Tuesday, 30 July 2019

ॐ তথা অক্ষরের পরিব্যাপ্তি ও মহাব্যাহৃতির প্রকাশঃ-

ছান্দোগ্যের শ্রুতিতে ওঙ্কারের পরিব্যাপ্তির কথা বর্ণিত আছে-


‘প্রজাপতিঃ লোকান্ অভ্যতপ্যৎ, তেভ্যঃ অভিতপ্তেভ্যস্ত্রয়ীবিদ্যা সংপ্রাস্রবৎ, তামভ্যতপত্তস্যা অভিতপ্তায়া এতানি অক্ষরাণি সংপ্রাস্রবন্ত, ভূর্ভুবঃ স্বরিতি।। (সামবেদীয় ছান্দোগ্যোপনিষদ্-২/২৩/২)।

শাঙ্করভাষ্য অনুযায়ী ভাবার্থঃ-লোক যাহাতে নিষ্ঠা প্ৰাপ্ত হইয়া অমৃতত্ব লাভ করে, তাহার নিরূপণের জন্য বলিতেছেন-প্ৰজাপতি- অর্থ-বিরাটপুরুষ অথবা কশ্যপ মুনি (কারণ, তিনিও প্ৰজাপতি নামে অভিহিত হন)। তিনি লোকসমূহকে উদ্দেশ্য করিয়া অর্থাৎ তাহাদের সার গ্রহণের ইচ্ছায় অভিতাপ করিয়াছিলেন, অর্থাৎ তদ্বিষয়ে ধ্যানরূপ তপস্যা করিয়াছিলেন। অভিতপ্ত সেই লোকত্ৰয় হইতে সারভুতা ত্রয়ী বিদ্যা নিঃসৃত হইল, অর্থাৎ প্রজাপতির মনোমধ্যে প্রতিভাত হইল ; পূর্বের ন্যায় তাহারও ধ্যান করিলেন; অভিতপ্ত (চিন্তিত) তাহা (ত্ৰয়ী বিদ্যা) হইতে এই অক্ষরসমূহ-ভূ, ভুবঃ, ও স্বঃ, এই ব্যাহৃতি কয়টি প্রকাশ পাইল।


তানি অভ্যতপত্তেভ্যঃ অভিতপ্তেভ্য ওঙ্কারঃ সংপ্রাস্রবৎ, তৎ যথা শঙ্কুনা সর্বাণি পর্ণানি সংতৃণ্নানি এবম্ ওঙ্কারেণ সর্বা বাক্ সংতৃণ্না, ওঙ্কার এবেদং সর্বম্, ওঙ্কার এবেদং সর্বম্’।। (সামবেদীয় ছান্দোগ্যোপনিষদ্-২/২৩/৩)।

শাঙ্করভাষ্য অনুযায়ী ভাবার্থঃ-প্ৰজাপতি সেই অক্ষরসমূহকে লক্ষ্য করিয়া ধ্যান করিলেন ; অভিধ্যাত সেই অক্ষরসমূহ হইতে ওঙ্কার নিঃসৃত হইল, (ওঙ্কারই ব্ৰহ্ম)। সেই ব্ৰহ্ম কি প্রকার, তাহা বলিতেছেন-শঙ্কু অর্থাৎ পত্রনাল দ্বারা যেমন সমস্ত পত্র অর্থাৎ পত্ৰাবয়ব নিবন্ধ-ব্যাপ্ত থাকে, এইরূপ পরমাত্মার প্রতীকস্বরূপ ওঙ্কাররূপী ব্ৰহ্ম দ্বারাও সমস্ত বাক্ অর্থাৎ শব্দঃরাশি পরিব্যাপ্ত; যেহেতু ‘অকারই সমস্ত বাক্ স্বরূপ’ ইত্যাদি শ্রতি রহিয়াছে। অথচ যে কিছু নাম বা শব্দ, তৎসমস্তই পরমাত্মার বিকার ; অতএব, ওঙ্কারই এতৎসমস্তস্বরূপ; আদরার্থ দ্বিরুক্তি করা হইয়াছে। ওঙ্কারের স্তুতি প্ৰকাশন লোকাদি নিষ্পাদন বৰ্ণিত হইয়াছে।


No comments:

আচার্য শ্রীহর্ষ ও খণ্ডনখণ্ডখাদ্যম্

  খৃষ্টীয় দশম ও একাদশ শতকে অদ্বৈতবেদান্তের ক্ষেত্র অনুর্বর হলেও অপরাপর দর্শনের ক্ষেত্র যে বিবিধ চিন্তা - শস্যসম্ভারে সমৃদ্ধ ...