প্রতিষিদ্ধ প্রপঞ্চসমূহ হতে ভিন্ন পরব্রহ্ম যদি থাকেন, তাহলে গৃহীত হচ্ছেন না কেন? অর্থাৎ আমরা কেন জানতে পারছি না? তদুত্তরে ভগবান্ সূত্রকার বাদরায়ণ বলছেন—
তদব্যক্তমাহ
হি৷৷-(ব্রহ্মসূত্র-৩.২.২৩)
তিনি
অব্যক্ত, অর্থাৎ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নন, যেহেতু সকল দৃশ্যের তিনি সাক্ষী। যেহেতু
'ন চক্ষুষা
গৃহ্যতে নাপি বাচা নান্যৈর্দেবৈস্তপসা কর্মণা বা'-(মুণ্ডক উপনিষৎ -৩.১.৮)
"তিনি
চক্ষুর দ্বারা গৃহীত হন না, বাক্যের
দ্বারাও গৃহীত হন না, অন্য
দেবগণের (—ইন্দ্রিয়গণের) দ্বারা, (ব্রতোপবাসাদি) তপস্যার দ্বারা, অথবা (অগ্নিহোত্রাদি) কর্মের দ্বারা গৃহীত হন না";
'স এষ
নেতি নেত্যাত্মাগৃহ্যো ন হি গৃহ্যতে'-(বৃহদারণ্যক উপনিষৎ-৩.৯.২৬)
"নেতি নেতি,
এরূপে বর্ণিত এই আত্মা গ্রহণীয়
নন, কারণ ইনি (ইন্দ্রিয়ের) দ্বারা গৃহীত হন না;
'যত্তদদ্রেশ্যমগ্রাহ্যম্'-(মুণ্ডক উপনিষৎ -১.১.৬)
"সেই যা
অদৃশ্য (—জ্ঞানেন্দ্রিয়ের অবিষয়), অগ্রাহ্য (—কর্মেন্দ্রিয়ের অবিষয়);
যদা
হ্যেবৈষ এতস্মিন্নদৃশ্যেনাত্ম্যেনিরুক্তেনিলয়নে'
-(তৈত্তিরীয় উপনিষৎ
-২.৭.১)
যখন
সাধক এই অদৃশ্য, অনাত্ম্য
(—অশরীর), অনিরুক্ত (—অনির্বাচ্য) এবং অনিলয়ন (—নিরাধার) ব্রহ্মে", ইত্যাদি শ্রুতি এ প্রকার বলছেন।
তাছাড়া
শ্রীগীতায় ভগবান্ এই বিষয়ে স্পষ্ট
বলেছেন—
"অব্যক্তোহয়মচিন্ত্যোহয়মবিকার্যোহয়মুচ্যতে"
-(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা -২.২৫)
এই
আত্মা অব্যক্ত অর্থাৎ সর্বকরণ ইন্দ্রিয়সকলের বিষয় নয় বলে অপ্রকাশিত, ইন্দ্রিয়গোচর নয় বলে অচিন্ত্য ও অবিকারী অর্থাৎ
দধি, দম্বল প্রভৃতি দ্বারা দুধ যেমন বিকারী; আত্মা এমন নয় বলে শাস্ত্রে উক্ত হয়েছে। কারণ অবয়ব রহিত হওয়ার কারণে আত্মা অবিক্রিয়।..…
তথ্যসূত্রঃ-
ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্যের শারীরক-মীমাংসা ভাষ্য।
শ্রীশুভ
চৌধুরী
ডিসেম্বর
১, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
No comments:
Post a Comment