বেদের সমস্ত প্রামাণিক উপনিষদের উপরই ভগবান্ শঙ্করাচার্য্য ভাষ্য রচনা করিয়াছিলেন। ঈশ, কেন , কঠ, প্রশ্ন, মুণ্ডক, মাণ্ডূক্য (গৌড়পাদীয় কারিকা সমেত), ঐতরেয়, তৈত্তিরীয়, ছান্দোগ্য, বৃহদারণ্যক, শ্বেতাশ্বতর ও নৃসিংহ পূর্ব তাপনীয় এই বারখানি উপনিষদের উপর আচার্য্য ভাষ্য রচনা করিয়াছিলেন। উক্ত (শ্বেতাশ্বতর ও নৃসিংহ পূর্ব তাপনীয় ছাড়া) উপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞানের টীকা আছে, তদ্ব্যতীত শঙ্করানন্দকৃত দীপিকা নামে টীকাও পাওয়া যায়। তাই অনেক পণ্ডিত ঐ দশখানি ভাষ্যকেই আদি শঙ্করাচার্য বিরচিত মনে করিয়া থাকেন।
তৈত্তিরীয়
উপনিষদের ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞানের টীকা ব্যতীত শঙ্কর শিষ্য সুরেশ্বরাচার্য্যের তৈত্তিরীয়উপনিষদ্ভাষ্য-বার্ত্তিক নামে শ্লোকে লিখিত এক বার্ত্তিক পাওয়া
যায়, ঐ বার্ত্তিকের উপরেও
আনন্দজ্ঞানের নাতিবিস্তৃত টীকা আছে। এতদ্ব্যতীত উক্ত ভাষ্যের উপর বিদ্যারণ্যের দীপিকা পাওয়া যায়।
কঠ উপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞান ও বালগোপাল যতীন্দ্রের টীকা পাওয়া যায়। প্রশ্নোপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞান ও নারায়ণেন্দ্র সরস্বতীর টীকা পাওয়া যায়। মাণ্ডূক্য উপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞানের টীকার পাশাপাশি মথুরানাথ শুক্লের টীকা, রাঘবানন্দের মাণ্ডূক্যোপনিষৎভাষ্যার্থ-সংগ্রহনামে টীকা পাওয়া যায়। মুণ্ডকভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞানের টীকা ও অভিনব নারায়ণেন্দ্র সরস্বতীর টীকা পাওয়া যায়। শঙ্করাচার্য্যের গৌড়পাদীয় মাণ্ডূক্যকারিকা ভাষ্যের উপর আনন্দগিরির টীকা আছে, তদ্ব্যতীত শুদ্ধানন্দের এক টীকা আছে বলিয়া জানা যায়।
ঐতরেয়
উপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দগিরি, নৃসিংহ আচার্য্য, বালকৃষ্ণ দাস, অভিনব নারায়ণেন্দ্র সরস্বতী, জ্ঞানামৃত যতি ও বিশ্বেশ্বর তীর্থের
রচিত টীকা ও বিদ্যারণ্যের দীপিকা
পাওয়া যায়। বৃহদারণ্যক উপনিষদের উপর বৃহদারণ্যকভাষ্য-বার্ত্তিক নামে সুরেশ্বরাচার্য্যের প্রায় ১২ হাজার শ্লোকে
লিখিত এক বিশাল বার্ত্তিক
পাওয়া যায়। শ্লোকাকারে লিখিত এই বার্ত্তিক ঠিক
ভাষ্যের টীকার মত নহে, উহা
স্বতন্ত্র গ্রন্থ। ঐ গ্রন্থেও শাঙ্করভাষ্যের
তাৎপর্য্যই ব্যাখ্যা করা হইয়াছে। ঐ বিপুলায়তন বার্ত্তিকের
উপরও আনন্দজ্ঞানের অনতিবিস্তৃত টীকা ও বিদ্যারণ্যের বৃহদারণ্যকবার্ত্তিকসার
নামে টীকা পাওয়া যায়।
আর ছান্দোগ্যোপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দজ্ঞানের টীকার পাশাপাশি বিদ্যারণ্যের দীপিকা পাওয়া যায়। কেন উপনিষদ্ ভাষ্যের উপর আনন্দ-জ্ঞানের টীকা ব্যতীত, কেনোপনিষদ্ভাষ্য-বিবরণ নামে টীকা ও শঙ্করানন্দের দীপিকা টীকা বর্ত্তমান।....
তথ্যসূত্রঃ-
বেদান্তদর্শন—অদ্বৈতবাদ, প্রথম খণ্ড, আশুতোষ শাস্ত্রী বিদ্যাবাচস্পতি।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
ডিসেম্বর
১৩, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment