Tuesday, 30 July 2019
পরব্রহ্ম পূর্ণ, একমাত্র প্রজ্ঞানঘন স্বভাবশুদ্ধ পরব্রহ্ম মাত্র অবশিষ্ট থাকেঃ-
ॐ তথা অক্ষরের পরিব্যাপ্তি ও মহাব্যাহৃতির প্রকাশঃ-
অমৃতময় ব্রহ্মের বিশিষ্টপ্রকার গুণ ও শক্তি পুরস্কারে উপাসনাঃ-
ছান্দোগ্য শ্রুতিতে ওঙ্কার উপসনায় অমৃতত্ব প্রাপ্তিঃ-
বৈদিক শান্তিপাঠঃ-
কামাদি দ্বারা প্রমাদের বন্ধহেতুত্বঃ-
অহংগতনৈব চরন্ বিমার্গান্ ন চাত্মনো যোগমুপৈতি কিঞ্চিৎ।।৭।।
Monday, 29 July 2019
উপাসকগণের জন্য অসীম পরমেশ্বর বিশেষ বিশেষরূপে অভিব্যক্ত হনঃ-
প্রশ্ন
এই, পরমাত্মা ব্রহ্ম নির্গুণ, অরূপ, বিভু বিশ্বব্যাপক; কিন্তু
শ্রীকৃষ্ণ ঠিক এর বিপরীত;
তিনি সগুণ, তাঁর শরীর দৃশ্য,
মথুরা, গোকুল, বৃন্দাবনাদি স্থানের একাংশে তাঁর স্থিতি, প্রাকৃত
ব্যক্তির ন্যায় তাঁর অনুরাগ ও
ক্রোধ বর্তমান, তিনি পরমাত্মা হবেন
কিরূপে?
তদুত্তরে
ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য প্রবোধসুধাকরে বলেছেন — অপর সকল দৃশ্যপদার্থই
এই চক্ষু দ্বারা দৃশ্য হয়ে থাকে, কিন্তু
ভগবান্ এই চক্ষু দ্বারা
দৃষ্ট হন না, তিনি
জ্ঞাননেত্রে দৃশ্য। ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ বিশ্বরূপ প্রদর্শনকালে অর্জুনকে যে দিব্যচক্ষু প্রদান
করেছিলেন, তা হতেই নরহরির
অদৃশ্যতা সিদ্ধ হয়। কিন্তু তার
প্রমাণ কোথায়? স্বয়ং ভগবান্ শ্রীগীতায় বলেছেন—
ন
তু মাং শক্যসে দ্রষ্টুমনেনৈব
স্বচক্ষুষা৷
দিব্যং
দদামি তে চক্ষুঃ পশ্য
মে যোগমৈশ্বরম্৷৷
-(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, ১১/৮)
—তুমি নিজের
প্রাকৃত স্থূল চক্ষু দ্বারা আমার বিশ্বরূপ দর্শন
করতে সমর্থ হবে না। তোমাকে
অপ্রাকৃত জ্ঞানচক্ষু দিচ্ছি। এই দিব্যচক্ষু দ্বারা
আমার অঘটনঘটনসামর্থ্যরূপ যোগ-শক্তি দর্শন
কর।
যেমন
সূর্যমণ্ডল গগনের এক অংশে গোলাকারে
দৃশ্যমান হন, কিন্তু সমগ্র
বিশ্বকেই প্রকাশিত করেন এবং সকল
লোক তাঁকে নানাস্থানে এককালে দর্শন করে থাকে, সেরূপ
যদুনাথ যদ্যপি সাকার এবং একদেশে অবস্থিত
বলে প্রতীয়মান হন, তথাপি তিনি
সর্বব্যাপক সচ্চিদানন্দস্বরূপ ও সর্বাত্মা। ভগবান্
শ্রীকৃষ্ণ এক হলেও যুগপৎ
অনেক গোপিকার সহিত যুগলরূপে ক্রীড়া
করেছিলেন। একই সূর্য, বহুস্থানস্থিত
বহুলোকের যেরূপ যুগপৎ দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকেন, সেরূপ
শ্রীকৃষ্ণ এক হয়েও যুগপৎ
বিভিন্ন স্থানস্থিত বিভিন্ন ব্যক্তির প্রত্যক্ষ হয়েছিলেন। রাসলীলায় প্রত্যেক গোপীই যে এক সময়ে
শ্রীকৃষ্ণসঙ্গ সুখ লাভ করেছিলেন,
এর প্রমাণ বিষ্ণুপুরাণ, শ্রীমদ্ভাগবতাদি গ্রন্থে রয়েছে। তাছাড়া বিদেহরাজ জনক এবং শ্রুতদেবনামক
ব্রাহ্মণ নিজ নিজ গৃহে
একই সময়ে তাঁর আতিথ্য সৎকার
ও স্তব করে কৃতার্থ
হয়েছিলেন। এই বিবরণ বিস্তৃতভাবে
শ্রীমদ্ভাগবতের ১০ম স্কন্ধের ৮৬
অধ্যায়ে আছে।
পরমাত্মা
অসীম হলেও উপাসকদিগের প্রতি
কৃপা পরবশ হয়েই বিশেষ
বিশেষরূপে প্রকাশিত হন। 'অতিমাত্রস্যাপি পরমেশ্বরস্য
প্রাদেশমাত্রত্বমভিব্যক্তিনিমিত্তং
স্যাত্৷ অভিব্যজ্যতে কিল প্রাদেশমাত্রপরিমাণঃ পরমেশ্বর উপাসকানাং
কৃতে৷ প্রদেশবিশেষেষু বা হৃদযাদিষূপলব্ধিস্থানেষু বিশেষেণাভিব্যজ্যতে৷ অতঃ পরমেশ্বরেপি
প্রাদেশমাত্রশ্রুতিরভিব্যক্তেরুপপদ্যত্।'-(ব্রহ্মসূত্র-১.২.২৯,শাঙ্করভাষ্য) অর্থাৎ অতিমাত্র অসীম, বিভু হলেও
পরমেশ্বরের যে প্রাদেশমাত্রতা, তা
অভিব্যক্তিরূপ নিমিত্তবশতঃ হবে। উপাসকগণের জন্য
পরমেশ্বর প্রাদেশমাত্র পরিমাণযুক্তরূপে অভিব্যক্ত হন। অথবা হৃদয়
প্রভৃতি উপলব্ধিস্থানভূত প্রদেশসকলে পরমেশ্বর বিশেষভাবে অভিব্যক্ত হন। অতএব অভিব্যক্ত
হন বলে পরমেশ্বরেও প্রাদেশমাত্র
শ্রুতি সঙ্গত।
ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ কুরুপাণ্ডবের সন্ধিস্থাপন-মানসে হস্তিনাপুরে গমন করলে, দূর্যোধন তাঁকে একাকী মনে করে কর্ণাদির মন্ত্রণানুসারে বন্ধন করবার আয়োজন করেন, তখন দুর্যোধন দেখলেন— শ্রীকৃষ্ণের বিশাল দেহে যুধিষ্ঠিরাদি পাণ্ডবগণ, বলরাম, প্রদ্যুম্ন ও অস্ত্র-শস্ত্র-সমন্বিত সৈন্যসমেত যদুকুলের উপস্থিতি। এই বিবরণ মহাভারতের উদ্যোগপর্বের ১৩১ অধ্যায়ে রয়েছে। এইসব উদাহরণে দেখা যায়, একই শ্রীকৃষ্ণ যুগবৎ অনেকবৎ দৃষ্ট হয়েছেন, যা অপর কোন দৃশ্যমান পরিচ্ছিন্ন শরীরে নেই। শ্রীবৎস, যখন শ্রীকৃষ্ণকে বক্ষঃস্থলে আঘাত করেন, তখনও তিনি কি শ্রীকৃষ্ণের দ্বেষের পাত্র হয়েছিলেন? অসুর এবং অপর যারাই ভক্ত তাদের সমান ফল হয়ে থাকে। শ্রীকৃষ্ণের কেউই শত্রু নয়, কেউই মিত্র নয়। নরহরি যদুনাথ উত্তম-পথ-পার্শ্ববর্তী ফলবান্ বিটপীর তুল্য। তাই শত্রুমিত্রে সমান সদ্গতি দাতা শ্রীহরির অনুরাগ ও বিদ্বেষ কল্পনা করা অনুচিত। অতএব ভগবান্ শ্রীহরি কৃষ্ণ সাক্ষাৎ ঈশ্বর। সর্বভূতের অন্তর্য্যামী, সচ্চিদানন্দ, জ্ঞানস্বরূপ, প্রকৃতির অতীত বা তদপেক্ষা শ্রেষ্ঠ যে পরমাত্মা, তিনিই এই যদুকুলতিলক শ্রীকৃষ্ণ।
তথ্যসূত্রঃ-
Sunday, 28 July 2019
প্রমাদই মৃত্যু, অপ্রমাদই অমরত্বঃ-
মহাভারতের বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রম্ শাঙ্করভাষ্যে 'মাধব' নাম মাহাত্ম্যঃ-
'বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রম্' শাঙ্করভাষ্যে 'কৃষ্ণ' নাম মাহাত্ম্যঃ-
'বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রম্' শাঙ্করভাষ্যে 'গোবিন্দ' নাম মাহাত্ম্যঃ-
শ্রীমহাভারতের
অনুশাসন পর্ব্বের ১৪৯ তম অধ্যায়ে বিষ্ণুসহস্রনাম স্তোত্রম্ এ শ্রীভগবানের এক নাম 'গোবিন্দ'
নামের মাহাত্ম্য বর্ণিত আছে।ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য্যের বিষ্ণুসহস্রনাম শাঙ্করভাষ্য-৩৩
এ বর্ণিত আছে-
'মোক্ষধর্মে লিখিত আছে যে, শ্রীহরি বলেছেন-আমি প্রনষ্টা ধরণীকে উদ্ধার করেছিলাম বলে দেবগণ আমাকে গোবিন্দ নামে স্তব করে থাকেন।'-(মহাভারত, শান্তিপর্ব- ৩৪২।৭০)
হরিবংশে আছে-'আমি দেবতাদের অধিপতি ইন্দ্র, কিন্তু হে কৃষ্ণ তুমি পৃথিবীর আধিপত্য প্রাপ্ত হয়েছ, এইজন্য লোকে চিরকাল তোমাকে গোবিন্দ বলে স্তব করবে।'-(হরিবংশ ২।১৯।৪৫)
হরিবংশে আরও আছে-'গো' শব্দে বাণী, হরি সেই বাণীকে লাভ করেছেন, এই হেতু দেবগণ ও মুনিগণ তাঁকে গোবিন্দ বলে স্তব করেছেন।-(হরিবংশ ৩।৮৮।৫০)
ছান্দোগ্য উপনিষদ্ শাঙ্করভাষ্যে ॐ তথা প্রণব মাহাত্ম্যঃ-
বেদান্তদর্শন শাস্ত্র ব্রহ্মসূত্র শাঙ্করভাষ্যে ওঙ্কার মাহাত্ম্যঃ-
ব্রহ্মসূত্র শাঙ্করভাষ্যে শাস্ত্রের প্রয়োজনীয়তাঃ-
ছান্দোগ্যোপনিষদ্ শাঙ্করভাষ্যে ওঙ্কার মহিমাঃ-
আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্
খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...

-
"মোহমুদগর" ও ইহার ভাবার্থঃ- আচার্য্য শঙ্কর ভগবৎপাদের 'মোহমুদগর' রচনাটি একটি মোহনাশক জ্ঞানবৈরাগ্যমূলক রচনা। ...
-
" শ্রীজগন্নাথাষ্টকম্ " ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য্য বিরচিত শ্রীজগন্নাথাষ্টকম্ একটি কৃষ্ণভক্তিমূলক স্তোত্র। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু...
-
কলিযুগে ভারতবর্ষে বৈদিক ধর্মের পূনর্জাগরণের অগ্রপুরুষ জগৎগুরু ভগবৎপাদ্ আদি শঙ্করাচার্য্য। কলিযুগের প্রারম্ভে বেদান্তবেদ্য, সচ্চিৎ-সুখস্...
-
ভগবৎপাদ্ আদি শঙ্করাচার্য্য বিরচিত শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ ও ইহার বঙ্গানুবাদঃ- ॥ শ্রীগঙ্গাস্তোত্রম্ ॥ দেবি সুরেশ্বরি ভগবতি গঙ্গে ত...
-
ভগবৎপাদ্ শঙ্করাচার্য্যের সর্বাধিক জনপ্রিয় স্তোত্রগুলির একটি হইল শিবপঞ্চাক্ষরস্তোত্র। ' নমঃ শিবায় ' এই পঞ্চাক্ষর মহ...
-
"বেদসারশিবস্তোত্রম্" ও ইহার ভাবার্থঃ- শঙ্কর ভগবৎপাদাচার্য্যের এই প্রখ্যাত স্তোত্রম্ ভক্তদের নিত্যপাঠ্য। আচার্য্য এই...
-
শাঙ্করভাষ্যম্ উপক্ৰমণিকা ‘ মঙ্গলাচরণম্ ’ ॐ নারায়ণঃ পরোঽব্যক্তাত্ অণ্ডমব্যক্তসম্ভবম্ । অণ্ডস্যান্তস্ত্বিমে লোকাঃ সপ্তদ্বীপা চ ...
-
“ সাংখ্যযোগ ” সঞ্জয় উবাচ। তন্তথা কৃপয়াবিষ্টমশ্রুপূর্ণাকুলেক্ষণম্। বিষীদন্তমিদং বাক্যমুবাচ মধুসূদনঃ || ১ || সঞ্জয় বলিলেন -...
-
পারমার্থিক দৃষ্টিতে জগৎ মিথ্যা হওয়ায় সেই কল্পিত জগতের কর্তৃত্ব ব্রহ্মে পরমার্থতঃ না থাকিলেও , ব্যবহারিক দৃষ্টিতে জগতের জন...
-
শঙ্কর ভগবৎপাদাচার্য্যের ভবান্যষ্টকম্ একটি সংসার মোহনাশক শাক্ত সাধনামূলক রচনা। আচার্য্য বলছেন-কেহ পিতা নয়, কেহ মাতা নয়, কেহ বন্ধু নয়, ...