যিনি এই আত্মাকে শরীরের সহিত এক করিয়া ফেলেন সেই দেহাত্মাভিমানীর পক্ষেই পাপপুণ্যরূপ সংসার। পক্ষান্তরে আত্মজ্ঞের পক্ষে অর্থাৎ যিনি দেহ এবং আত্মার পার্থক্য অনুভব করিয়াছেন তাঁহার পক্ষে আর ঐ আত্মসম্পর্কিত কোন পাপপুণ্যাদি দর্শন করা সম্ভব হয় না। কৃষ্ণযজুর্বেদীয় কঠোপনিষদে বর্ণিত আছে-
হন্তা
চেন্মন্যতে হন্তুং হতশ্চেন্মন্যতে হতম্ ।
উভৌ
তৌ ন বিজানীতো নায়ং হন্তি ন হন্যতে ॥ -(কঠোপনিষৎ -১/২/১৯)
'শাঙ্করভাষ্য'
অনুবাদঃ- শংকরাচার্য ভাষ্যে বলিতেছেন- এইরূপ বিকাররহিত হইলেও এই আত্মাকে শরীরেতেই আত্মবুদ্ধিসম্পন্ন
কোন হননকারী যদি 'ইহাকে হত্যা করিব' এইরূপ মনে করেন এবং অন্য যে জন হত হয় সেও যদি
আত্মাকে হত অর্থাৎ 'আমি হত হইতেছি' এইরূপ মনে করে তবে তাহারা উভয়ই নিজ আত্মাকে বিশেষভাবে
জানেনা। এখন আত্মা অবিকারী বলিয়া যেহেতু তিনি বধও করেন না এবং আকাশের মত অবিকারী বলিয়া
হতও হন না, অতএব ধর্ম-অধর্মাদি রূপ সংসার আত্মজ্ঞানরহিত ব্যক্তির সহিতই সম্পর্কিত কিন্তু
ব্রহ্মজ্ঞের সহিত নহে। কারণ শ্রুতিপ্রমাণ এবং যুক্তি অনুসারেও ব্রহ্মজ্ঞ কর্তৃক পাপ-পুণ্যাদির
উৎপত্তি কখনো সম্ভব হয় না।
No comments:
Post a Comment