ভগবান সনৎসুজাত বলিতেছেন-
অস্মিন্ লোকেতপস্তপ্তং ফলমন্যত্র ভুজ্যতে।
ব্রাহ্মণানাং তপঃসু-ঋদ্ধম্ অন্যেষাং তাবদেব তৎ।
-(শ্রীমহাভারত, উদ্যোগপর্ব, ৪৩তম অধ্যায়, সনৎ-সুজাতীয় সম্বাদ-১০)
শাঙ্করভাষ্য অনুসারে ভাবার্থঃ- ইহলোকে যে তপস্যাদি অনুষ্ঠিত হয় তাহার ফল পরলোকে ভোগ হইয়া থাকে-ইহাই সাধারণ নিয়ম। অনাত্মবিদ্ অর্থাৎ সকাম কর্ম্মীর অনুষ্ঠিত তপস্যা ততটাই ফল প্রদান করে যতটা শাস্ত্রে উল্লেখিত আছে কিন্তু ব্রহ্মবিদের তপস্যার ফল অধিক সমৃদ্ধ হইয়া থাকে।
ব্রহ্মবিদের তপস্যা ফলবৃদ্ধির হেতু হয়। কারণ শাস্ত্র বলেন-'যে কর্ম্মবিজ্ঞান, শ্রদ্ধা ও উপাসনাদিসহ সশ্রদ্ধচিত্তে জ্ঞানপূর্ব্বক অনুষ্ঠিত হয় তাহা অধিক ফলপ্রদ ও শক্তিশালী হইয়া থাকে।'-(ছান্দোগ্য উপনিষৎ ১।১।১০)
তাৎপর্য্য এই যে, সকাম কর্ম্মীর কর্ম্মফল পরলোকে ভোগ হয়, উহা সীমিত, স্বল্পকাল স্থায়ী। কিন্তু তত্ত্ববিদের যে জ্ঞানফল তাহা তিনি ইহলোকেই প্রাপ্ত হন এবং ঐ জ্ঞানফল মোক্ষ, অনন্তকাল স্থায়ী। কর্ম্ম অদৃষ্ট (পরলোক প্রাপ্তব্য) ফল প্রদান করে কিন্তু জ্ঞান দৃষ্ট ফল প্রদাতা-ইহাই বিশেষ। জ্ঞানী দৃষ্ট ফল মোক্ষ, বর্তমান শরীরেরই অনুভব করিয়া কৃতার্থ হইয়া থাকেন-ইহাই জ্ঞানের পরম বৈশিষ্ট্য।
No comments:
Post a Comment