষের সহিত অতিশয় একান্তে (নির্জনে) শিবের সহিত সেই স্থলে আমাকে (সন্তানকে স্নেহাতিশয় প্রযুক্ত) স্মরণ করতে করতে সুখে শয়ন কর ||৬৭||

মুক্তাকুন্দেন্দুগৌরাং মণিময়কুটাং রত্নতাটঙ্কয়ুক্তা-

মক্ষস্রক্পুষ্পহস্তামভয়বরকরাং চন্দ্রচূড়াং ত্রিনেত্রাম্ ।

নানালঙ্কারয়ুক্তাং সুরমকুটমণিদ্যোতিতস্বর্ণপীঠাং

সানন্দাং সুপ্রসন্নাং ত্রিভুবনজননীং চেতসা চিন্তয়ামি ||৬৮||

ভাবার্থ - (আমি) চিত্তে মুক্তা কুন্দপুষ্প ও চন্দ্রবৎ গৌরবর্ণা, মণিমুকুটধারিণী, রত্নখচিত তাটঙ্ক নামক অলঙ্কারযুক্তা, রুদ্রাক্ষ-মাল্য-পুষ্পহস্তা, অভয় ও বরহস্তা চন্দ্রচূড়া, (মস্তক ভূষণ), ত্রিনেত্রা, নানালঙ্কার যুক্তা, মনােহর মুকুটস্থিত মণিদ্বারা উজ্জ্বল স্বর্ণপীঠ যুক্তা, আনন্দিতা, প্রসন্না, ত্রিভুবনজননীকে চিন্তা করতেছি ||৬৮||

এষা ভক্ত্যা তব বিরচিতা যা ময়া দেবি পূজা

স্বীকৃত্যৈনাং সপদি সকলান্মেঽপরাধান্ ক্ষমস্ব ।

ন্যূনং যৎ তৎ তব করুণয়া পূর্ণতামেতু সদ্যঃ

সানন্দং মে হৃদয়কমলে তেঽস্তু নিত্যং নিবাসঃ ||৬৯||

ভাবার্থ - হে দেবী ! মৎকর্তৃক ভক্তি সহকারে যে এই তােমার পূজা বিরচিত হয়েছে, একে গ্রহণ করে শীঘ্র আমার সকল অপরাধ ক্ষমা কর, যা ন্যূন হয়েছে তা তােমার কৃপায় শীঘ্র পূর্ণতা প্রাপ্ত হোক; আমার হৃদয়কমলে তােমার নিবাস সৰ্ব্বদা আনন্দের সহিত হোক ||৬৯||

পূজামিমাং যঃ পঠতি প্রভাতে

মধ্যাহ্নকালে যদি বা প্রদোষে ।

ধ্রমার্থকামান্পুরুষোঽভ্যুপৈতি

দেহাবসানে শিবভাবমেতি ||৭০||

ভাবার্থ - যে পুরুষ এই পূজা প্রভাতে মধ্যাহ্নে ও প্রদোষে পাঠ করে (সে) ধর্ম অর্থ ও কাম প্রাপ্ত হয় (ও) দেহান্তে শিবতা প্রাপ্ত হয় ||৭০||

পূজামিমাং পঠেন্নিত্যং পূজাং কর্তুমনীশ্বরঃ ।

পূজাফলমবাপ্নোতি বাঞ্ছিতার্থং চ বিন্দতি ||৭১||

ভাবার্থ - পূজা করতে অসমর্থ ব্যক্তি প্রত্যহ এই পূজা (স্তব) পাঠ করবে, (তাহলে) পূজার ফল প্রাপ্ত হবে ও বাঞ্ছিতার্থ (ইষ্টার্থ) প্রাপ্ত হবে ||৭১||

প্রত্যহং ভক্তিসংয়ুক্তো যঃ পূজনমিদং পঠেৎ ।

বাগ্বাদিন্যাঃ প্রসাদেন বৎসরাৎস কবির্ভবেৎ ||৭২||

ভাবার্থ - যে ভক্তিযুক্ত হয়ে প্রত্যহ এই পূজা (স্তব) পাঠ করে, সে সরস্বতীর প্রসাদে বৎসরমধ্যে কবি হয় ||৭২||

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্যস্য

শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য

শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ

দেবীচতুঃষষ্ট্যুপচারপূজাস্তোত্রং সম্পূর্ণম্ ॥

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য

শ্রীগোবিন্দভগবৎপূজ্যপাদ শিষ্য

ভগবান শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য কৃত

দেবীচতুঃষষ্ট্যুপচারপূজাস্তোত্রং সম্পূর্ণ ॥

 

Tuesday, 29 June 2021

"ভবানীভুজঙ্গপ্রয়াতস্তোত্রম্"

 


শ্রী গণেশায় নমঃ ।

ষড়াধারপঙ্কেরুহান্তর্বিরাজৎ

সুষুম্নান্তরালেঽতিতেজোল্লসন্তীম্ ।

সুধামণ্ডলং দ্রাবয়ন্তীং পিবন্তীং

সুধামূর্তিমীড়ে চিদানন্দরূপম্ ||১||

ভাবার্থ - যিনি মূলাধারাদি ষট্চক্রস্থিত পদ্মমধ্যে শোভমানা সুষুষ্মা নাম্নী নাড়ীর অন্তরালে বিপুল তেজে সমুদ্ভাসিত, যিনি সহস্রদল কমলগত সুধামণ্ডল দ্রাবিত করে সেই সুধাপানে নিরত আছেন, সেই সুধাময় মূর্তিধারিণী চিদানন্দরূপা ( ব্রহ্মময়ী ) ভবানীকে স্তব করি ||১||

জ্বলৎকোটিবালার্কভাসারুণাঙ্গীং

সুলাবণ্যশৃঙ্গারশোভাভিরামাম্ ।

মহাপদ্মকিঞ্জল্কমধ্যে বিরাজৎ

ত্রিকোণে নিষণ্ণাং ভজে শ্রীভবানীম্ ||২||

ভাবার্থ - নবোদিত কোটি সূর্য্যের ন্যায় উজ্জ্বল আভায় যার অঙ্গসমূহ অরুণ বর্ণ, অপূর্ব লাবণ্য ও বেশ-বিন্যাস-শোভায় যিনি পরম রমনীয়া, মূলাধার মহাপদ্মে ত্রিকোণমণ্ডলে যিনি বিরাজমানা, দেবী শ্রীভবানীকে আমি ভজনা করি ||২||

ক্বণৎকিঙ্কিণীনূপুরোদ্ভাসিরত্ন-

প্রভালীঢ়লাক্ষার্দ্রপাদাব্জয়ুগ্মম্।

অজেশাচ্যুতাদ্যৈঃ সুরৈঃ সেব্যমানং

মহাদেবি মন্মূর্ধ্নি তে ভাবয়ামি ||৩||

ভাবার্থ - হে মহাদেবী ! শব্দায়মান কিঙ্কিণী ও নুপুরে বিরাজিত রত্নপ্রভায় রঞ্জিত ও লাক্ষারস সিক্ত এবং ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর প্রভৃতি সুরবৃন্দ সেবিত তোমার চরণকমলযুগল মদীয় মস্তকে ধ্যান করি ||৩||

সুশোণাম্বরাবদ্ধনীবীবিরাজন্

মহারত্নকাঞ্চীকলাপং নিতম্বম্ ।

স্ফুরদ্দক্ষিণাবর্তনাভিং চ তিস্রো

বলীরম্বতে রোমরাজিং ভজেঽহম্ ||৪||

ভাবার্থ - হে জননী ! তোমার সুরক্ত দুকূল-সংবৃত কটিদেশে বিরাজিত মহারত্নময় কাঞ্চীকলাপে ( চন্দ্রহার ) শোভিত নিতম্বদেশ, দক্ষিণাবর্ত বিরাজিত নাভি, ত্রিবলি এবং রোমাবলিকে ভজনা করি ||৪||

লসদ্বৃত্তমুত্তুঙ্গমাণিক্যকুম্ভো-

পমশ্রী স্তনদ্বন্দ্বমম্বাম্বুজাক্ষি ।

ভজে পূর্ণদুগ্ধাভিরামং তবেদং

মহাহারদীপ্তং সদা প্রস্নুতাস্যম্ ||৫||

ভাবার্থ - হে কমল নয়নে জননী , ( আমি তোমার তনয় ) তোমার সুবৃত্ত, উচ্চ ও রত্নময় ঘটসদৃশ শ্রীসম্পন্ন উৎকৃষ্ট হার বিরাজিত ( সন্তানবাৎসল্যে ) দুগ্ধস্রাবী অফুরন্ত দুগ্ধের আধার ঐ স্তনযুগল ভজনা করি ||৫||

শিরীষপ্রসূনোল্লসদ্বাহুদণ্ডৈ-

র্জ্বলদ্বাণকোদণ্ডপাশাঙ্কুশৈশ্চ ।

চলৎকঙ্কণোদারকেয়ূরভূষো-

জ্জ্বলদ্ভির্লসন্তীং ভজে শ্রীভবানীম্ ||৬||

ভাবার্থ - ভাস্বর ধনুর্বাণ, পাশ ও অঙ্কুশ যুক্ত, চঞ্চল কঙ্কণে ও দিব্য কেয়ূরভূষণে উজ্জ্বল, শিরীষ-কুসুম-কোমল বাহুলতা চতুষ্টয় দ্বারা শোভমানা শ্রীভবানীকে ভজনা করি ||৬||

শরৎপূর্ণচন্দ্রপ্রভাপূর্ণবিম্বা-

ধরস্মেরবক্ত্রারবিন্দাং সুশান্তম্ ৷

সুরত্নাবলীহারতাটঙ্কশোভাং

মহাসুপ্রসন্নাং ভজে শ্রীভবানীম্ ||৭||

ভাবার্থ - যার সহাস্য বিম্বাধর যুক্ত মুখারবিন্দ শরৎকালীন পূর্ণচন্দ্র সদৃশ সৌন্দর্যে বিমণ্ডিত, যিনি পরমা শান্তি আস্পদ, দিব্যরত্নরাজি খচিত হার ও তাটঙ্ক বিভূষণে যিনি শোভমানা এবং অতীত সুপ্রসন্না, সেই শ্রীভবানী দেবীকে ভজনা করি ||৭||

সুনাসাপুটং সুন্দরভ্রূললাটং

তবৈষ্ঠশ্রিয়ং দানদক্ষং কটাক্ষম্ ।

ললাটে লসদ্গন্ধকস্তূরিভূষং

স্ফুরচ্ছ্রীমুখাম্ভোজমীড়েঽহমম্ব ||৮||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! তোমার অতীব রমণীয় নাসাপুট, সুন্দর ভ্রূ, ললাট, ওষ্টের শ্রী, অভীষ্টদানে সুদক্ষ কটাক্ষ এবং চন্দন ও কস্তূরিকা ভূষিত ললাটদেশ সমুদ্ভাসিত শ্রীমুখকমলের স্তব করি ||৮||

চলৎকুন্তলাতর্ভ্রমদ্ভৃঙ্গবৃন্দাং

ঘনস্নিগ্ধধম্মিল্লভূষোজ্জ্বলন্তীম্ ।

স্ফুরন্মৌলিমাণিক্যমধ্যেন্দুরেখা-

বিলাসোল্লসদ্দিব্যমূর্ধানমীড়ে ||৯||

ভাবার্থ - ( হে জননী ) সৌরভলোভ বিভ্রান্ত ভ্রমরকুলে অন্তঃশোভিত চঞ্চল কুন্তলে বিরাজিত, মসৃণ বেণী অলঙ্কারে সমুদ্ভাসিত, কিরীটস্থিত উজ্জ্বল মাণিক্যসংসৃষ্ট শশিকলা বিলাসোল্লসিত তোমার ঐ দিব্য মস্তক প্রদেশের স্তব করি ||৯||

ইতি শ্রীভবানিস্বরূপং তদেবং

প্রপঞ্চাৎপরং চাতিসূক্ষ্মং প্রসন্নম্ ।

স্ফুরত্বম্ব বিম্বস্য মে হৃৎসরোজে

সদা বাঙ্ময়ং সর্বতেজোময়ং চ ||১০||

ভাবার্থ - হে জননী ভবানী ! ত্বদীয় এই স্বরূপ বিশ্বপ্রপঞ্চের অতীত, অতীব দুর্জ্ঞেয়, প্রসন্ন, পঞ্চাশদ্বর্ণময় ও নিরন্তর অসীম তেজোরাশিতে সমুদ্ভাসিত ; আমি তোমার বালক, আমায় হৃদয়পদ্মে এ স্ফুরিত হোক ||১০||

গণেশাভিমুখ্যাখিলৈঃ শক্তিবৃন্দৈ-

র্বৃতাং বৈ স্ফুরচ্চক্ররাজোল্লসন্তীম্ ।

পরাং রাজরাজেশ্বরি ত্রৈপুরি ত্বাং

শিবাঙ্কোপরিস্থাং শিবাং ভাবয়ামি ||১১||

ভাবার্থ - হে রাজরাজেশ্বরী ত্রৈপুরী দেবী ! তুমি গণেশাভিমুখী নিখিল শক্তিসমূহে পরিবৃতা, সমুজ্জ্বল ‘শ্রীচক্র' নামে প্রসিদ্ধ চক্ররাজে বিরাজমানা, ও মহেশ্বরের অঙ্কদেশে অবস্থিতা পরমা শিবা, তোমাকে আমি ধ্যান করি ||১১||

ত্বমর্কস্ত্বমিন্দুস্ত্বমগ্নিস্ত্বমাপ

স্ত্বমাকাশভূবায়স্ত্বং মহত্ত্বম্

ত্বদন্যো ন কশ্চিৎপ্রপঞ্চোঽস্তি সর্বং

ত্বমানন্দসংবিৎস্বরূপং ভজেঽহম্ ||১২||

ভাবার্থ - তুমিই সূর্য্য, তুমিই চন্দ্র, তুমিই বহ্নি, তুমিই জল, তুমিই আকাশ, তুমিই ভূ, তুমিই অনিল এবং তুমিই মহত্তত্ব, তুমি অখিলরূপিণী, তুমি ভিন্ন কোনরূপ প্রপঞ্চ নাই, তুমি আনন্দরূপিণী ও চিৎস্বরূপা, তোমাকে আমি ভজনা করি ||১২||

শ্রুতীনামগম্যং সুবেদাগমাজ্ঞ্যা

মহিম্নো ন জানাতি পারং তবেদম্ ।

স্তুতিং কর্তুমিচ্ছামি তে ত্বং ভবানি

ক্ষমস্বেদমত্র প্রমুগ্ধঃ কিলাহম্ ||১৩||

ভাবার্থ - হে মাতঃ ! তুমি শ্রুতিসমূহের অজ্ঞেয়, বেদ ও আগমে অভিজ্ঞ-( মুনি )গণ তোমার মহিমার সীমা অবগত নয়, হে ভবানী, আমি মূঢ়মতি, আমি যে তোমায় স্তুতিবাদে অভিলাষী হয়েছি, তজ্জন্য আমাকে ক্ষমা করো ||১৩||

গুরুস্ত্বং শিবস্ত্বং চ শক্তিস্ত্বমেব

ত্বমেবাসি মাতা পিতাঽসি ত্বমেব ।

ত্বমেবাসি বিদ্যা ত্বমেবাসি বন্ধু-

র্গতির্মে মতির্দেবি সর্বং ত্বমেব ||১৪||

ভাবার্থ - হে দেবী ! তুমি গুরু, তুমি শিব, তুমিই শক্তি, তুমিই জননী, তুমিই জনক, তুমিই বিদ্যা, তুমিই বন্ধু, আমার গতি ও মতিও তুমি, তুমিই ( আমার ) সব ||১৪||

শরণ্যে বরেণ্যে সুকারুণ্যমূর্তে

হিরণ্যোদরাদ্যৈরগম্যে সুপুণ্যে ।

ভবারণ্যভীতেশ্চ মাং পাহি ভদ্রে

নমস্তে নমস্তে নমস্তে ভবানি ||১৫||

ভাবার্থ - হে শরণ্যে ! হে বরেণ্যে ! হে পরম করুণাময়মূর্তে ! হিরণ্যগর্ভাদি কেউই তোমাকে বুঝতে সমর্থ নয়। হে সুপবিত্ররূপে, হে মঙ্গলময়ী ! সংসারারণ্য সন্ত্রাস হতে আমাকে রক্ষা করো, হে ভবানী ! তোমাকে পুনঃ পুনঃ ( তিনবার ) নমস্কার করি ||১৫||

ইতীমাং মহচ্ছ্রীভবানীভুজঙ্গ-

স্তুতিং যঃ পঠেদ্ভক্তিয়ুক্তশ্চ তস্মৈ

স্বকীয়ং পদং শাশ্বতং বেদাসারং

শ্রিয়ং চাষ্টসিদ্ধিং ভবানী দদাতি ||১৬||

ভাবার্থ - যে ব্যক্তি ভক্তি সমন্বিত হয়ে এই মহা শ্রীযুক্ত ভবানী ভুজঙ্গ স্তোত্র পাঠ করে, দেবী ভবানী তাকে বেদসারভূত নিত্যপদ, অষ্টসিদ্ধি যুক্ত শ্রী প্রদান করে থাকেন ||১৬||

ভবানী ভবানী ভবানী ত্রিবার-

মুদারং মুদা সর্বদা যে জপন্তি ।

ন শোকম্ ন মোহম্ ন পাপং ন ভীতিঃ

কদাচিৎ কথঞ্চিৎ কুতশ্চিজ্জনানাম্ ||১৭||

ভাবার্থ - যারা নিরন্তর আনন্দ সহকারে ‘ভবানী, ভবানী, ভবানী' এই নাম বারত্রয় উদারভাবে জপ করে, কখনো কোনও স্থানে তাদেরকে কিছুমাত্র শোক হতে হয় না, তাদের মোহ বিদ্যমান থাকে না, পাপ থাকতে পারে না এবং তাদের ভীতিও বিদ্যমান থাকে না ||১৭||

|| ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্যস্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ

ভবানীভুজঙ্গপ্রয়াতস্তোত্রং সম্পূর্ণম্ ||

ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য ভগবান শ্রীমৎ শঙ্করাচার্য বিরচিত ভবানীভুজঙ্গপ্রয়াত স্তোত্র সমাপ্ত।  

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...