চিদংশং বিভুং নির্মলং নির্বিকল্পং
নিরীহং নিরাকারমোঙ্কারগম্যম্ ।
গুণাতীতমব্যক্তমেকং তুরীয়ং
পরং ব্রহ্ম যং বেদ তস্মৈ নমস্তে ॥ ১॥
ভাবার্থ - ( যোগীগণ ) যাকে মায়াবছিন্ন চৈতন্য
অথচ গুণাতীত, বিভু ( সর্বব্যাপক ), নির্মল, নির্বিকল্প ( প্রমাণস্বরূপ শুদ্ধ চৈতন্য
), নিরীহ ( নিষ্ক্রিয় ), নিরাকার, ওঙ্কারপ্রতিপাদ্য, অব্যক্ত, অদ্বিতীয়, তুরীয়
( জাগ্রত, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তির অতীত ) পরব্রহ্ম বলে জানেন,সেই তোমাকে নমস্কার ||১||
বিশুদ্ধং শিবং শান্তমাদ্যন্তশূন্যং
জগজ্জীবনং জ্যোতিরানন্দরূপম্ ।
অদিগ্দেশকালব্যবচ্ছেদনীয়ং
ত্রয়ী বক্তি যং বেদ তস্মৈ নমস্তে ॥ ২॥
ভাবার্থ - বিশুদ্ধ, মঙ্গলময়, শান্ত, আদি-অন্তহীন,
জগতের জীবনস্বরূপ, জ্যোতির্ময়, আনন্দবিগ্রহ, দিক্ , দেশ ও কালের অপরিচ্ছেদ্য বলে যিনি
কীর্তিত হয়েছেন, তাদৃশ তোমাকে নমস্কার ||২||
মহাযোগপীঠে পরিভ্রাজমানে
ধরণ্যাদিতত্ত্বাত্মকে শক্তিয়ুক্তে ।
গুণাহস্করে বহ্নিবিম্বার্ধমধ্যে
সমাসীনমোঙ্কর্ণিকেঽষ্টাক্ষরাব্জে ॥ ৩॥
ভাবার্থ - পৃথিবী প্রভৃতি পঞ্চতত্ত্বাত্মক ও শক্তিযুক্ত
বিভ্রাজমান মহাযোগপীঠগুনরূপ সূর্য্যমন্ডলস্থ অর্ধবহ্নিমণ্ডলে প্রণব কর্ণিকাযুক্ত অষ্টাক্ষর
মন্ত্র পদ্মে যিনি উপবিষ্ট ||৩||
সমানোদিতানেকসূর্যেন্দুলোটি-
প্রভাপূরতুল্যদ্যুতিং দুর্নিরীক্ষম্ ।
ন শীতং ন চোষ্ণং সুবর্ণাবদাত-
প্রসন্নং সদানন্দসংবিৎস্বরূপম্ ॥ ৪॥
ভাবার্থ - যার কান্তি এককালীন উদিত বহুকোটি সূর্য ও চন্দ্রের প্রভাপুঞ্জের ন্যায়,
যার দিকে তেজের আধিক্য হেতু দৃষ্টিপাত করা যায় না, যিনি স্নিগ্ধ নয়, উষ্ণও নয়, কাঞ্চনবৎ
যিনি স্বচ্ছ, যিনি নিরন্তর প্রসন্ন, সদানন্দপূর্ণ ও জ্ঞানময় ||৪||
সুনাসাপুটং সুন্দরভ্রূললাটং
কিরীটোচিতাকুঞ্চিতস্নিগ্ধকেশম্ ।
স্ফুরৎপুণ্ডরীকাভিরামায়তাক্ষং
সমুৎফুল্লরত্নপ্রসূনাবতংসম্ ॥ ৫॥
ভাবার্থ - যার নাসাপুট সুশোভন, ভ্রূ ও ললাটদেশ
মনোহর, আকুঞ্চিত মসৃণ কেশকলাপ, কিরীটধারণে সদাশোভমান, যিনি বিকসিত পুণ্ডরীক সুন্দর,
বিশাল লোচন এবং প্রফুল্ল রত্নপুষ্পাভরণে যার কর্ণযুগল বিভূষিত ||৫||
লসৎকুণ্ডলামৃষ্টগণ্ডস্থলান্তং
জপারাগচোরাধরং চারুহাসম্ ।
অলিব্যাকুলামোলিমন্দারমালং
মহোরস্ফুরৎকৌস্তুভোদারহারম্ ॥ ৬॥
ভাবার্থ - যার গণ্ডস্থলে প্রান্তদেশে উজ্জ্বল কুণ্ডল
সংলগ্ন, যার অধর রাগ জবা কুসুমের রক্তিমা অপহরণ করেছে, যার হাস্য চিত্তরঞ্জন, যার গলদেশে
বিলম্বিত সুগন্ধি মন্দার পুষ্পের মালা অলিকুলে আবৃত, যার বিশাল বক্ষঃপ্রদেশে দীপ্তিমান
কৌস্তভমণি ও অত্যুৎকৃষ্ট হার বিরাজমান ||৬||
সুরত্নাঙ্গদৈরন্বিতং বাহুদণ্ডৈ-
শ্চতুর্ভিশ্চলৎকঙ্কণালংকৃতাগ্রৈঃ ।
উদারোদরালংকৃতং পীতবস্ত্রং
পদদ্বন্দ্বনির্ধূতপদ্মাভিরামম্ ॥ ৭॥
ভাবার্থ - যার চারটি বাহুতে দিব্য রত্নাঙ্গদ ও
অগ্র অর্থাৎ প্রকোষ্ঠে চঞ্চল কঙ্কণ শোভা পাচ্ছে, যার বিশাল উদরদেশ শোভাময়, যার পরিধানে
পীতাম্বর এবং যার চরণযুগলের শোভা পদ্মের সৌন্দর্য্যকেও বিরম্বিত করতেছে ||৭||
স্বভক্তেষু সন্দর্শিতাকারমেবং
সদা ভাবয়ন্সংনিরুদ্ধেন্দ্রিয়াশ্বঃ ।
দুরাপং নরো যাতি সংসারপারং
পরস্মৈ পরেভ্যোঽপি তস্মৈ নমস্তে ॥ ৮॥
ভাবার্থ - ভক্তবৃন্দের সমক্ষে তার সন্দর্শিত এই
প্রকার রূপ– মানব, ইন্দ্রিয়-তুরঙ্গগণকে নিরুদ্ধ করে সদা চিন্তা করলে সংসারসমুদ্রের
দুর্লভ পরপারে গমন করে, সেই সর্বপরাৎপর তোমাকে নমস্কার ||৮||
শ্রিয়া শাতকুম্ভদ্যুতিস্নিগ্ধকান্ত্যা
ধরণ্যা চ দূর্বাদলশ্যামলাঙ্গ্যা ।
কলত্রদ্বয়েনামুনা তোষিতায়
ত্রিলোকীগৃহস্থায় বিষ্ণো নমস্তে ॥ ৯॥
ভাবার্থ - কনককান্তিমতী কমলা ও দূর্বাদলশ্যামলাঙ্গী
বসুন্ধরা এই ভার্য্যাদ্বয় যার প্রীতিবিধান করেন এবং ত্রৈলোক্য গৃহের যিনি গৃহস্বামী,
হে বিষ্ণো! সেই তোমাকে নমস্কার করি ||৯||
শরীরং কলত্রং সুতং বন্ধুবর্গং
বয়স্যং ধনং সদ্ম ভৃত্যং ভুবং চ ।
সমস্তং পরিত্যজ্য হা কষ্টমেকো
গমিষ্যামি দুঃখেন দূরং কিলাহম্ ॥ ১০॥
ভাবার্থ - অহো ! কি কষ্ট ! শরীর, পুত্র, ভার্য্যা,
বন্ধুবৃন্দ, বয়স্য, ধন, গৃহ, কিঙ্কর, পৃথিবী – এই সকল পরিহার পুরঃহর একাকী আমি কোন
দূরদেশে গমন করব ||১০||
জরেয়ং পিশাচীব হা জীবতো মে
বসামক্তি রক্তং চ মাংসং বলঞ্চ ।
অহো দেব সীদামি দীনানুকম্পিন্-
কিমদ্যাপি হন্ত ত্বয়োদাসিতব্যম্ ॥ ১১॥
ভাবার্থ - হায়! জীবিতাবস্থাতেই জরা-পিশাচী এসে
আমার বসা, শোণিত, মাংস ও শক্তি কবলিত করতেছে। এখনও তুমি উদাসীন হয়ে থাকবে। অর্থাৎ
কৃপা প্রদর্শনপূর্বক আমাকে পরিত্রাণ করো ||১১||
কফব্যাহতোষ্ণোল্বণ শ্বাসবেগ-
ব্যথাবিস্ফুরৎসর্বমর্মাস্থিবন্ধাম্ ।
বিচিন্ত্যাহমন্ত্যামসংখ্যামবস্থাং
বিভেমি প্রভো কিং করোমি প্রসীদ ॥ ১২॥
ভাবার্থ - কফ-প্রতিরুদ্ধ উষ্ণ তীব্র শ্বাসবেগে
বেদনায় সকল মর্মস্থল ও অস্থিবন্ধন উৎকম্পিত ( বা সংজ্ঞাহীন ) অন্তিম অবস্থা চিন্তা
করে আমি ভীত হয়েছি। হে প্রভো ! আমি কি করি? আমার প্রতি প্রসন্ন হও ||১২||
লপন্নচ্যুতানন্ত গোবিন্দ বিষ্ণো
মুরারে হরে নাথ নারায়ণেতি ।
যথানুস্মরিষ্যামি ভক্ত্যা ভবন্তং
তথা মে দয়াশীল দেব প্রসীদ ॥ ১৩॥
ভাবার্থ - আমি ভক্তিপূতভাবে ‘হে অচ্যুত, হে অনন্ত,
হে গোবিন্দ, হে বিষ্ণো, হে মুরারে, হে নাথ, হে নারায়ণ’ এই সকল বাক্য উচ্চারণ সহকারে
যাতে তোমাকে স্মরণ করতে সমর্থ হই, হে কৃপাশীল দেব! তুমি সেইরূপ প্রসন্নতা অবলম্বন করো
||১৩||
ভুজঙ্গপ্রয়াতং পঠেদ্যস্তু ভক্ত্যা
সমাধায় চিত্তে ভবন্তং মুরারে ।
স মোহং বিহায়াশু যুষ্মৎপ্রসাদাৎ-
সমাশ্রিত্য যোগং ব্রজত্যচ্যুতং ত্বাম্ ॥ ১৪॥
ভাবার্থ - হে মুরারে! যে ব্যক্তি হৃদয়ে তোমাকে
স্থাপনপূর্বক ভক্তি সহকারে এই ভুজঙ্গ প্রয়াত স্তোত্র পাঠ করে, সে ব্যক্তি তোমার প্রসাদে
মোহপাশ হতে উত্তীর্ণ হয়ে যোগাবলম্বন সহকারে অচিরে অচ্যুত স্বরূপ তোমাকে লাভ করে থাকে
||১৪||
||ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্যস্য
শ্রীগোবিন্দ ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্যস্য
শ্রীমচ্ছঙ্কর ভগবতঃ কৃতৌ
শ্রীবিষ্ণুভুজঙ্গপ্রয়াতস্তোত্রং সম্পূর্ণম্||
ইতি শ্রীমৎপরমহংস পরিব্রাজকাচার্য্য শ্রীগোবিন্দ
ভগবৎ পূজ্যপাদ শিষ্য শ্রীমচ্ছঙ্করাচার্য বিরচিত শ্রীবিষ্ণুভুজঙ্গপ্রয়াত স্তোত্র সমাপ্ত।
No comments:
Post a Comment