ওঙ্কার যাঁহার বাচক সেই আত্মার স্বরূপ সাক্ষাৎ নির্ধারণ করিবার ইচ্ছায় এই মন্ত্র কথিত হইতেছে।
ন
জায়তে ম্রিয়তে বা বিপশ্চিন্ -
নায়ং
কুতশ্চিন্ন বভূব কশ্চিৎ।
অজো
নিত্যঃ শাশ্বতোহয়ং পুরাণো
ন
হন্যতে হন্যমানে শরীরে।। (কৃষ্ণযজুর্বেদীয় কঠ উপনিষৎ- ১।২।১৮)
'শাঙ্করভাষ্য'
অনুসারে ভাবার্থঃ-
এই
প্রত্যগাত্মা উৎপন্ন হন না এবং মরেনও না। উৎপত্তিবিশিষ্ট অনিত্য বস্তুর অনেক প্রকার
(ছয় প্রকার) বিকার হইয়া থাকে। 'ন জায়তে ম্রিয়তে বা' এই মন্ত্রাংশ বলিয়া এই আত্মাতে
সমস্ত বিকারের নিবারণের জন্য প্রথমে তাহাদের মধ্যে জন্ম ও বিনাশরূপ আদি ও অন্ত বিকারদ্বয়কে
নিবারণ করা হইতেছে। প্রত্যগাত্মার চৈতন্যস্বভাব কখনো ছিন্ন হয় না বলিয়া তিনি মেধাবী
অর্থাৎ জ্ঞানস্বরূপ।
আর
এই আত্মা অপর কোনো কারণ হইতে উৎপন্ন হন নাই। এবং এই আত্মা হইতেও অপর কোন পদার্থ উৎপন্ন
হয় নাই। অতএব এই আত্মা জন্মরহিত, বিনাশরহিত এবং শাশ্বত অর্থাৎ ক্ষয়রহিত। কেননা যাহা
অশাশ্বত—পরিবর্তনশীল, তাহাই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়; কিন্তু এই আত্মা শাশ্বত এবং পুরাণও অর্থাৎ
পূর্বেও নূতনই ছিলেন। কারণ যে বস্তু ভিত্তি (দেয়াল) প্রভৃতির মত অবয়ব পুষ্টির মাধ্যমে
উৎপন্ন হয় তাহা 'সম্প্রতি ইহা নূতন' বলিয়া কথিত হয়। কিন্তু আত্মা তাহার ঠিক বিপরীত—পুরাণ
অর্থাৎ বৃদ্ধিরহিত। যেহেতু এইরূপ অতএব শস্ত্রাদির দ্বারা শরীর বিনষ্ট হইলেও আত্মা নিহত
হন না—উঁহার কোন হিংসা করা হয় না; অর্থাৎ শরীরের মধ্যে স্থিত হইলেও আত্মা আকাশের মত
নির্লিপ্ত।।১।২।১৮।।
No comments:
Post a Comment